পবিত্র রমজান মাস সমাগত। রমজানে নিত্যপন্যের দাম স্থিতিশীল রাখার ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নির্দেশ দিয়েছেন। যদিও নতুন বছর শুরু হবার পর থেকে লাফিয়ে লাফিয়ে নিত্য-পণ্যের দাম বাড়ছে। ডলার সংকটের কারণে রমজানের নিত্যপন্য আমদানির এলসি খোলা সম্ভব হচ্ছে না বলে ব্যবসায়ীদের অভিযোগ রয়েছে। তবে নিত্য-পণ্যের সরবরাহ, মজুত ও মূল্য পরিস্থিতি নিয়ে গত ২১ জানুয়ারি সচিবালয় অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলীর সভাপতিত্বে অন্তমন্ত্রনালয় বৈঠকের পর বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর বলেন, সুনির্দিষ্ট ভাবে রমজানের আট-পণ্যে আগের বছরের জুলাই -জানুয়ারি তুলনায় এবার ১০ থেকে ১৫ শতাংশ বেশি এলসি খোলা হয়েছে। ফলে এলসি খোলার সমস্যার কথা ঠিক নয়। পণ্যগুলো সময় মতো দেশে এসে পৌঁছাবে বলে আশা করা যায়। মধ্যস্বত্ব ভোগীরা কোনো সমস্যা না করলে পণ্য-মূল্য বৃদ্ধির কোনো কারণ নেই। অর্থমন্ত্রনালয় সূত্রে জানা গেছে, সভায় ভোজ্য তেল, চিনি, খেজুরসহ আমদানি নির্ভর পণ্যের শুল্ক কমানোর সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। জাতীয় রাজস্ব বোর্ডে এ ব্যাপারে চিঠি দেবে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। যা পরদিন জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে দেয়া হয়েছে। পণ্য আমদানিতে ডলার সরবরাহ নিশ্চিত করবে বাংলাদেশ ব্যাংক। ডলার নিশ্চিত করা না গেলে অন্যান্য মুদ্রায় আমদানিতে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আন্ত:মন্ত্রণালয়ের এ বৈঠকে নিত্য-পণ্যের সাথে সরাসরি সম্পর্কিত খাধ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার, কৃষিমন্ত্রী আবদুস শহীদ এবং বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম উপস্থিত থাকলেও তারা সাংবাদিকদের সাথে কোনো কথা বলেন নি। অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী জানান, বাজারে নিত্যপণ্যের সরবরাহ ভালো, আগের তুলনায় এবার বেশি ঋণ পত্র খোলা হয়েছে এবং আগামী রমজানে জিনিসপত্রের মূল্যবৃদ্ধির কোনো কারণ নেই। প্রতিবছরই রমজানে নিত্যপণ্যের দাম বাড়ে। এবারও তেমন ইঙ্গিত আগে ভাগেই পাওয়া যাচ্ছে। ইতোমধ্যে ছোলা ও ডালের মতো পণ্যের দাম বেড়েছে। রমজান আসার দেড় মাস আগেই এসব নিত্যপণ্যসহ মাংসের দাম বেড়েছে। শুধু গরু-খাসির মাংস নয় মুরগি ও ডিমের দামও চড়া। কাজেই এখন বাজার নিয়ন্ত্রণ করতে না পারলে রমজানে এসব পণ্যের দাম আকাশ ছোঁয়া উঠবে। বাজারে পণ্য সংকট না থাকলেও দাম বাড়ছে। আর ব্যবসায়ীরা পণ্য সংকটের কথা বলে ভোক্তাদের পকেট কাটছেন। নির্বাচনের আগে গরুর মাংসের দাম বেধে দেওয়া হলেও ব্যবসায়ীরা এখন সিদ্ধান্ত নিয়েছেন গরুর মাংসের আর নির্ধারিত কোনো দাম থাকবে না। বাজারে যোগানোর উপর ও চাহিদার ওপর নির্ভর করে দাম নির্ধারিত করা হবে। তবে ক্রেতাদের সক্ষমতার বিষয়টি বিবেচনা করা হবে। নির্ধারিত দামে মাংস বিক্রি করতে গিয়ে ব্যবসায়ীরা ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছেন। আলোচনার টেবিলে অনেকে অনেক তত্ত্ব কথা বলেন। কিন্তু বাস্তবে দেখা যায় মুখের কথা আর পরিস্থিতি এক নয়। তাই আমরা চাই, বাজারে নিত্যপণ্যের মূল্য স্থিতিশীল রাখতে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ। চলমান সময়ে বাজারে নিত্য পণ্যের দাম বাড়ছে। কাজেই বাজার নিয়ন্ত্রণ করতে কার্যকরী পদক্ষেপ নেয়া খুবই জরুরি।