নীলফামারীর সৈয়দপুরে প্রতি বছর বাড়ছে আলুর আবাদ। গত কয়েক বছর থেকে বাজারে আলুর দাম ভাল থাকায় কৃষকরা এ আবাদে আরো বেশি ঝুঁকে পড়েছে। বিভিন্ন ধরনের আলুর আবাদ করে এবং বাজার দর মন মতো পেয়ে খুশি কৃষকরা। তবে পৌষ মাসের প্রথম দিকে শীত কম থাকলেও পৌষের শেষ দিকে এসে বেড়েছে শীতের দাপট। এ অবস্থায় পৌষ চলে গিয়ে শুরু হয় মাঘ মাস। মাঘের শুরুতেই আবার হাঁড় কাঁপানো শীত স্থায়ীভাবে জেঁকে বসেছে। ঘন কুয়াশা আর হিমেল হাওয়ায় কাহিল মানুষ। একদিকে প্রচন্ড ঠান্ডায় মানুষ কাতর অপরদিকে আলু চাষির মাথায় হাত। ঘন কুয়াশায় আলু ক্ষেতে দেখা দিয়েছে পঁচন রোগ বা লেট ব্রাইট। নানা পন্থা অবলোকন করেও রোগের হাত থেকে আলু ক্ষেত রক্ষা করা যাচ্ছে না। ফলে চরম বিপাকে পড়েছেন সৈয়দপুরের প্রায় শতাধিক আলু চাষি। তারা বলছেন ওষুধের দাম বেশি হওয়ায় আরো পড়েছেন দুঃশ্চিন্তায়। সৈয়দপুর কৃষি দপ্তর থেকে তেমন একটা সহযোগিতা পাওয়া যায় না বলে অভিযোগ করা হয়। এক আলু চাষি বলেন, নীলফামারী জেলার মধ্যে সবচেয়ে বেশি আলুর আবাদ হয়ে থাকে কিশোরগঞ্জ ও জলঢাকা উপজেলায়। তবে সৈয়দপুর উপজেলায়ও তুলনামুলকভাবে আলুর আবাদ রয়েছে। কিশোরগঞ্জ উপজেলার বাহাগিলি ইউনিয়নের আলু চাষি রবিউল ইসলাম জানান, পঁচন রোগে আলু গাছ নষ্ট হচ্ছে। ওই রোগের হাত থেকে গাছ রক্ষা করতে বার বার ছত্রাকনাশক স্প্রে করা হচ্ছে। কিন্তু ঘন কুয়াশার কারণে গাছে ওষুধ কাজ করছে না। অনেকে চার থেকে পাঁচ বার করে স্প্রে করার পরও সুফল মেলেনি। যার কারণে আলুর রোগ নিয়ে চাষিরা বিপাকে পড়েছেন। বোতলাগাড়ী ইউনিয়নের আলু চাষি বাদল সরকার জানান, আলুর রোগ নিয়ে রাতে ঘুম হয় না। ওষুধে কোন কাজ হচ্ছে না। কামারপুকুর ইউনিয়নের কিসামত বাকডোকরার আলু চাষি ফজলুল হক বলেন, তিনি ৪ বিঘা জমিতে আলুর চাষ করেছেন। ঘন কুয়াশার কারণে লেট ব্রাইট রোগে আক্রান্ত হয়েছে আলু ক্ষেত। একই কথা বললেন,সাদ্দাম হোসেন। কৃষি বিভাগ থেকে নেই কোন সহযোগিতা। তারা কীটনাশক বিক্রেতার পরামর্শে আলু ক্ষেতে ওষুধ স্প্রে করছেন। এতে তেমন একটা কাজ হচ্ছে না বলে জানান। কাশিরাম বেলপুকুর ইউনিয়নের চাষি দুলাল হোসেন বলেন, আক্রান্ত ক্ষেতে বেশ কয়েক বার ছত্রাকনাশক ওষুধ দিয়েছি কোন কাজ হয়নি। এ অবস্থা বিরাজ করলে এবার আলুতে বড় ধরনের লোকসান গুনতে হবে। সৈয়দপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ধীমান ভূষণ বলেন, এবছর সৈয়দপুর উপজেলার পাঁচটি ইউনিয়নে ১ হাজার ২৯২ একর জমিতে বিভিন্ন জাতের আলুর আবাদ করা হয়েছে। শীত ও কুয়াশায় কিছুটা ক্ষতি হলেও বড় ধরণের ক্ষতি হওয়ার কোনো আশঙ্কা নেই। মাঠ পর্যায়ে কৃষি বিভাগের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তারা কৃষকদের সাথে সব সময় যোগাযোগ রাখছে।