পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়া উপজেলার বাংলাবান্ধায় দু’টি বন্য হাতি প্রবেশ করায় এলাকাবাসীর মনে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। জানা যায়, মঙ্গলবার ভোরে উপজেলার তিরনইহাট ইউনিয়নে ভারতীয় সীমান্ত ইসলামবাগ এলাকা দিয়ে প্রবেশ করে। এলাকাবাসীর ধারণা ভারতের সীমান্ত গেট ভেঙ্গে বন্য হাতি দুটি বাংলাদেশে ঢুকে গেছে। এনিয়ে এলাকাবাসীর মনে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। সকালে ওই সীমান্ত দিয়ে পার হওয়া হাতি দুটি কয়েক কিলোমিটার পাড়ি দিয়ে বাংলাবান্ধা ইউনিয়নের দক্ষিণ কাশিমগঞ্জের একটি ভুট্টা ক্ষেতে অবস্থান করছে। প্রত্যক্ষদর্শী ও এলাকাবাসী জানান, সকালে দুটি বন্য হাতি ইসলামবাগ হয়ে দৌলতপাড়া দিয়ে দক্ষিণ কাশিমগঞ্জে প্রবেশ করে। আসার পথে দু'তিনজন কৃষকের গৃহপালিত প্রাণির উপর আক্রমণ করে। হাতির আক্রমণে দৌলতপাড়া এলাকার সামসুল হক নামে এক দরিদ্র কৃষকের একটি গরুকে মেরে ফেলে। পরে কাশিমগঞ্জ এলাকায় বেশ কিছু বাড়িতে ঢুকে বৈদ্যুতিক তার, মোটরের তার, টয়লেট, বেড়া, পিয়াজ ও ভূট্টা ক্ষেতের ক্ষতির খবর পাওয়া গেছে। গ্রামের ভেতর হাতি প্রবেশ করার খবর যেমন আতঙ্ক ছড়িয়েছে অন্যদিকে শতশত উৎসুক জনতা হাতি দেখার জন্য ওই এলাকায় ভিড় জমেছে। স্থানীয় বাসিন্দা মুন্নী বেগম ও নাহিদাসহ কয়েক জানান, সকালে দুটি বন্য হাতি বাড়িতে ঢুকে পড়লে আতঙ্ক হয়ে পড়ি। বাড়ির বেড়া, কারেন্টের তার, মোটরের তার ছিঁড়ে ফেলেছে। এতে কিছু ক্ষতি হয়েছে। আর আমরা আতঙ্কের মধ্যে আছি। বাংলাবান্ধা ইউপি চেয়ারম্যান কুদরত ই খুদা মিলন বলেন, ভারতীয় সীমান্ত অতিক্রম করে হাতি দুটি আমার ইউনিয়নের দক্ষিণ কাশিমগঞ্জের একটি ভুট্টা ক্ষেতে অবস্থান করছে। গ্রামবাসীর মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করলেও কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি। খবর পেয়ে বিজিবি, ফায়ার সার্ভিস ও পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে জনসাধারণকে সাবধানে থাকার পরামর্শ দেয়া হয়েছে। উপজেলা বন কর্মকর্তা নুরল হুদা বলেন, বাংলাবান্ধা কাশিমগঞ্জে দুটি বন্য হাতির খবর পেয়ে আমাদের বনবিভাগের কর্মকর্তা ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন। এসেই জনসাধারণকে নিরাপদে রাখতে হ্যান্ড মাইক দিয়ে দূরে থাকতে বলা হয়। উধ্বর্তন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। তেঁতুলিয়া উপজেলার নির্বাহী অফিসার ফজলে রাব্বি বলেন, বন্য হাতি আসার খবর শুনেই ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। বিষয়টি জেলা প্রশাসক, মডেল থানা পুলিশ, বন বিভাগসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে জানিয়েছি। কেউই যাতে প্রাণিগুলোকে বিরক্ত না করে সে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। নিরাপত্তার স্বার্থে সবাইকে সরিয়ে নেয়া হয়েছে। এরিপোর্ট লেখা পর্যন্ত হাতি দুটি সংরক্ষণের জন্য বন বিভাগের কোন বিশেষজ্ঞ ঘটনাস্থলে পৌঁছেনি।