ঝিনাইদহের কালীগঞ্জে শ্রেনীকক্ষ পাঠদানের সময় ব্যাগ থেকে বই বের করদে দেরি করায় শিশু শ্রেনীর লামিয়া (ছদ্দনাম) নামের এক ক্ষুদে শিক্ষার্থী কে নির্যাতন করা হয়েছে। এ ঘটনায় শিশুর অভিভাবক জিল্লুর রহমান কালীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী আফিসার ও অভিযোগ উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তার কাছে একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার সুন্দরপুর দূর্গাপুর গ্রামের সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। শিশু শ্রেনীর একজন ক্ষুদে শিক্ষার্থী। বুধবার শ্রেনীকক্ষে শিক্ষক পাঠদান করাচ্ছিল। সে সময়ে ব্যাগ থেকে পাঠ্যবই বের করতে দেরি করলে, পাঠদানকারী শিক্ষক আবুল কালাম আজাদ রতন শিক্ষার্থীর দুই কানের উপর থাকা চুল ধরে উঁচু করে রাখেন কিছুক্ষণ সময়। এক পর্যায় চুল ছিড়ে ওই শিক্ষার্থী মাটিতে পড়ে যায় এবং অসুস্থ হয়ে পড়ে। এ ঘটনা জানার পর ওই শিক্ষার্থীর পিতা জিল্লুর রহমান বৃহস্পতিবার কালীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহি কর্মকর্তা এবং উপজেলা প্রাথমিক কর্মকর্তার কাছে একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন ঐ শিক্ষকের বিচার চেয়ে। অভিযোগের ব্যাপারে নির্যাতিত শিক্ষার্থীর পিতার মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে ওই শিশুর চাচা দাবি করা আকরাম হোসেন জানান,ভাই মাঠের কাজে ব্যাস্ত রয়েছেন। শিক্ষক কর্তৃক ক্ষুদে শিক্ষার্থী নির্যাতনের ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি জানান,আমার ভাতিজিকে সামান্য কারণে অমানুষিক নির্যাতন করেছেন রতন স্যার। আবার নির্যাতনের পর শিশুটির হাতে ৫ টাকা দিয়ে ওই শিক্ষক বিষয়টি কাউকে না বলার জন্য বলেন। আমরা বৃহস্পতিবার উপজেলা নির্বাহি অফিসারের কাছে গিয়ে পারিবারিক ভাবে একটি লিখিত অভিযোগ করেছি। অভিযুক্ত শিক্ষক আবুল কালাম আজাদ রতন জানান,ওই মেয়েটাকে আমি অনেক স্নেহ করি,মেয়েটাকে আদর করতে যেয়ে তার চুলে একটু টান লেগে এমনটা হয়েছে। তাছাড়া সামাজিক দ্বন্দের কারণে আমার নামে এমন অভিযোগ করা হয়েছে। সরকারী পরিপত্রে বলা হয়েছে, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে কেউ শিশুদের শারীরিক শাস্তি দিলে ১৯৭৯ সালের সরকারি কর্মচারী আচরণ বিধিমালার পরিপন্থী হবে এবং শাস্তিযোগ্য অপরাধ হিসেবে গণ্য হবে।অভিযোগের জন্য অভিযুক্ত ব্যক্তির বিরুদ্ধে সরকারি কর্মচারী (শৃংখলা ও আপিল) বিধিমালা, ১৯৮৫-এর আওতায় অসদাচরণের অভিযোগে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া যাবে। প্রয়োজনে ফৌজদারি আইনেও ব্যবস্থা নেওয়া যাবে। এ ব্যাপারে কালীগঞ্জ উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) মাহমুদ হাসানের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান,একটি অভিযোগ পেয়েছি। ইতোমধ্যে ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের সাথে এ ব্যাপারে কথা বলেছি। আগামী রোববার আমি নিজে বিদ্যালয়ে যাব। অভিযুক্ত শিক্ষকের বিরুদ্ধে যথাযথ তথ্য প্রমান পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেব।