বকেয়া বিল পরিশোধ না করায় সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে গ্রাহক কর্তৃক লাঞ্চিত হয়েছেন সরাইল পিডিবি’র উপ-সহকারী প্রকৌশলী মো. আতিক উল্লাহর নেতৃত্বে যাওয়া এক দল কর্মী। মারধরের পর তাদের মুঠোফোনও আটক করে ফেলে। এই খবরে সহকারী প্রকৌশলী তারেক রহমান ও উপ-সহকারী প্রকৌশলী মো. সুমন হোসেন সর্দারের নেতৃত্বে ঘটনাস্থলে যান আরেকটি দল। তারা ক্ষুদ্ধ হয়ে সহ¯্রাধিক গ্রাহকের ট্রান্সফরমারটি বন্ধ করে দেন। ৩ ঘন্টা বিদ্যুৎ বিহীন থাকেন সহ¯্রাধিক গ্রাহক। এক গ্রাহকের অপরাধের দায়ে সহ¯্রাধিক গ্রাহকের বিদ্যুৎ বন্ধ করায় হট্রগন্ডগোল শুরূ হয়। ফলে সেখান থেকে দ্রƒত চলে আসেন পিডিবি’র লোকজন। সোমবার বিকালে উপজেলার চুন্টা ইউনিয়নের পালপাড়ায় এই ঘটনাটি ঘটে। স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা বলছেন, ট্রান্সফরমার বন্ধ করে শত শত পরিবারকে কষ্ট দেয়া ঠিক হয়নি। এটা সম্পূর্ণ অমানবিক ও বেআইনি। ভুক্তভোগী ও স্থানীয় একাধিক সূত্র জানায়, চুন্টার পালপাড়ার গ্রাহক আক্তার মিয়ার বিদ্যুৎ এর বকেয়া বিল ১৯ হাজার টাকা। এজন্য তাঁর সংযোগটি বিচ্ছিন্ন করতে উপসহকারী প্রকৌশলী আতিক উল্লাহর নেতৃত্বে ওই বাড়িতে যায় পিডিবি’র লোকজন। এ সময় আক্তার ও তাঁর ছেলেরা বলেন, ৫০ হাজার থেকে ১/দেড় লাখ টাকাও বকেয়া আছে অনেক গ্রাহকের। তাদের সংযোগ তো বহাল তবিয়তে আছে। আমাদেরকে সময় দেন। পিডিবি’র লোকজন তা মানতে নারাজ। তারা আক্তার মিয়ার বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে ফেলেন। ক্ষুদ্ধ হয়ে আক্তার মিয়ার ৩ ছেলে বোরহান (২২), উসমান (১৮) ও মাহাবুব (২৬) মিলে পিডিবি’র লোকজনের হামলা চালিয়ে লাঞ্ছিত করে। খবর পেয়ে পিডিবি’র সরকারী প্রকৌশলী তারেক রহমান ও উপসহকারী প্রকৌশলী মো. সুমন হোসেন সর্দারের নেতৃত্বে পিডিবি’র আরো কিছু লোক ঘটনাস্থলে সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে আক্তারের মিটার ও সার্ভিস ক্যাবল নিয়ে আসেন। আর লাঞ্ছিত হওয়ার প্রতিবাদে তারা দেড়টার দিকে ৬ নম্বর ওয়ার্ড উত্তর পাড়ার (পালপাড়া) ফিডারটি বন্ধ করে দেন। এতে করে সেখানকার নিরপরাধ সহ¯্রাধিক গ্রাহক অন্ধকারে পড়ে যায়। একজনের অপরাধে এতগুলো মানুষকে কষ্ট না দেওয়ার অনুরোধ করেন উপস্থিত লোকজন। কিন্তু তা আমলে নেননি পিডিবি’র লোকজন। প্রভাবশালী জনপ্রতিনিধির তদবিরে ৩ ঘন্টা পর নিজেরাই ঘটনাস্থলে গিয়ে ফিডারটি চালু করে দেন। ৬ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্যসহ একাধিক গ্রাহক বলেন, কোন গ্রাহক যদি অপরাধ করে থাকে নিয়ম মাফিক তার বিচার হবে। কিন্তু সহ¯্রাধিক গ্রাহকের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করার অধিকার পিডিবিকে কে দিয়েছেন। তাদের যা ইচ্ছে তা তো করতে পারেন না। এই ধরণের অমানবিক কাজের বিচার হওয়া উচিত। শতশত ব্যক্তির কাছে তাদের ৫০ হাজার থেকে লক্ষাধিক টাকা বকেয়া আছে তাদের ধারে কাছেও যায় না। ইউপি ও সরকারী অফিসে ১ লাখ-৩ লাখ পর্যন্ত বকেয়া আছে। কোথায় তাদের লাইন তো বন্ধ করছেন না। তাদের আইন শুধু গরীব গ্রাহকদের জন্যে? সরাইল পিডিবি’র সহকারী প্রকৌশলী তারেক রহমান ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে ও ৩ ঘন্টা ট্রান্সফরমার বন্ধ রাখার কথা স্বীকার করে বলেন, বকেয়া বিল থাকায় উপসহকারী প্রকৌশলী আতিক উল্লাহ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করতে গেলে গ্রাহক আক্তার মিয়া ও তার ছেলেরা পিডিবি’র লোকজনকে লাঞ্ছিত করেন। আমি বিষয়টি পুলিশকে অবহিত করে সুমন সাহেবকে নিয়ে ঘটনাস্থলে যায়। পরিস্থিতি শান্ত রাখতে ওই ট্রান্সফরমারটি সাময়িক সময়ের জন্য বন্ধ করা হয়েছিল। একজনের অপরাধের জন্য সহ¯্রাধিক গ্রাহককে কেন কষ্ট দেয়া হলো এমন প্রশ্নেরে উত্তরে তিনি বলেন, কষ্টটা ছিল তো সাময়িক।