ছোটবেলা থেকে অভাবের সাথে যুদ্ধ করে ইচ্ছাশক্তির কাছে দারিদ্রতা দমিয়ে রাখতে পারেনি মেধাবী বরিশালের উজিরপুরের রমজান খান সাব্বিরকে। তার মেধা দিয়ে ২০২৪ সালের মেডিকেলে ভর্তি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েও অর্থাঅভাবে তার মেডিকেলে ভর্তি অনিচ্ছিত হয়ে পড়েছে। টাকার অভাবে সাব্বির মেডিকেলে ভর্তির হতে না পাড়ায় তার চিকিৎসক হওয়ার স্বপ্ন পূর অন্ধকারে। তার ভর্তির জন্য প্রয়োজনীয় ২০ হাজার টাকা দরকার তা ফেরিওয়ালা দরিদ্রপিতার যোগারকরা সম্ভব নয়।
উজিরপুর উপজেলার শোলক ইউনিয়নের দামোদরকাঠি গ্রামের ফেরিওয়ালা মো.ফিরোজ খান ও মাতা গৃহীনি সাহিদা বেগমের ছেলে।
স্থানীয় সূত্র ও রমজান খান সাব্বির জানান, ২০২৪ সালের মেডিকেলে ভর্তি পরীক্ষায় ৬৭.৭৫ নম্বর পেয়ে পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজে ভর্তি সুযোগ পেয়েছি। কোন প্রাইভেট পড়ার মতো সুযোগ ছিলো না। মেডিকেলে ভর্তি পরীক্ষার কোন বইও কিনতে পারেননি। অনলাইন ও ইউটিউব থেকে টিউশন নিয়ে অংশ নিয়ে ভর্তি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হই। ছোট বোল থেকেই আমার স্বপ্নছিলো চিকিৎসক হওয়ার। আমার পিতা সব সময় বলছেন যত কষ্ট হোক স্বপ্ন পুরনে আমাকে সহায়তা করবেন। পিতার এ আশ্বাসে নিজের লক্ষ্য ঠিক করি চিকিৎসক হবো। উজিরপুর উপজেলার হস্তিশন্ড এইচএম ইনষ্টিউট বিদ্যালয় থেকে ২০২১ সালের এসএসসি পরীক্ষায় জিপিএ ৫ পেয়ে উত্তীর্ণ হয়েছি। ২০২৩ সালে এইচএসসি পরীক্ষায় সরকারী গৌরনদী কলেজ থেকে জিপিএ ৫ পেয়ে উত্তীর্ণ হই। ২০২৪ সালের মেডিকেলে ভর্তি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হই।
রমজান খান সাব্বির বলেন, ভবিষ্যতে আমার ইচ্ছে আমি একজন ডাক্তার হয়ে গ্রামের সাধারণ গরিব মানুষের পাসে থেকে সেবা করার। আমার দরিদ্রপিতার পক্ষে আমাকে ডাক্তারি পড়ানো সম্ভব না। আমি দেশে মানুষে কাছে দোয়া ও সহযেগিতা চাই। আমিযেনো মানুষের সহযেগিতা পেয়ে পড়াশুনা করে ডাক্তার হয়ে মানুষের সেবা করতে পারি।
সাব্বিরের বাবা ফিরোজ খান বলেন, আল্লাহর রহমতে আমার ছেলে সাব্বির পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজে ভর্তির সুযোগ পেয়েছে। আমি গ্রামে গ্রামে গামছা ফেরি করে আমার পরিবারে খরচ চালিয়ে আমার এক ছেলে ও এক মেয়ের স্কুল-কলেজের পড়াশুনার খরচ চালাতে হয়। ছেলে কলেজে পড়তো আর মেয়ে উর্মী খানম হস্তিশন্ড এইচএম ইনষ্টিউট বিদ্যালয় দশম শ্রেণীতে পড়াশুনা করে। এখন আমার পক্ষে আমার ছেলেকে মেডিকেলে ভর্তি করবো আর পড়ালেখার খরচ বহন করা আমার পক্ষে অসম্ভব হয়ে পড়েছে। এখন ভাবছি কোন জায়গা থেকে ঋণকরে ছেলেটাকে ভর্তি করাতে পারিনাকি। অনেকেরে কাছে ঋণর টাকার জন্যগিয়ে কারওকাছে পাইনাই। এখন আমার ছেলের ডাক্তার হবার স্বপ্ন পুনণ হবেনা। স্বপ্ন অন্ধকারে থেকে যাবে।
সাব্বিরের মা সাহিদা বেগম জানান, স্বামী একজন ফেরিওয়ালা। সে গ্রামে গামছা বিক্রি করেন। আমাদের সেই আয়দিয়ে সংসারচলে। এখন টাকা নাই কি ভাবে ছেলেকে মেডিকেলে ভর্তি করাবো সেই চিন্তায় আছি।
হস্তিশন্ড এইচএম ইনষ্টিউট বিদ্যালয় প্রধান শিক্ষক মো.নোয়ার হোসেন বলেন, রমজান খান সাব্বির আমাদের বিদ্যালয়ের সাবেকছাত্র। সে মেধাবী তার পরিবার দরিদ্র। তার ইচ্ছে ডাক্তারহবার এখন তার পরিবারের পক্ষে দুঃসাধ্য হয়ে পড়েছে মেডিকেলে পড়াশুনাকরানো।
উজিরপুর উপজেলার শোলক ইউনিয়ন পরিষদের স্থানীয় ওয়ার্ড সদস্য মো.শাহজাহান বেপারী বলেন, অতিদরিদ্র পরিবারে রমজান খান সাব্বির একজন মেধাবী ছাত্র। যেতন গোবরে পদ¥ফুল। সে লেখাপড়া করে ডাক্তার হতে পালে দেশের মানুষের কল্যাণেআসবে। এই পরিবারে ঠিকমতো তিন বেলা খাবার খেতে পারে না। তার ভিতরে কষ্ট করে রমজান খান সাব্বির লেখা পড়ার হাল ছাড়ে নাই। আমারা তারজন্য দোয়া কারি সে যেনো ডাক্তার হতেপারে।