রাজধানীর উত্তরা থেকে মতিঝিল পর্যন্ত মেট্রোরেল পুরোপুরি চালুর পর প্রতিদিনই বাড়ছে যাত্রীদের চাপ। টিকিট সংগ্রহে দীর্ঘ সারির পাশাপাশি তিল ধারণের ঠাই নেই প্রতিটি বগিতে। ফলে মেট্রোরেলের আয়ও বেড়েছে বহুগুণ। প্রতিদিন যাতায়াত করছে ২ লাখ ৪০ হাজার যাত্রী। এদের মধ্যে একক যাত্রার টিকিট ব্যবহার করছেন ৫৫ ভাগ যাত্রী। কর্মকর্তারা জানান, বাকি ৪৫ শতাংশ যাত্রী এমআরটি ব্যবহার করেন। সে হিসাবে প্রতিদিন এক লাখ ৩২ হাজার যাত্রী যাতায়াত করছে একক যাত্রার টিকিট ব্যবহার করে। বাস, প্রাইভেটকার, অটোরিকশা ছেড়ে এখন মেট্রোর দিকে ঝুঁকছেন যাত্রীরা। এমআরটি পাস ব্যবহার করছে ১ লাখ ৮ হাজার যাত্রী। সারাদিন মেট্রোরেল চলাচল শুরুর পর থেকে যাত্রী কমে যাচ্ছে ওই রুটের বাসগুলোয়। এতে করে বাস মালিক ও পরিবহন শ্রমিকরা লোকসান গুণছেন। ঢাকায় যানজটে ভোগান্তি মানুষের জন্য একমাত্র স্বস্তি হয়ে দাঁড়িয়েছে মেট্রোরেল। তবে দেখা যাচ্ছে, যাত্রী চাহিদার তুলনায় এখনো মেট্রোরেলের সংখ্যা কম। দুটি ট্রেনের দূরত্বও বেশ লম্বা। মেট্রোতে ভ্রমণের সময় আগের তুলনায় কিছুটা বেড়েছে। কিন্তু যারা নিয়মিত মেট্রোরেলে চড়েন তাদের চাহিদা পুরোপুরি পূরণ হয় না। তবে কর্তৃপক্ষ উদ্যোগ নিলে এই সমস্যাগুলোর সমাধান অসম্ভব নয়। দ্রুত গন্তব্যে পৌঁছানো যায় বলে অনেকেই মেট্রোরেলকে বেছে নিয়েছেন। কি সকাল, কি বিকেল বা রাতে মেট্রোরেলের কোচগুলো যাত্রীবোঝাই হয়ে চলাচল করে। টিকিট কাউন্টারের সামনে দিনের বেশির ভাগ সময় সুদীর্ঘ লাইন দেখা যায়। প্রায় প্রতিটি কোচেই উপচে পড়া ভিড়। উত্তরা থেকে মতিঝিল রুটে সকাল থেকে রাত ১২টা পর্যন্ত ট্রেন চলাচল করার কথা। ঘণ্টায় ৬০ হাজার এবং দিনে পাঁচ লাখ যাত্রী পরিবহনের কথা। এজন্য পর্যাপ্ত ট্রেনও মজুত আছে। এই রুটের জন্য ২৪ সেট ট্রেন কেনা আছে। অথচ সকাল ৮টা থেকে রাত সাড়ে ৮টা পর্যন্ত ছয়টি কোচ নিয়ে ট্রেনগুলো চলছে ১০ থেকে ১২ মিনিট বিরতিতে। কিন্তু প্রতিটি ট্রেনে আরও দুটো কোচ যুক্ত করে রাত ১২টা পর্যন্ত চালানো সম্ভব। দুই ট্রেনের মধ্যে বিরতিও কমিয়ে আনা যায়। ব্যস্ততার সময়ে ট্রেনের সংখ্যা বাড়ানো জরুরি। মানুষ যাতে উঠতে পারে, স্বাচ্ছন্দ্যে চলাচল করতে পারে, সেটা নিশ্চিত করতে হবে। যাত্রী আছে, ট্রেন প্রস্তুত আছে, তাহলে মেট্রোরেলে ট্রেন চলাচলের সংখ্যা বাড়ছে না কেন-সেই খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ঘাটতি আসলে দক্ষ জনবলের। তাই আমরা আশা করব, মেট্রোরেল কর্তৃপক্ষ যাত্রীদের চাহিদার কথা গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করবে। এবং যাত্রীর চাপ যেভাবে বাড়ছে, তাতে কেবল কোচের সংখ্যা বাড়ালেই কাজ হবে না। ট্রেনের সংখ্যাও বাড়াতে হবে।’