টাঙ্গাইলে এক সপ্তাহের উত্তরের বাতাসে তাপমাত্রা কমতে শুরু করেছে। এতে প্রচন্ড শীতে যবুথবু হয়ে পড়েছে সাধারণ মানুষ। শিশু বৃদ্ধসহ নানা শ্রেণি নারী পুরুষরা ডায়ারিয়া আক্রান্ত হচ্ছে। শহর থেকে গ্রাম পর্যন্ত ছড়িয়েছে ডায়রিয়ার প্রকোপ। আক্রান্তরা কেউ কেউ বাড়িতেই প্রাথমিক চিকিৎসা নিচ্ছেন। আবার অনেকেই জেলা ও উপজেলা হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিচ্ছেন। এছাড়াও অনেকেই ঠান্ডা, জ¦র ও নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হচ্ছে। বাড়তি রোগির চাপে সেবা দিতে হিমসিম খেতে হচ্ছে চিকিৎসকদের। বুধবার সরেজমিন টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতাল ঘুরে দেখা যায়, ডায়ারিয়া ওয়ার্ডে ১২ আসনের বিপরিতে দুপুর পর্যন্ত ভর্তি রয়েছে ৯৩ জন। এদের মধ্যে শিশুদের সংখ্যা বেশি। এক আসনে গাদাগাদি করে দুই জন চিকিৎসা নিচ্ছেন। আবার অনেকেই মেঝেতে অবস্থান করে চিকিৎসা নিচ্ছেন। নাগরপুর থেকে চিকিৎসা নিতে আসা রুমিয়া খাতুন বলেন, আমার দেড় বছরের নাতি তিন দিন যাবত ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়েছে। সোমবার হাসপাতালে ভর্তি হয়েছি। তবে সিট না পেয়ে বারান্দার মেঝে অবস্থান করছি। এই ঠান্ডায় দিনের চেয়ের রাতে বেশি কষ্ট হয়। এছাড়াও বেশির ভাগ ওষুধ বাইরে থেকে কিনে আনতে হয়। সদর উপজেলার করটিয়া থেকে আসা মেঘনা আক্তার বলেন, আমার মেয়েকে দুই দিন যাবত হাসপাতালে ভর্তি করেছি। ওয়ার্ডে পা ফেলার মতো কোন জায়গা নাই। মেঝে থেকে আমাদের আরও কষ্ট হচ্ছে। এছাড়াও ওয়ালের পাশের ড্রেন থেকে দুর্গন্ধ আসছে। সকল ওষুধ হাসপাতাল থেকে দিলে ও পরীক্ষা নিরীক্ষা সরকারি খরচে হাসপাতালে থেকে করতে পারলে আমাদের মতো সাধারণ রোগিদের অনেক উপকার হতো। অপর জন রফিক মিয়া বলেন, আমার তিন বছরের ছেলে সাত দিন যাবত ঠান্ডা জ¦রে আক্রান্ত। পাঁচ দিন যাবত হাসপাতালে ভর্তি করে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। আগের চেয়ে অনেকটা সুস্থ হয়েছে। টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালের উপপরিচালক খন্দকার সাদিকুর রহমান বলেন, হাসপাতালটি ২৫০ শয্যার হলেও সব সময় পাঁচ শতাধিক রোগি ভর্তি থাকে। গত ১৬ দিনে ডায়ারিয়া ওয়ার্ডে ৬৭৮ জন রোগি ভর্তি হয়েছে। অনেক ওষুধ আমাদের সাপ্লাই নাই। সে গুলো বাইরে থেকে কিনে আনতে হয়। তিনি আরও বলেন, হাসপাতাল প্রতিনিয়ত পরিস্কার পরিচ্ছন্ন রাখা হয়। ডায়রিয়ার হাত থেকে নিজেদের রক্ষা করতে বার বার সাবান দিয়ে হাত ধুতে হবে। এছাড়াও মুখে মাস্ক ব্যবহার করার পরামর্শ দেন তিনি। টাঙ্গাইল শেখ হাসিনা মেডিকেল কলেজের শিশু বিভাগের সহকারি অধ্যাপক ডা. মুহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম বলেন, শীত মৌসুমে ঠান্ডা জনিত রোগে মানুষ আক্রান্ত হয়। বিশেষ করে শিশুর সংখ্যা বেশি থাকে। ঠান্ডায় শিশুরা ডায়রিয়া, নিউমোনিয়া, কাশি জ¦র ও শ্বাস তন্তের সংক্রমনের মতো শীতকালিন রোগে আক্রান্ত হয়। এর মধ্যে ডায়রিয়া রোগি বেশি দেখা দিচ্ছে। ডায়রিয়া হলে শিশুদের অরসালাইন খাওয়াতে হবে। আর পরিস্কার ও পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে। বাসী খাবার থেকে দুরে থাকতে হবে। তিনি আরোও বলেন, শিশুকে গরম কাপড় পরিধান করতে হবে, শিশুদের বুকের দুধ ছাড়াও মৌসুমী সবজী ও ফল খাওয়াতে হবে।