যশোরের মণিরামপুর পৌর শহরে কাপড়ের দোকান ভাংচুর ও পুলিশ কর্মকর্তার উপর হামলার ঘটনার ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় থানায় পৃথক দুই মামলা হয়েছে। সোমবার রাত ১০টার দিকে পৌরশহরের কাপড় ব্যবসায়ী মোশাররফ হোসেন ও থানার সেকেন্ড অফিসার উপপরিদর্শক আবু বক্কর বাদী হয়ে পৃথক এই মামলা দুটি করেন। দুই মামলার মধ্যে মোশাররফ হোসেনের করা মামলায় ৬ জনকে ও এসআই আবু বক্কর সিদ্দিকের করা মামলায় ৩ জনকে এজাহারনামীয় আসামি করা হয়েছে। দুই মামলায় ১৫ থেকে ২০ জন করে অজ্ঞাত ব্যক্তিদের আসামি করা হয়েছে। এ ছাড়া মণিরামপুর পৌরসভার কামালপুর-আংশিক বিজয়রামপুর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর বাবুল আক্তার ও দুর্গাপুর-স্বরুপদাহ ওয়ার্ডের কাউন্সিলর আদম আলীকে দুই মামলায় আসামি করা হয়েছে। এদিকে সোমবার রাতে ঘটনাস্থল থেকে পুলিশ মোজাফ্ফার হোসেন, শরিফ হোসেন ও শাহ আলম নামের ৩ জনকে আটক করেন। এরপর রাতভর পুলিশি অভিযান চালায়। আসামিরা এলাকা ছেড়ে পালিয়ে যাওয়ায় রাতের অভিযানে কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি বলে পুলিশ জানিয়েছে। দুই মামলারই তদন্ত কনর্মকর্তা থানার উপপরিদর্শক আতিকুজ্জামান এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন। অভিযোগের বিষয়ে কাউন্সিলর বাবুল আক্তার বলেন, দোকানে গিয়ে আমি শান্তভাবে কথা বলছিলাম। এসআই আবু বক্কর এসে আমাকে ধরে জোর করে থানায় নিতে চেয়েছে। তখন অন্য দোকানের লোকজন এসে আমাকে পুলিশের কাছ থেকে ছাড়িয়ে নেয়। পরে আমি চলে আসি। উল্লেখ্য, মণিরামপুর পৌর শহরের একখন্ড জমি বিরোধ জের ধরে বাজারের ক্ষুদ্র গার্মেন্টস ব্যবসায়ী মোজাফ্ফর হোসেনকে গত বছরের ২৫ জানুয়ারী রাতে অপহরণ করা হয়। সেই সময় ঘটনাটি নিয়ে তোড়পাড়ের সৃষ্টি হলেও মামলা করতে সাহস পায়নি মোজাফ্ফার হোসেনের পরিবার। তবে মোজাফ্ফার হোসেন অপহরণের কয়েকদিন পর অজ্ঞাত স্থান থেকে পরিবারের কাছে ফিরে আসে। মোজাফ্ফারকে অপহরনের দায় চাপানো হয় মোশাররফ হোসেনের উপর। মূলত: একখন্ড সরকারী জমির উপর ক্ষুদ্র ব্যববাসী মোজাফ্ফার হোসেন একটি কাঠের ঘর নির্মাণ করে প্রায় ৩০ বছর ব্যবসা করছিল সেখানে। একপর্যায়ে মোজাফ্ফার অপহরনের পর জায়গাটির উপর জোর পূর্বক পাকা ঘর নির্মাণ করে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলেন নিউ শাড়ি প্যালেসের মালিক প্রভাবশালী মোশাররফ হোসেন। ক্ষমতাসীন একটি পক্ষকে হাত করে মোশাররফ হোসেন এহেন কর্মকা- করে বলে অভিযোগ রয়েছে। এরই জের ধরে সোমবার রাতে অবশ্য মোজাফ্ফার হোসেন লোকজন নিয়ে সেই দোকানটি দখলে নিতে চেষ্টা করে। তবে এতে বাদসাদে থানা পুলিশের উপপরিদর্শক আবু বক্কার। রাতের এ ঘটনার পর পুলিশি গ্রেপ্তার অভিযানে ক্ষমতাসীন দলের অনেকেই গা ঢাকা দিয়েছে। আবার অনেক ব্যবসায়ী গ্রেপ্তার আতঙ্কে রয়েছেন। মণিরামপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এবিএম মেহেদী মাসুদ বলেন, এই ঘটনায় থানায় পৃথক দুটি মামলা হয়েছে। এ মামলায় তিনজনকে আটক করা হয়েছে।