মৌলভীবাজার জেলার জুড়ীতে হামলার ঘটনায় পরকিয়া প্রেমিক আবদুর রব কে গ্রেপ্তার করে কারাগারে পাঠিয়েছে পুলিশ। বুধবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) সকালে জুড়ী থানা পুলিশ উপজেলার জায়ফরনগর ইউনিয়নের বেলাগাঁও সোনাপুর গ্রামের মৃত ছায়েব আলীর পুত্র আবদুর রবকে (৫০) বিজ্ঞ আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠিয়েছেন। মামলা ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, দীর্ঘ দিন থেকে মামলার বাদী একই গ্রামের প্রবাসী মৃত এরশাদ আলীর ছেলে হাছন আলী (৩৮) এর বাড়ীতে আসা যাওয়ার সুযোগে তার স্ত্রী কুলসুমার উপর লুলুপ দৃষ্টি পরে রবের। আসা যাওয়ার একপর্যায়ে আকার ইঙ্গিতে কুলসুমাকে প্রেম নিবেদন করতে থাকে। প্রথমে কুলসুমা সাড়া না দিলেও একসময় রবের প্রেমে সাড়া দেয়। গোপনে চলতে থাকে রব কুলসুমার অভিসার। একসময় ঘটনা জানাজানি হয়ে গেলে এলাকার মানুষের মধ্যে পানাগোসা শুরু হয়। এসব শুনে কুলসুমার স্বামী হাছান আলী প্রবাস দেশে থেকে চলে আসেন। কুলসুমা ও রবের গোপন সম্পর্কের বিষয়টি নিয়ে স্বামী স্ত্রীর মধ্যে প্রায়ই ঝগড়াঝাঁটি হত। হাছান তার স্ত্রীকে অনেক বুঝানোর চেষ্টা করে ব্যর্থ হন। এ নিয়ে তাদের পরিবারে অশান্তির সৃষ্টি হলে স্বামী স্ত্রীর মধ্যে দূরত্ব বাড়তে থাকে। মনোমালিন্যের একপর্যায়ে কুলসুমা বাবার বাড়ি চলে যায়। পরে রব কুলসুমাকে কাছে পাওয়ার জন্য তাকে দিয়ে তার স্বামীর উপর নারী ও শিশু নির্যাতনের মামলা করান। রব হাছানের বড় ধরনের ক্ষতি করতে বিভিন্ন ফন্দি আটতে থাকে। এ বিরুদের জের ধরে গত ৭ ফেব্রুয়ারি সকালে হাকালুকি হাওড়ে কৃষি জমিতে কাজ করা অবস্থায় তাকে একা পেয়ে আবদুর রব দল বল নিয়ে হত্যার উদ্দেশ্যে হাছানের উপর সন্ত্রাসী হামলা চালায়। হামলায় হাছান রক্তাক্ত জখম হন। পরে তার আত্মচিৎকারে অন্য জমিতে কাজ করা কয়েকজন কৃষক ছুটে এসে তাকে উদ্ধার করে জুড়ী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। সেখানে তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য মৌলভীবাজার সদর হাসপাতালে প্রেরণ করেন। সেখান থেকে হাছান আলীকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসকরা জানিয়েছেন হাছান শংকামুক্ত নন। এ ঘটনায় জুড়ী থানায় মঙ্গলবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) ৩৪১/৩২৩/৩০৭/৩২৫/৫০৬ ধারায় মামলা হলে (মামলা নং-৯, তারিখ ১৩.০২.২০২৪) এসআই ওবায়েদ এর নেতৃত্বে পুলিশের একটি টিম আবদুর রবকে গ্রেপ্তার করে বুধবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে প্রেরণ করেন। আহত হাছান আলী জানান, আমার একটি শিশু সন্তান রয়েছে। আবদুর রব আমার সংসার ভেঙ্গে তছনছ করে দিয়েছে। হত্যার উদ্দেশ্যে দল বল নিয়ে আমার উপর হামলা চালিয়েছে। বর্তমানে আমি মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছি। আমি দালাল আবদুর রবের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই। এ বিষয়ে বক্তব্য নিতে হাছান আলীর স্ত্রী কুলসুমা বেগমের মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে কুলসুমার বাবা নুরুজ্জামান আবদুর রবের সাথে কুলসুমার সম্পর্কের বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, এ বিষয়ে সরাসরি কথা বলব। এ বিষয়ে আবদুর রবের বড় ভাই মনির মিয়া বলেন, আমার ভাইয়ের পিছনে শত্রু লেগে আছে। আমার ভাই এসব ঘটনার সাথে জড়িত না। এ বিষয়ে জুড়ী থানার ওসি এসএম মাইন উদ্দিন বলেন, আসামীকে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে প্রেরণ করা হয়েছে। এদিকে বৃহস্পতিবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) মৌলভীবাজার চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে আবদুর রবের জামিন প্রার্থনা করা হলে বিজ্ঞ আদালত জানিন না মঞ্জুর করে আসামিকে জেল হাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন।