যন্ত্রণাময় অপেক্ষার দিনগুলি শেষের পথে। বেশ কিছুদিন ধরেই অনুশীলনে ফিরেছেন রিশাভ পান্ত। নিজেকে তৈরি করছেন প্রতিযোগিতামূলক ক্রিকেটে ফেরার জন্য। সেই লড়াইয়ের ফাঁকেই ভারতের কিপার-ব্যাটসম্যান ফিরে তাকালেন তার জীবনের ভয়ঙ্করতম দিনটিতে। ভয়ানক সেই দুর্ঘটনায় পড়ার পর পান্তের মনে হয়েছিল, তিনি আর বাঁচবেন না। ২০২২ সালের ৩০ ডিসেম্বর ভোরে এই দুর্ঘটনায় পড়েন তিনি। রাতে গাড়ি চালিয়ে যাচ্ছিলেন নিজ শহর উত্তরাখন্ডের রুর্কিতে। ভোরের দিকে একটু তন্দ্রামতো আসায় নিয়ন্ত্রণ হারান তিনি। ডিভাইডারে লেগে উল্টে যায় তার গাড়ি, একটু পর আগুন ধরে যায়। সেসময় উল্টো দিকের রাস্তা ধরে যাচ্ছিল হারিয়ানা রোডওয়েজের একটি বাস। পাশেই একটি গাড়িকে দুঘটনায় পড়তে দেখে বাসের চালক সুশিল কুমার ও তার সহকারী পারামজিত বাস থামিয়ে ছুটে গিয়ে জলন্ত গাড়ি থেকে বের করেন পান্তকে। তারা তখনও জানতেন না, ভারতের এক তারকা ক্রিকেটারকে তারা উদ্ধার করেছেন। ফোন করে পুলিশ ও অ্যাম্বুলেন্স ডেকে আনেন তারা। পরে জানতে পারেন যে, আহত মানুষটি ছিলেন পান্ত। সেই দুর্ঘটনায় পান্তের হাঁটুর লিগামেন্ট ছিঁড়ে যায়। কবজি, অ্যাঙ্কেল, পায়ের অগ্রভাগসহ চোট পান নানা জায়গায়। আঘাত পান পিঠে ও মাথায়। শুরু হয় তার চিকিৎসা ও পুনর্বাসনের দীর্ঘ পালা। মাঝেমধ্যে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছবি দিয়ে নিজের অগ্রগতির জানান দিয়েছেন তিনি। জিমে ফেরা, অনুশীলনে ফেরার ছবিও দিয়েছেন। তবে দুর্ঘটনা নিয়ে টুকটাক কিছু কথা ছাড়া সেভাবে কিছু বলেননি। এবার স্টার স্পোর্টসে তিনি শোনালেন সেই বিভীষিকাময় অভিজ্ঞতার কিছুটা। “জীবনে প্রথমবার মনে হয়েছিল, এই দুনিয়াতে আমার সময়টুকু শেষ। দুর্ঘটনার সময়ই বুঝতে পেরেছিলাম, আঘাত কতটা গুরুতর। তবে একদিক থেকে আমি ভাগ্যবান যে, আরও কত বাজে কিছু হতে পারত। মনে হয়েছিল, কেউ একজন আমাকে রক্ষা করেছে।” “চিকিৎসককে জিজ্ঞেস করেছিলাম, সেরে উঠতে কত সময় লাগবে। তিনি বলেছিলেন ১৬ থেকে ১৮ মাস। আমি জানতাম, সেরে ওঠার সময়টা কমাতে হলে আমাকে অনেক কষ্ট করে হবে, পরিশ্রম করতে হবে।” গত ১৩ মাসে ভারতের অনেক ম্যাচসহ আইসিসি টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনাল, নিজ দেশে ওয়ানডে বিশ্বকাপে খেলতে পারেননি পান্ত। আগ্রাসী এই কিপার-ব্যাটসম্যানের ঘাটতিও নিশ্চিতভাবেই অনুভব করেছে তার দল। ধারণা করা হচ্ছে, ফেব্রুয়ারির শেষ নাগাদ মাঠের ক্রিকেটে ফিরতে পুরো তৈরি হয়ে যাবেন পান্ত। তবে প্রতিযোগিতামূলক ক্রিকেটে ফিরবেন তিনি আইপিএল দিয়ে।