ব্রোকলি চাষে সফলতা এসেছে শ্রীমঙ্গলে। উপজেলার টিকরিয়া গ্রামের সবজি চাষি শরিফ মিয়া। তিনি দুই বছর আগে তার নিজস্ব জমিতে ব্রকলির চাষ করে সফল হন। সে সময় তিনি ব্রোকলির ১২ হাজার চারা লাগিয়ে উৎপাদিত ব্রোকলি বিক্রি করে ৬ লাখ টাকা আয় করেন। এরপর থেকে তিনি প্রতিবছর ব্রোকলি চাষ করে আসছেন। ব্রোকলি চাষ সফল হওয়ায় এখন অন্যান্য চাষিরাও ব্রোকলি চাষে আগ্রহী হয়ে উঠেছেন। চাষি শরিফ মিয়া জানান, তিনি এবার তার ৪০ শতক জমিতে ব্রোকলির চাষ করেন। কার্তিক মাসের শেষ দিকে তিনি ৪ হাজার ব্রোকলির চারা রোপন করেন। তার পরিচর্যায় মাত্র আড়াই মাসের মাথায় তিনি ব্রোকলি বিক্রি শুরু করেন। গত ১৫ দিনে তিনি ৫০ হাজার টাকার ব্রোকলি বিক্রি করেছেন বলে জানান। আগামী ১৫ দিনের মধ্যে আরো ৫০ হাজার টাকার ব্রোকলি বাজারে বিক্রি করতে পারবেন বলে আশা করছেন। শরিফ মিয়া জানান, তার ১ ইঞ্চি জমিও অনাবাদী নাই। ব্রোকলি ছাড়াও তিনি সারা বছর বিভিন্ন জাতের সবজি চাষ করে থাকেন। তারমধ্যে আলু, বেগুন, টমেটো, ফুলকপি, লাউ, শিম, করলা, মুলা, বরবটি প্রভৃতি। কৃষি অধিদপ্তর সুত্র জানায়, ব্রোকলি বা সবুজ ফুলকপি আমাদের দেশে একটি নতুন কপি গোত্রের সবজি। কিছুদিন আগেও ব্রোকলি দেশের মানুষের কাছে অপরিচিত সবজি ছিল। বর্তমানে এটি লাভজনক হিসেবে দিন দিন জনপ্রিয় হয়ে উঠছে এবং সবার কাছে সমাদৃত হচ্ছে। কারণ এই কপি অন্যান্য সবজির চেয়ে বেশি পুষ্টি সমৃদ্ধ। সুত্র জানায়, ব্রোকলিতে ভিটামিন সি, ক্যালসিয়াম ও লৌহ বিদ্যমান। ব্রোকলি ক্যান্সার, স্তন ক্যান্সার প্রতিরোধে ভূমিকা রাখে। শিশুদের রাতকানা ও অন্ধত্ব রোগ থেকে রক্ষা করতে পারে। এ ছাড়া রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। কোলেষ্টেরল কমাতে সাহায্য করে। গ্যাসট্রিক আলসার প্রতিরোধে দারুন কার্যকর। শ্রীমঙ্গল উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মো. মহিউদ্দিন জানান, আমাদের দেশে শীতকালীন আবহাওয়ায় ব্রোকলি চাষের জন্য খুব উপযোগী। এটি একটি অত্যন্ত পুষ্টিকর সবজি। তাছাড়া ব্রোকলি স্বাস্হ্যসম্মত সবজি। এটি হালকা সিদ্ধ করে তেল-মসলা ছাড়াও খাওয়া যায়। বর্তমানে চাইনিজ রেস্টুরেন্ট গুলোতে ব্রোকলি’র চাহিদা বেশ বৃদ্ধি পেয়েছে।