পিরোজপুরের ইন্দুরকানীতে দুর্নীতি ও অনিয়মের মধ্য দিয়েই চলছে উপজেলা কৃষি অফিস। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কামরুন নেছা সুমী নানা ক্ষেত্রে দুর্নীতি করলেও তিনি কাউকে তোয়াক্কা করছেন না। এমনকি উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার সাথে কোন সমন্বয় করছেন না। সম্প্রতি ৪ জানুয়ারী কৃষি কর্মকর্তা সরকারী সার বীজ ও নানা কৃষি উপকরণ সড়ক পথে পাথরঘাটা নেয়ার সময় উপজেলার টগড়া ফেরীঘাটে বিআরটিসি গাড়িতে মালামাল উঠিয়ে দিলে এলাকায় জনতা কৃষি উপকরণ সহতার শাশুড়িকে আটক করে। পরে উপজেলা চেয়ারম্যানের সুপারিশে তাকে ছেড়ে দেয়া হয়। এর আগে তিন শতাধিক কৃষকদের প্রশিক্ষণে দুপুরের ভাল খাবার না দিয়ে নিজে বাজার করে নি¤œমানের খাবার দিয়ে অর্ধেকের বেশী টাকা আত্মসাৎ করেন ওই কৃষি কর্মকর্তা। তিনি উপজেলায় বিভিন্ন প্রদর্শনী প্লটে কাঙ্খিত চারা ও সার না দিয়ে বরাদ্দের টাকা নিজে ভাউচার দিয়ে আত্মসাৎ করেন। এ ছাড়া সার ও বীজ কৃষকদের বরাদ্ধে কম দিয়ে নিজে বিক্রি করার একাধিক অভিযোগ রয়েছে। ২০২২-২০২৩ অর্থ বছরে সজনে চাষ, পারিবারিক পুষ্টি বাগান, চুইঝাল প্রকল্পে চলছে ব্যাপক অনিয়ম। জানা যায়, উপজেলার চাড়াখালী গ্রামে সজনের প্রদর্শণীতে দেড়শত কৃষকদের প্রত্যেককে পাঁচটি করে চারা ও ৫ কেজি করে সার দেয়ার কথা। সজনে চাষী সাইফুল ইসলাম, মোঃ দুলাল, ছলেমান জানান, আমাদের ১৫০ জনকে ৫টি করে চারাও ৫ কেজি করে সার দেয়ার কথা ছিল। কিন্তু তারা ৪০ জনকে ২টি ৫টি করে চারা ও ২ কেজি করে সার বিতরণ করে। বাকী কৃষকদের পরে দিবে বলে আজও বিতরণ করেনি। কিছুদিন পরে একটি সাইনবোর্ড লাগিয়ে দিয়ে যান যেখানে ১০০০ পিস চারা উল্লেখ রয়েছে। এভাবে তার অনিয়ম ও দুর্নীতি অব্যাহত চললেও কোন প্রতিকার হচ্ছে না। এ বিষয় ভুক্তভোগী কৃষক ও এলাকাবাসী ফুসে উঠেছে। যে কোন সময় কৃষি কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মানববন্ধন কর্মসূচি দিবে বলে কৃষকরা জানান। উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মোঃ শফিকুল ইসলাম জানান, আমি কৃষি অফিসের কোটেশণ কমিটির সদস্য ছিলাম। কোন সভা না করে আমার অফিসে লোক পাঠিয়ে কৃষি কর্মকর্তা স্বাক্ষর নিতেন। আমি সভা ছাড়া স্বাক্ষর দিতে অসম্মতি প্রকাশ করলে কৃষি কর্মকর্তা আমাকে কমিটি থেকে বাদ দিয়েছেন। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কামরুন নেছা সুমি জানান, আমি শারিরিক ভাবে অসুস্থ থাকার কারণে সজনের সব চারা বিতরণ করতে পারিনি। বাকি চারাগুলো এখন বিতরণ করে দিব। অফিসের মালামালের সাথে আমি অতিরিক্ত কিছু মালামাল ক্রয় করেছি। সেগুলো আত্মীয়-স্বজনের মাঝে বিতরণ করেছি। দ্রব্য মূল্য বৃদ্ধি থাকায় এর আগে একটি ট্রেনিংয়ে খাবারের মান খারাপ হয়েছে। পাওয়ার টিলার বাবদ আমার কাছে যে টাকা জমা ছিল ইতোমধ্যে তা ফেরত দেয়া হয়েছে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবুবক্কর সিদ্দিকী জানান, কৃষি কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অনিয়মের অভিযোগ শুনেছি। তিনি কোন বিষয় আমার সাথে সমন্বয় করেন না। তিনি সাংবাদিকদের বলেন, আপনারা অনিয়ম পেলে রিপোর্ট করেন তাতে আমার কোন আপত্তি নাই।