খুলনার রূপসায় এতিম ও দুস্থদের জন্য আসা সৌদি আরবের দুম্বার গোস্তো বিতরণে পিআইও অফিসের বিরুদ্ধে ব্যাপক অনিয়ম ও স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগ উঠেছে। যার কারণে সাধারণ মানুষের ভিতর ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, বিগত বছরের মত এবারও সরকারি ভাবে ২৩ জানুয়ারী এতিম ও দুস্থদের জন্য ১৪ কার্টুন দুম্বার গোস্তো উপজেলায় আসে। যেখানে প্রতি কার্টুনে ১০ পিস করে দুম্বার গোস্তো ছিল। যা এতিম ও দুস্থদের মাঝে বরাদ্দ দেওয়ার নিয়ম থাকলেও তা সঠিক ভাবে বরাদ্দ দেওয়া হয়নি। বরাদ্দের নামে ব্যাপক অনিয়ম ও স্বেচ্ছাচারিতা আশ্রয় নেয়া হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। উপজেলায় শতাধিক মাদ্রাসা থাকলেও তার মধ্যে মাত্র ২৮টি প্রতিষ্ঠানকে ৫টি করে দুম্বার মাংস দেয়া হয়েছে। যেখানে সঠিকভাবে যাচাই-বাছাই করা হয়নি বলে অভিযোগ উঠেছে। ফলে অনেক প্রতিষ্ঠান পাওয়ার যোগ্য হলেও তাদেরকে দেওয়া হয়নি এমন প্রশ্ন জনমনে। এ বিষয়টি নিয়ে সাধারণ মানুষের ভিতর ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিসের তালিকায় উপজেলা মডেল মসজিদের নাম থাকলেও বিষয়টি ওই প্রতিষ্ঠানের দায়িত্বশীলদের কেউ জানেনই না। মডেল মসজিদের নামে দুম্বার মাংস কাকে দেওয়া হয়েছে বা কে নিয়েছে তা রয়েছে রহস্যে ঘেরা। এ ব্যাপারে মডেল মসজিদের ইমাম ও খতিব মাওলানা মোঃ ফুহাদ উদ্দিন জানান, সৌদির দুম্বার মাংসের বিষয় আমাদের কেউ জানায়নি। আর আমরা এ বিষয় কিছুই জানি না। আপনার মাধ্যমে জানলাম। যার কারণে দুম্বার মাংস পাওয়াতো প্রশ্নই আসেনা। তবে উপজেলা মডেল মসজিদের নাম ব্যবহার করা উচিত হয়নি বলে তিনি জানান। অপরদিকে রূপসার ইলাইপুর দারুস সালাম তাহফিজুল কুরআন মাদ্রাসা ও এতিমখানা লিল্লাহ বোডিং এর মোহতামিম হাফেজ মাওলানা মোঃ মারুফ বিল্লাহ জানান, আমাদের মাদ্রাসায় ১০জন এতিম শিশু রয়েছে। তাদের জন্য উপজেলা থেকে পাঁচটি দুম্বার মাংস দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া সামন্তসেনা দারুল সিদ্দিক দাখিল মাদ্রাসায় এতিমখানা ও লিল্লাহ বোডিং না থাকলেও স্বেচ্ছাচারিতার মাধ্যমে তাদেরকে ৫টি দুম্বার মাংস দেওয়া হয়েছে। যা মাদ্রাসা প্রধানসহ কয়েকজন শিক্ষক মিলে ভাগ-বাটোয়ারা করে নিয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে। এমনকি কোন শিক্ষার্থীকেও মাংস দেয়া হয়নি বলে একাধিক সূত্র জানিয়েছে। বিষয়টি নিয়ে মাদ্রাসা প্রধান মাওলানা মোঃ শফিউদ্দীন নেছারী জানান, এই মুহুর্তে এতিমখানা ও লিল্লাহ বোডিং না থাকলেও আগামী ১ তারিখ থেকে চালু করা হবে বলে জানান। আর দুম্বার মাংস সংরক্ষণ করে রাখা হয়েছে। যা পরে দেওয়া হবে। এ ব্যাপারে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মোঃ আনিসুর রহমান অনিয়মের বিষয় জানান, দ্রুত সময়ের ভিতরে বন্টন করা হয়েছে। যার কারণে কোন অনিয়ম হয়ে থাকলে পরবর্তী বছরে যাচাই-বাছাই করে সঠিকভাবে দেয়া হবে। তাছাড়া তালিকায় উপজেলা মডেল মসজিদের নাম থাকলেও তারা এ বিষয়ে কিছুই জানেনা এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি কোন সন্তোষজনক জবাব দিতে পারেননি। এ বিষয়ে জানার জন্য উপজেলা নির্বাহী অফিসার কোহিনুর জাহানের সাথে ফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলে তাকে ফোনে পাওয়া যায়নি। তবে খুলনা জেলা প্রশাসক খন্দকার ইয়াসির আরেফিন জানান, এ ব্যাপারে কোন অনিয়ম হয়ে থাকলে তদন্ত করে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।