রাজশাহীর তানোরে কসাই জিয়ারুল ইসলাম হত্যাকান্ডে তালন্দ ইউনিয়ন আলীগের সাধারণ সম্পাদক ও অত্র ইউপি মেম্বার আবুল হাসানকে প্রধান আসামি করে ১৫ জনের বিরুদ্ধে তানোর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার নিহত জিয়ারুল ইসলামের বড়ভাই রবিউল ইসলাম বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন তিনি। এরআগে জিয়ারুলকে কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় জড়িত সন্দেহে হাসান মেম্বারের ছোট স্ত্রী সুমি, প্রতিবেশি ফরহাদ ও আলাউদ্দিন মাস্টারের পুত্র সোহানকে আটক করা হয়। পরে ঘটনার সঙ্গে জড়িত সন্দেহে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই নজরুল ইসলাম বৃহস্পতিবার রাতে আরেকজনকে আটক করে। কিন্তু তার নাম পরিচয় পাওয়া যায়নি। নিহত ব্যক্তির নাম জিয়ারুল ইসলাম (৩৫)। তিনি মেডিকেল মোড়ে দুলালের কসাইখানায় গোস্ত কাটা কাজ করতেন। তার পিতার নাম মৃত মহর আলী। উপজেলার তালন্দ ইউপির ৩ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা। তিনি ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের একনিষ্ঠকর্মী বলে নিশ্চিত করেছেন এলাকাবাসী। আটক ব্যক্তিদের পুলিশ স্কটের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট বিজ্ঞ আদালতে পাঠানো হয়। কিন্তু ওই মামলার অন্য আসামীদের গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ। অপরদিকে, নিহতের লাশ ময়না তদন্ত শেষে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হলে বুধবার রাতে জানাজা শেষে পারিবারিক গোরস্থানে দাফন সম্পূর্ণ হয়। ঘটনার পর থেকেই হাসান মেম্বারসহ মামলার অন্য আসামিরা গাঁ ঢাকা দিয়েছেন। এমন লোমহর্ষক হত্যার ঘটনায় এলাকায় আতঙ্ক ও থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। থানাপুলিশ ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, মহান একুশে ফেব্রুয়ারি মঙ্গলবার রাতে উপজেলা পরিষদ চত্বরে অবস্থিত শহীদ মিনারে ফুল দিয়ে মটরসাইকেল যোগে বাড়ি ফেরার পথে জিয়ারুলকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। পরে বুধবার ভোরে নিহত জিয়ারুলের ক্ষত-বিক্ষত লাশ ও মটরসাইকেল তার নিজ গ্রামের এক পাঁকা রাস্তার ধারে পড়ে থাকতে দেখে নিহতের পরিবার এবং পুলিশকে খবর দেয়া হয়। খবর পেয়ে তানোর থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে নিহতের লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করে। এমন হত্যাকান্ডে পুলিশের অনুসন্ধানে এক নারীসহ ৩ জনকে আটক করা হয়। আটককৃত ব্যক্তিরা হলেন, হাসান মেম্বারের দ্বিতীয় স্ত্রী বিলশহর গ্রামের তারাবানু ওরফে সুমি (৩২), লালপুর গ্রামের লথুর পুত্র ফরহাদ আলী (৩৪) ও নারায়নপুর গ্রামের আলাউদ্দিন মাস্টারের পুত্র সোহান আলী (৩০)। এই হত্যাকান্ডের সঠিক তদন্তে ঘটনাস্থলে পিবিআই ক্রাইম সিনের টিম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে নমুনা সংগ্রহ করেছেন। সূত্র জানায়, দীর্ঘদিন ধরে হাসান মেম্বারের সাথে বর্তমান তালন্দ ইউপি চেয়ারম্যান নাজিমুদ্দিন বাবুর অনুসারী নিহত জিয়ারুল ইসলামের মধ্যে ডিপ অপারেটর নিয়ে বিরোধের সূত্রপাতে এই হত্যাকান্ড। আবার অন্য সূত্র বলছে, হাসান মেম্বারের দ্বিতীয় স্ত্রী সুমি খাতুনের সাথে নিহত কসাই জিয়ারুলের পরকীয়ার জেরে এই হত্যাকান্ড। ফলে বিষয়টি নিয়ে ধুয়াসায় পুলিশ বেকায়দায় পড়েছে। তবে, এমন লোমহর্ষক হত্যাকার্ন্ডের রহস্য উদঘাটনের জন্য এক আসামীর বিজ্ঞ আদালতে ওয়ান সিক্সটি ফোরে জবাববন্দি পাওয়া গেছে। সব তথ্য বেরিয়ে আসলে পুলিশ গণমাধ্যম কর্মীদের সব জানাবে বলে জানান, গোদাগাড়ী সার্কেল এএসপি সোহেল রানা। এ ব্যাপারে তানোর থানার ওসির দায়িত্বরত এসআই আনোয়ার হোসেন বলেন, জিয়ারুল ইসলাম হত্যার ঘটনায় তার বড়ভাই রবিউল ইসলাম বাদী হয়ে মামলা করেছেন। ওই মামলার সূত্রধরে ঘটনার সঙ্গে জড়িত সন্দেহে ১৫ জনকে আটক করা হয়েছে। ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার সাথে কথা বলে পরবর্তীতে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।