নোয়াখালীর সেনবাগ উপজেলার অজুনতলা ইউপির ইদিলপুর গ্রামে ঘরে ঢুকে সাবেক স্বামী কর্তৃক স্ত্রী, কন্যা ও শাশুড়িকে কুপিয়ে হত্যার চেষ্টার মামলার প্রধান অভিযুক্ত আমির হোসনে (৫০)কে গ্রেপ্তার করেছ সেনবাগ থানা পুলিশ। বুধবার বিকেলে তথ্য-প্রযুক্তির সহায়তায় মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই মোঃ ওমর ফারুক মিয়া ও এএসআই মোঃ আশরাফুল ইসলাম দিপুর নেতৃত্বে সঙ্গীয় পুলিশ ফোর্স চট্টগ্রামের বাকলিয়া থানাধীন চাক্তাই এলাকার হোটেল আল-সিরাজের সামনে থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে। এ সময় আসামীর দেওয়ার তথ্যের ভিত্তিতে ওই হোটেলের ২য় তলায় রক্ষিত অসামীর ব্যবহৃত ব্যাগের ভিতর তল্লাশী করে কাপড় মোড়ানো হামলায় ব্যবহৃত ধারালো দা ও ছুরি উদ্ধার করা হয়। এরপর রাতেই তাকে সেনবাগ থানায় নিয়ে আসে পুলিশ। বৃহস্পতিবার (২২ফেব্রুয়ারি) সকালে গ্রেপ্ত্রাকৃত আসামি আমির হোসনকে নোয়াখালী বিচারিক আদালতে প্রেরণ করা হয়। এরআগে ওই মামলার ২নং আসামি ভিকটিমের ভাসুর বেলালকে গ্রেপ্তার করে আদালতে প্রেরণ করে সেনবাগ থানা পুলিশ। গ্রেপ্তার আমির হোসেন (৫০) ও বেলাল (৫৫) পাশ্ববর্তী সোনাইমুড়ী উপজেলার অম্বরনগর গ্রামের এতিম আলী জমাদার বাড়ির সফি উল্লাহ ছেলে। ওই হামলার ঘটনাটি ঘটেছে শুক্রবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) ভোর সাড়ে ৫টার দিকে উপজেলার অর্জুনতলা ইউনিয়নের ২নম্বর ওয়ার্ডের ইদিলপুর গ্রামের ফাতেমার নতুন বাড়িতে ঘটনায় গুরুত্বর আহত দু'জনকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। ভুক্তভোগীর অভিযোগ সুত্রে জানাগেছে, বিগত ২৬ বছর আগে পারিবারিক ভাবে সোনাইমুড়ীর উপজেলার অম্বরনগর গ্রামের আমির হোসেনর সাথে সেনবাগের ইদিলপুর গ্রামের ফাতেমা বেগমের বিয়ে হয়। কয়েক বছর পর তাদের সংসারে কলহ দেখ দেয়। তিন বছর আগে তাদের মধ্যে ছাড়াছাড়ি হয়ে যায়। এরপর ফাতেমা দুই ছেলে ও এক মেয়েকে নিয়ে বাবার বাড়ির পাশে ইদিলপুর গ্রামে নতুন বাড়ি করে বসবাস শুরু করে। জানাগেছে, শুক্রবার ১৬ ফেব্রুয়ারী ভোর ৫টারদিকে আমির হোসেন তার সহযোগীকে নিয়ে সাবেক স্ত্রী ফাতেমার মুরগীর ঘর ও বসতঘরের ভেড়ার টিন এলো পাথাড়ী কুপিয়ে তছনছ শুরু করে। এ সময় টিনের শব্দের আওয়াজ শুনে ফাতেমা ও তার মেয়ে দরজা খোলা মাত্র আমির হোসেন ধারালো দা ও ছোরা নিয়ে নিয়ে আকস্মিক তাদের ঘরে ঢুকে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে সাবেক স্ত্রী ফাতেমা, শাশুড়ি মাফিয়া বেগম ও তার মেয়ে রাবেয়াকে হত্যার চেষ্টা চেষ্টা চালায়। এ সময় তাদের চিৎকারে প্রতিবেশীরা এগিয়ে এলে সে পালিয়ে যায়। পরে স্থানীয় লোকজন তাদের উদ্ধার করে প্রথমে ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে মুমুর্ষ অবস্থায় মাফিয়া বেগম ও তার মেয়ে ফাতেমা বেগমকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। তাদের দু'জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। হামলা,ভাংচুর ও হত্যার চেষ্টার ঘটনায় শুক্রবার রাতে ফাতেমা বেগম ভাই আমিরুল ইসলাম বাদি হয়ে আমির হোসেনকে ১নম্বর ও তার বড়ভাই বেলালকে আসামি করে দুই জনের মামলা দায়ের করেন। আহতরা হলেন,অর্জুনতলা ইউনিয়নের ২নম্বর ওয়ার্ডের ইদিলপুর গ্রামের ছমদ আলী হাজ¦ী বাড়ির লোকমান হোসেনের স্ত্রী মাফিয়া বেগম (৬০) তার মেয়ে ফাতেমা বেগম (৩৮) ও নাতনী রাবেয়া আক্তার (১৮)। এ বিষয়ে জানতে চাইলে সেনবাগ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোঃ নাজিম উদ্দিন ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন-তারা অভিযান চালিয়ে মামলার ২ আসামীকে গ্রেপ্তার করেছেন। গ্রেপ্তারকৃতদের নোয়াখালী বিচারিক আদালতের প্রেরন করা হয়েছে।