গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলায় এক শ্রেণির প্রতারক চক্রের খপ্পড়ে পড়ে প্রতিনিয়ত: সমাজসেবার ভাতা ভোগীরা ভাতার অর্থ খোঁয়াচ্ছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। জানা গেছে, উপজেলার ১৫ ইউনিয়ন ও ১ পৌর এলাকায় ৫৩ হাজার ৯৮ জন অস্বচ্ছল বিধবা, বয়স্ক ও প্রতিবন্ধি সমাজসেবার তালিকা ভুক্ত ভাতা ভোগী। এর মধ্যে বয়স্ক ২৬ হাজার ৯’শ ২৩, বিধবা ১২ হাজার ৭’শ ৩১ এবং প্রতিবন্ধি ১৩ হাজার ৪’শ ৪৪ জন। এসকল ভাতা ভোগী সরকারি ভাবে প্রাপ্ত ভাতার অর্থ দিয়ে কিছুটা হলেও উপকার পাচ্ছেন। কিন্তু সম্প্রতি এক শ্রেণির প্রতারক তাদের পিছু নিয়েছে। তারা ভাতার টাকা “নগদ” একাউন্টে ঢোকার সাথে সাথেই সুযোগ বুঝে ভাতা ভোগীদের মোবাইল নম্বর সংগ্রহ করে তাদের ফোন করছেন। ফোন করে মিষ্টি ভাষায় নিজেদের সমাজসেবা অফিসের কর্মকর্তা বা কর্মচারী বলে দাবী করে বিভিন্ন কায়দায় ও প্রলোভন দেখিয়ে তাদের কাছ থেকে “নগদ” একাউন্টের পিন নম্বর সংগ্রহ করে বা মোবাইলে মেসেজ দিয়ে ওটিপি নম্বর সংগ্রহ করে প্রদেয় ভাতার সম্পুন্ন টাকা আত্মসাৎ করছেন। পরবর্তীতে ভাতা ভোগীরা বিষয়টি বুঝতে পেরে সংশ্লিস্ট দপ্তরে যোগাযোগ করেও কোন সমাধান পাচ্ছেন না। এনিয়ে প্রতিদিন অভিযোগ জানাতে উপজেলা সমাজসেবা অফিসে অনেক ভক্তু ভোগী ভীড় করছেন। এ ব্যাপারে কঞ্চিবাড়ী ইউপি চেয়ারম্যান মনোয়ার আলম সরকার, বেলকা ইউপি চেয়ারম্যান ইব্রাহিম খলিলুল্লাহ, সর্বানন্দ ইউপি চেয়ারম্যান জহুরুল ইসলামসহ অন্যান্য ইউপি চেয়ারম্যান ও মেম্বাররা জানান, প্রতিদিন আমাদের কাছেও অনেক ভাতা ভোগী অভিযোগ করছেন তাদের ভাতার টাকা খোঁয়ানোর বিষয়ে। তবে আমাদের প্রশ্ন প্রতারক চক্রটি কিভাবে ভাতা ভোগীদের নাম ও মোবাইল নম্বর পাচ্ছেন এবং জানেন তাদের একাউন্টে ভাতার টাকা ঢুকেছে। আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি স্ব-স্ব ইউনিয়নে মাইকিং করে প্রতারক চক্রটির কাছ থেকে ভাতা ভোগীদের সতর্ক থাকতে বলা হবে। এনিয়ে উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা রফিকুজ্জামানকে জিজ্ঞেস করলে তিনি বলেন কোন অবস্থাতেই সমাজসেবা অফিসের কোন কর্মকর্তা বা কর্মচারী ভাতা ভোগীদের কাছ থেকে “নগদ” একাউন্টের গোপন পিন নম্বর ও মেসেজ দিয়ে ওটিপি নম্বর জানতে চাবেনই না। প্রতারক চক্রটির প্রতারনার কবল থেকে ভাতা ভোগীদের রক্ষার জন্য আমরা সচেতনতা মুলক গণ বিজ্ঞপ্তি প্রচার করার জন্য সংশ্লিষ্ট ইউপি চেয়ারম্যানদের পরামর্শ দিয়েছি। এ ব্যাপারে উপপরিচালক সমাজসেবা অধিদপ্তর গাইবান্ধা ফজলুল হক এর সাথে কথা হলে তিনি জানান, আমাদের অধিদপ্তরের কোন কর্মকর্তা বা কোন কর্মচারী কোন দিনই ভাতা ভোগীদের গোপন পিন নম্বর জানতে চাইতে পারেন না। এ ছাড়া চাইবেনও না। মাইকিং করে ভাতাভোগীদের সতর্ক বার্তা দিয়েছি কোন অবস্থাতেই যেন তারা নিজ মোবাইলের গোপন পিন নম্বর কাউকে না দেয়। এমন ধরনের পিন নম্বর চেয়ে বা ওটিপি নম্বর চেয়ে কেউ ফোন করলে সংশ্লিষ্ট দপ্তরের নজরে আনার পরামর্শ দেয়া হচ্ছে।