কোন প্রকার নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে অবাধে বিক্রি হচ্ছে ফসলি জমির মাটি। এসব কৃষি জমির মাটি দিয়ে ইট তৈরির অভিযোগ পাওয়া গেছে। এভাবে মাটি কেটে নেওয়ায় ফসলি জমির উর্বরতা শক্তি কমে গিয়ে উৎপাদনে বিপর্যয় ঘটবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। নষ্ট হচ্ছে পরিবেশর ভারসাম্য। জানাযায়, উপজেলায় ৩৩টি ইটভাটা রয়েছে। এর মধ্যে বেশিরভাগ ইটভাটা ফুলবাড়ীয়া পৌরসভার চারপাশে রয়েছে। এসব ভাটার চাহিদা মেটাতে বিভিন্ন ইউনিয়নে নির্বিচারে আবাদি জমির উর্বর মাটি কাটা হচ্ছে। এক যুগ ধরে বাধা হীন ভাবে মাটি কাটার কাজ চলছে। ইটভাটা বাড়ার পাশাপাশি বেড়েছে ইটের চাহিদাও। ফলে ভাটার মালিকরা হয়েছেন বেপরোয়া। অভাবে কৃষকদের ফাঁদে ফেলে কেটে নেওয়া হচ্ছে আবাদি জমির মাটি। অবাধে মাটি কাটার ফলে উপজেলার বিপুল আবাদি জমি নিচু ও খালে পরিণত হয়েছে। জানা গেছে, বাড়তি আয়ের আশায় অনেকে ফসলি জমির মাটি বিক্রি করছেন। এতে বিপদে পড়েছেন আশেপাশের জমির মালিকরা। গভীর গর্ত করে মাটি কাটার ফলে পাশের জমি উঁচু হয়ে চাষের অনুপযোগী হয়ে পড়ছে। তখন বাধ্য হয়ে ওই জমির মালিকরাও মাটি বিক্রি করতে বাধ্য হন। মাটি বিক্রি করছেন এমন কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বাড়তি আয়ের আশায় তারা আবাদি জমির মাটি বিক্রি করছেন। কুশমাইল ছলিবাজার গ্রামের কৃষক আঃ কাদের জিলানী বলেন, আমার ক্ষেতের চারপাশের জমি থেকে গভীর করে মাটি কেটে বিক্রি করা হয়েছে। এতে আমার জমি উঁচু হয়ে চাষের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। মাটি বিক্রির সঙ্গে জড়িত রুবেল, মাটি বিক্রি করলে জমির কোন ক্ষতি হয় কিনা -তা তারা জানেন না বলে দাবি করেন। সচেতন মহলের ভাষ্য, এভাবে জমির মাটিকাটা অব্যাহত থাকলে একসময় কৃষি জমি বলতে কিছু থাকবে না, সব খালে পরিণত হবে। সেইসাথে কমে যাবে আবাদি জমির পরিমাণ। কৃষকরা সচেতন নন বলে নিজেরা নিজেদের এমন ক্ষতি করছেন। এভাবে আবাদি জমির মাটিকাটা অপরাধ কিনা প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, জমির মালিক বিক্রি করে আমরা তো জোর করে নিই না। গোপন সূত্রে জানাযায়, ফুলবাড়ীয়া উপজেলার কাহালগাও, এনায়েতপুর,রাঙ্গামাটিয়া ,সন্তোষপুর এলাকার মাটি রাতে আঁধারে চলে যাচ্ছে অন্য উপজেলার ইটভাটায়। উপজেলা ইটভাটা মালিক সমিতির সভাপতি লাল মাহমুদ সরকারের সাথে মুঠো ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করলেও তিনি ফোন তুলেননি। পরিবেশ কর্মী বলেন, কৃষি জমির উপরিভাগ উর্বর। এটি কেটে ফেলায় খাদ্য ঘাটতির শঙ্কার পাশাপাশি প্রকৃতি, জীববৈচিত্র্য ও পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে। বিষয়টি স্থানীয় কর্তৃপক্ষকে জানালেও তারা ব্যবস্থা নেয় না। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা নূর মোহাম্মদ বলেন, ফসলি জমির উপরিভাগ উৎপাদনে ব্যাপক ভূমিকা রাখে। এ মাটি সরিয়ে ফেললে নিশ্চিত উৎপাদন কমে যাবে। এর মধ্যেই ফসলে প্রভাব পড়তে শুরু করেছে। সহকারী কমিশনার (ভূমি) সেলিনা আক্তার বলেন, কোথায় বিক্রি হচ্ছে আমার জানা নাই তবে সুনদিষ্টি তথ্য দিলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।