গাজীপুরের কাপাসিয়ার বারিষাব ইউনিয়নের বেলতলী বাজার মার্কাজ মসজিদের সীমানা পিলার ভেঙ্গে ১৪ শতাংশ জমি দখলের প্রতিবাদে বৃহস্পতিবার বিকেলে বিক্ষোভ ও মানববন্ধন করেছেন এলাকাবাসী। এ বিষয়ে স্থানীয় জনগণ গত ২৩ জানুয়ারি উপজলা নির্বাহী অফিসারের কাছে প্রতিকার চেয়ে একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। উপজেলা ভূমি অফিস সূত্রে জানা যায়, বারিষাব ইউনিয়নের বেলতলী বাজার মার্কাজ মসজিদের নামে দুটি দাগে (১৮৩ ও ১৮৪) মোট ৪৬ শতাংশ জমি রয়েছে। কিছুদিন আগে মসজিদের পূর্ব পাশের প্রায় ১৪ শতাংশ জমি বেদখল হয়ে গেছে। স্থানীয়রা জানান, শত বছরের পুরনো এ মসজিদ প্রায় ৬০ বছর যাবৎ কাপাসিয়া ও পার্শবর্তী নরসিংদী জেলার মনোহরদী উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের লোকজন তাবলীগ জামাতের দাওয়াতের কাজ করে থাকেন বলে এটি মার্কাজ মসজিদ নামে পরিচিত। প্রায় পনের বছর আগে মসজিদের সীমানার ভিতরের একটি বড় রেইনট্রি গাছ কাটাকে কেন্দ্র করে মসজিদ কমিটি ও পাশবর্তী চরদুর্লভ খান আঃ হাই সরকার উচ্চবিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের মাঝে বিরোধ দেখা দেয়। তখন বিষয়টির সমাধানের জন্য স্থানীয় জনগণ তৎকালীন উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে আবেদন জানালে তিনি সরকারি সার্ভেয়ার দিয়ে মাপজোখ করলে মসজিদের প্রায় ১৪ শতাংশ জমি ২৬ নং বারিষাব সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও চর দুর্লভ খান আঃ হাই সরকার উচ্চবিদ্যালয়ের সীমানা প্রাচীরের ভিতরে রয়েছে বলে রায় প্রদান করেন। পাশাপাশি আরো কিছু জমি স্থানীয় বিভিন্ন প্রভাবশালী মহলের দখলে পাওয়া যায়। তারপর থেকে বিষয়টির সুষ্ঠু সমাধান না হওয়ায় এ যাবৎ দফায় দফায় তিন বার মাপে একই সীমানা চিহ্নিত করা হয়। সর্বশেষ গত ১৭ আগস্ট উপজলা নির্বাহী কর্মকর্তার নির্দেশে উপজেলা ভূমি অফিসার ও কানুনগো উপস্থিত থেকে মেপে একটি হাত নকশা তৈরি করেন এবং তার কপি সংশ্লিষ্ট সকল পক্ষের কাছে সরবরাহ করেন ও একটি অফিস কপি তিনি নিয়ে যান। এ সময় তিনি সকল পক্ষের উপস্থিতিতে নির্ধারিত স্থানে সীমানা পিলার স্থাপন করেন এবং কোন পক্ষ যেন অনধিকার প্রবেশ না করে সে বিষয়ে সতর্ক করে দেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বেলতলী বাজারের এক ব্যবসায়ী জানান, গত ৯ জানুয়ারি দুপুরে চর দুর্লভ খান আঃ হাই সরকার স্কুল অ্যান্ড কলেজের সহকারী শিক্ষক মোঃ জসিম উদ্দিনের নেতৃত্বে ১০-১২ জন শিক্ষার্থী মসজিদের সীমানা পিলার ভেঙ্গে ফেলেন। তিনি ক্ষমতাসীন দলের প্রভাবশালী নেতা হওয়ার কারণে ভয়ে কেউ প্রতিবাদ করেন নি। এমনকি তার নাম প্রকাশ করতেও এলাকাবাসী ভয় পান। এ বিষয়ে গত ২৩ জানুয়ারি উপজলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে প্রতিকার চেয়ে এলাকাবাসী একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। বৃহস্পতিবার বিকালে মসজিদের সামনে অনুষ্ঠিত মানববন্ধনে অন্যান্যের মাঝে বক্তব্য দেন মুফতি নাজমুল ইসলাম, মাওলানা হাবিবুল্লাহ, মাওলানা মাসুদ, আক্তার পালোয়ান, মোঃ মজিবুর রহমান, রুহুল আমীন ও মুফতি নজরুল ইসলাম প্রমুখ। এ বিষয় অভিযুক্ত শিক্ষক মোঃ জসিম উদ্দিন জানান, স্কুলের সীমানা প্রাচীরের মধ্যে মসজিদের সীমানা পিলার স্থাপন করায় শিক্ষার্থীরা সেগুলো ভেঙে ফেলেছেন এবং তার মতে তারা সঠিক কাজ করেছেন বলে মন্তব্য করেন।