মৌলভীবাজার জেলার জুড়ীতে বেপরোয়া মাইক্রোবাসের ধাক্কায় এক ছাত্রী নিহতের ঘটনায় দায়ীদের গ্রেপ্তার ও বিচারের দাবিতে ফুঁসে উঠেছে তার সহপাঠীসহ এলাকাবাসী। ঘাতক চালকসহ দায়ীদের গ্রেপ্তারের দাবিতে মঙ্গলবার (১৬ জানুয়ারি) সকাল ১১ টার দিকে এলাকাবাসী ও নিহত ছাত্রীর সহপাঠীরা সড়ক অবরোধ সহ মানববন্ধন করেন।
ফুলতলা ইউনিয়নের রাঘনা বটুলী উচ্চবিদ্যালয়ের সামনে থেকে প্রতিবাদ মিছিল বের হয়ে ফুলতলা ইউনিয়ন পরিষদের সামনে গিয়ে দুই ঘন্টা জুড়ী টু ফুলতলা আঞ্চলিক মহাসড়ক অবরোধ করে রাখে শিক্ষার্থীরা। এ সময় অবিলম্বে দায়ীদের গ্রেপ্তার করে শাস্তি নিশ্চিত না করলে আরো কঠোর আন্দোলনের হুমকি দেন এলাকাবাসীসহ খাদিজার সহপাঠীরা।
সড়ক অবরোধ পরবর্তী মানববন্ধনে রাঘনা উচ্চবিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন ফুলতলা ইউনিয়ন চেয়ারম্যান আবদুল আলীম শেলু, প্যানেল চেয়ারম্যান দছির উদ্দিন, ইউপি সদস্য ইমতিয়াজ গফুর মারুফ, স্বপন মল্লিক, ফুলতলা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক তাজুল ইসলাম, বণিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক জামাল উদ্দিন সেলিম, রাঘনা বটুলী উচ্চবিদ্যালয়ের সভাপতি নাজমুল আলম লিজন, নিসচা উপজেলা শাখার সভাপতি সাইফুল ইসলাম প্রমুখ।
নিহত ছাত্রী খাদিজা সুলতানা (১১) উপজেলার রাঘনা বটুলী উচ্চবিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণীর শিক্ষার্থী। সে ফুলতলা ইউনিয়নের বিরইনতলা গ্রামের আবদুল জলিল মিয়ার মেয়ে। এ ঘটনায় একই বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণীর কুলসুমা বেগম (১৪) নামে আরেক শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন। গত রোববার দুপুর দেড়টার দিকে উপজেলার ফুলতলা ইউনিয়নের বটুলী এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।
এদিকে বেপরোয়া মাইক্রোবাসের ধাক্কায় রাঘনা বটুলী উচ্চবিদ্যালয়ের ছাত্রী নিহতের ঘটনায় ঐ ছাত্রীর বাবা বাদী হয়ে তিন জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছেন।মামলার বিষয়টি মঙ্গলবার নিশ্চিত করেছেন জুড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এসএম মাইন উদ্দিন।
জানা যায়, গত রোববার উপজেলার ফুলতলা ইউনিয়নের রাঘনা বটুলী উচ্চবিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণীর শিক্ষার্থী খাদিজা সুলতানা (১২) ও নবম শ্রেণীর কুলসুমা বেগম (১৪) সকালে বিদ্যালয়ে যান ভর্তি হতে। ভর্তি শেষে নতুন বই নিয়ে বাড়ী ফেরার পথে বিদ্যালয়ের সামনের ফুলতলা টু বটুলী আঞ্চলিক মহাসড়কে বেপোরোয়া মাইক্রোবাসের ধাক্কায় দুজন শিক্ষার্থী সড়ক থেকে পাশের খাদে ছিটকে পড়ে। দুর্ঘটনার পর খাদিজা সুলতানা ও কুলসুমা বেগম বেশ কিছু সময় সড়কের পাশের খাদে পড়েছিল। পরে আশেপাশের লোকজন তাদেরকে উদ্ধার করে জুড়ী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এ নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক খাদিজা সুলতানাকে মৃত ঘোষণা করেন এবং আহত কুলসুমা বেগমকে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করেন। ময়নাতদন্তের পর সোমবার বিকেল ৫ টার দিকে বিরইনতলা ঈদগাহ ময়দানে জানাজা শেষে খাদিজা সুলতানার লাশ দাফন করা হয়।
এ বিষয়ে এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা থানার এসআই মোস্তফা কামাল বলেন, মাইক্রোবাসের ধাক্কায় ছাত্রী নিহতের ঘটনায় ঐ ছাত্রীর বাবা আবদুল জলিল মিয়া বাদী হয়ে থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন। এ মামলার তিন আসামিকে গ্রেপ্তার করতে পুলিশের অভিযান অব্যাহত আছে।
জুড়ী থানার ওসি এসএম মাইন উদ্দিন বলেন, এ ঘটনায় জড়িতদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।