মূল্যস্ফীতির কারণে ভুগছে দেশের মানুষ। এরইমধ্যে খাদ্যপণ্যসহ অনেক জরুরি পণ্য প্রতিনিয়ত চোরাচালান হয়ে বাইরে চলে যাচ্ছে। আর সেটি দেশের মূল্যস্ফীতিতে বড় ভূমিকা রাখছে। জানা যায়, কিছুদিন ধরে প্রতিবেশী দেশ মিয়ানমারে অন্যান্য জরুরি পণ্যের সঙ্গে চালও পাঁচার হয়ে যাচ্ছে। জানা যায়, অভ্যন্তরীণ চরম অস্থিতিশীলতার মধ্যে মিয়ানমারে এক কেজি চালের দাম বাংলাদেশি মুদ্রায় এক হাজার টাকা পর্যন্ত উঠেছে। একই মানের চালের দাম বাংলাদেশে ৫৫ টাকা কেজি। ফলে পাঁচারকারীরা চাল পাঁচারে উঠেপড়ে লেগেছে। আর তার প্রভাব পড়ছে বাংলাদেশের বাজারে। জানা যায়, কিছুদিন ধরে মিয়ানমারে পেট্রল, অকটেনসহ জ্বালানি তেল এবং ভোজ্য তেলের চোরাচালানও বেড়ে গেছে। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর হাতে এমন কিছু চোরাই পণ্য ধরাও পড়েছে। সর্বশেষ র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব) অভিযান চালিয়ে দুটি পিকআপ ভ্যান থেকে ৬৯টি প্লাস্টিক কনটেইনার ভর্তি দুই হাজার ৯০০ লিটার অকটেন জব্দ করে। জানা যায়, পাঁচারকারীদের নৌকায় পৌঁছে দিতে পারলেই প্রতি লিটার অকটেনের জন্য পাঁচারকারীরা পায় ১৬৫ টাকা। একইভাবে পাঁচার হচ্ছে ভোজ্য তেলসহ অন্যান্য পণ্য। এদিকে এক সপ্তাহে দেশে কেজিপ্রতি চালের দাম পাঁচ থেকে সাত টাকা পর্যন্ত বেড়ে গেছে। সরকারও দাম কমাতে নানা উদ্যোগ নিয়েছে। কিন্তু বাজার বিশেষজ্ঞদের ধারণা, চোরাচালান রোধ করা না গেলে মূল্যস্ফীতি কমানোর অন্যান্য উদ্যোগ খুব একটা ফলপ্রসূ হবে না। ইতোমধ্যে কক্সবাজার জেলা প্রশাসন জরুরি সভা করে সিদ্ধান্ত নিয়েছে, যেকোনো মূল্যে কক্সবাজার দিয়ে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের চোরাচালান বন্ধ করা হবে। বৈঠকে জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তা, বিজিবি, কোস্ট গার্ড, র্যাব ও পুলিশের প্রতিনিধি, জেলার ৯টি উপজেলার জ্বালানি তেলের ব্যবসায়ী, পেট্রল পাম্প মালিক ও ফিশিং বোট মালিক সমিতির প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন। শুধু মিয়ানমার সীমান্ত নয়, অন্যান্য সীমান্ত দিয়েও চোরাচালান বাড়ছে। বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) ২০২৩ সালে মোট দুই হাজার ২৮৮ কোটি ৬৬ লাখ সাত হাজার টাকা মূল্যের চোরাই পণ্য জব্দ করেছে। বাংলাদেশের অর্থনীতির জন্য চোরাচালান একটি বড় চ্যালেঞ্জ। তাই চোরাচালান রোধে কঠোর উদ্যোগ নিতে হবে। আর চালসহ খাদ্যপণ্য ও জ্বালানি তেলের চোরাচালান যেকোনো মূল্যে বন্ধ করতে হবে। আমরা এ বিষয়ে জরুরি উদ্যোগ নেওয়ার আহ্বান জানাই।