কালীগঞ্জে যশোর মহাসড়কসহ বিভিন্ন সড়কের পাশে ও উপরে অবৈধভাবে বাঁশের তৈরি পণ্যের হাট,ধানেরহাট,কাচা বাজারের হাট বসছে। যেখানে এসব পণ্য রাখা হয়েছে সেখানেই যানবাহন থামিয়ে মালামাল ওঠানামা করানো হচ্ছে। কালীগঞ্জ মহাসড়কের ওপর নিমতলা ষ্টান্ডে অবৈধভাবে বাঁশের তৈরি পণ্যের হাট বসেছে। কালীগঞ্জ ঝিনাইদহ মহাসড়কের ধার ঘেঁষে ৩০ থেকে ৩৫ বছর ধরে সপ্তাহে দুদিন হাট বসছে। যেমন কালীগঞ্জ নিমতলা, মাহাতাব উদ্দিন কলেজ মোড়ে, বিষয়খালি, তেতুলতলা, দোকান ঘর, আবার কালীগঞ্জ যশোর সড়কের বৈশাখি তেল পাম্প, চিনি কলের সামনে, দুলাল মুন্দিয়া, কেয়া বাগান, বারোবাজার এবং কালীগঞ্জ কোটচাদপুর সড়কের কাশিপুর রেলগেট,পাতবিলা, লাউতলা, তালেশ্বরসহ বিভিন্ন স্থানে হাটবাজার বসছে। এতে ঝুঁকি নিয়ে যান চলাচল করলেও হাট ইজারাদার নিজ স্বার্থে কাজটি করে চলেছেন। প্রশাসন ও নিচ্ছে না জোরালো কোনো পদক্ষেপ। সড়কের দুই পাশে গড়ে উঠেছে এ হাটবাজার। সরেজমিনে দেখা গেছে, মহাসড়কে চলাচলকারী বাসগুলো বাসস্ট্যান্ডের যে স্থানে দাঁড়িয়ে যাত্রী ওঠা-নামা করানোর কথা সেখানে এখন আর বাস দাঁড়াতে পারছে না। কারণ, ওই জায়গায় এখন হাটের পণ্য স্তুপ করে রাখা। ফলে মহাসড়কেই গাড়ি থামিয়ে যাত্রী ওঠা-নামা করানো হচ্ছে। ফলে হাটে আসা লোকজনের সঙ্গে দুর্ভোগ পোহাচ্ছে বাসে ওঠা-নামা করা যাত্রীরা। এ ভোগান্তির সঙ্গে সঙ্গে বাড়ছে ঝুঁকিও। মহাসড়কের যে স্থানে গাড়ি় দাঁড় করানোর কথা, সেখানে পণ্য রেখে ব্যবসা চলছে বছরের পর বছর। এখানে রাস্তার ধার ঘেঁষে ব্যবসা করতে তাঁরা কখনো কোনো অসুবিধায় পড়েননি বলে জানান হাটের ব্যবসায়ীরা। হাটের নিয়ম অনুযায়ী ইজারাদারকে প্রত্যেক ব্যবসায়ীকে দৈনিক টাকা দিতে হয়। বাসচালকরা বলেন, মহাসড়কে হাট বসলে গাড়ি চালানো খুব কষ্ট হয়। গাড়ি যেখানে ভেড়ানোর কথা সেখানে ভেড়ানো যায় না। প্রধান সড়কের ওপরই গাড়ি দাঁড় করাতে হয়। মানুষজন এক পাশ থেকে অন্য পাশে দৌড়াদৌড়ি করে। বাসের গতি কমালেও ঝুঁকি থাকে। হাটের ইজারাদাররা বলেন, হাটে পর্যাপ্ত জায়গা না হওয়ায় হাটের দিন কয়েকজন ব্যবসায়ী মহাসড়কে গাড়ি দাঁড় করানোর জায়গায় বসে ব্যবসা করেন। মূল হাটের জায়গায় যে দোকানপাট আছে, তা থেকে পাওয়া টোলে আমার টাকা উঠবে না। তাই রাস্তায় বসা কয়েকজন ব্যবসায়ীর কাছ থেকেও টোল নেওয়া হচ্ছে।’ তবে এতে তেমন কোনো অসুবিধা হয় না বলে ইজারাদার দাবি করেন। বিশেষ করে কালীগঞ্জ ঝিনাইদহ,যশোর ও কোটচাদপুর সড়ক তিনটি অত্যান্ত ব্যাস্ততম সড়ক। এ সড়ক দিয়ে দিন রাত সর্ব সময় গাড়ি চলাচল করে থাকে। কিন্তু উল্লিখিত স্থান গুলোতে হাট বসার কারণে যানবাহন চলাচলে মারাত্নক সমস্যার সৃষ্টি হয়। প্রায় হাটের দিন গাড়ি জাম হলে ঘন্টার পর ঘন্টা যানজট হয়ে পড়ে। বিশেষ করে বিষয়খালি ও তেতুলতলায় হটের দিন ধান ব্যবসায়িরা রাস্তার উপরে ধানের বস্তা রাখার কারণে যানজট সৃষ্টি হয়। মাহাতাব উদ্দিন ডিগ্রী কলেজ মোড়ে কলার হাটের কারণে যানজট সৃষ্টি হয়। এসব স্থানে যখন যানজট হয় তখন দুরপাল্লার যাত্রিদের পড়তে হয় মরাত্নক দুভোগে। এলাকায় ধানের হাট বসার জায়গা না থাকার কারণে মহাসড়কের উপরে হাট বসানো হয়েছে। রাস্তার পাশে জায়গা থাকলে ও বিক্রেতারা ধান, কলা, বাশের তৈরি বিভিন্ন পন্য রাস্তার উপরে রেখে বিক্রি করে থাকে। এসব হাটবাজারের কারণে যশোর ও ঝিনাইদহের শিক্ষার্থীদের নির্দিষ্ট সময়ে তারা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যেতে পারে না। বিশেষ করে পরিক্ষার সময় বেশি সমস্যার সৃষ্টি হয়। এ ব্যাপারে স্থানীয় প্রশাসন ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা উদ্যোগ নিলে সড়কের উপরের হাট সরিয়ে অন্যাত্র স্থানে নিয়ে যাওয়া সম্ভব বলে সচেতন মহল মনে করেন। অপরদিকে মহাসড়রে পাশে রয়েছে মাহাতাব উদ্দিন ডিগ্রী কলেজ, বিষয়খালি কলেজ ও হাইস্কুল, বিষয়খালি দাখিল মাদ্রাসা, বেজপাড়া হাইস্কুল, তেতুলতলা হাইস্কুল, দুলালমুন্দিয়া হাইস্কুল, রোস্তম আলী হাইস্কুল, বারোবাজার কলেজ ও হাইস্কুল, মায়াময় বালিকা বিদ্যালয়, কেয়াবাগান কলেজ। অপরদিকে মহাসড়কের দু,পাশে রয়েছে একাধিক মসজিদ, দোকানপাট ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, বাসাবাড়ি। কালীগঞ্জের উপর দিয়ে যাওয়া সড়কের উপরে যেসব হাটবাজার রয়েছে সেসব জায়গায় ছোটবড় অনেক দূর্ঘটনা ও ঘটে থাকে। কিন্তু প্রশাসন এ বিষয়ে কোন সময় আমলে নেয় না রহস্য জনক কারনে। মহাসড়কের উপরে হাটবসার কারণে প্রশাসনের গাড়ি অনেক সময় যানজটের মধ্যে পড়ে থাকে। কিন্তু দীর্ঘ বছর হলে ও এসব সমস্যার সমাধানের কোন উপায় হয়নি। ফলে সমস্যা লেগেই আছে আর যানজট হতেই আছে, দুরপাল্লার যাত্রিরা ও মারাত্নক দুভোগে পড়ে থাকে। হাটগুলোতে এক দিকে ক্রেতাদের ভিড় আবার সড়কের উপরে গাড়ি রেখে মালামাল উঠানো হয়।