বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সহসভাপতি ও সুপ্রিম কোর্ট বার এসোসিয়েশনের সাবেক সভাপতি অ্যাডভোকেট জয়নাল আবেদীন বলেছেন, গত ৭ জানুয়ারির দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন দেশের মানুষ ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করেছেন। এ নির্বাচনে আওয়ামীলীগ জয়লাভ করেনি, দেশের গণতন্ত্রা মানুষের জয় হয়েছে। আওয়ামীলীগের যা কিছু অর্জন ছিলো, তার সবটুকু-ই ম্লান হয়ে গেছে। মানুষের অংশগ্রহণ ছাড়া নির্বাচন হয়না। তারা নিজেরাই তাদের কবর রচনা করেছে। তিন ধরনের সরকার হলো- গণতান্ত্রিক, স্বৈরাচারী ও ফ্যাসিস্ট সরকার। স্বৈরাচারী সরকার জনগনের আন্দোলনের মাধ্যমে পতন হয়। আর ফ্যাসিস্ট সরকার তাদের পতনের জন্য তারা নিজেরাই দ্বায়ী। স্বৈরাচারী বা ফ্যাসিস্ট সরকার বেশি দিন টিকে থাকতে পারে না। তাদের পতন বেশীদিন বাকী নেই। এই নির্বাচনে জনগনের বিজয় হয়েছে। কেউ চিরদিন ক্ষমতায় থাকতে পারেনি। এটা কোন পার্লামেন্ট হতে পারেনা। মৃত সফি উদ্দিন মাষ্টারের পরিবারকে শান্তনা দেয়ার ভাষা আমাদের নেই। আগামী দিনে দলকে ক্ষমতায় আনতে পারলেই তাঁর আত্মা শান্তি পাবে। এর জন্য সবাইকে ত্যাগ স্বীকার করতে হবে। তাহলেই বিএনপি তথা জনগণের বিজয় সুনিশ্চিত হবে। তিনি গতকাল ২৬ ফেব্রুয়ারি সোমবার দুপুরে কারা হেফাজতে মৃত গাজীপুরের কাপাসিয়া উপজেলা বিএনপির প্রবীণ নেতা শফি উদ্দিন মাস্টারের কবর জিয়ারত এবং তাঁর পরিবারের সাথে দেখা করতে এসে উপরোক্ত কথা গুলো বলেন। প্রাক্তন শিক্ষক শফি উদ্দিন (৭২) কাপাসিয়া উপজেলার দুর্গাপুর ইউনিয়নের রাওনাট পূর্বপাড়া ডোয়াইপাখুরি ২ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি ছিলেন। থানা পুলিশ গত বছরের ২৬ অক্টোবর রাতে তাকে নিজ বাড়ি থেকে আটক করে। পরে তাকে ২০২২ সালের ১৬ নভেম্বরের একটি বিস্ফোরক মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে নিলে কারাগারে পাঠানো হয়। পুলিশ ওই সময় তার ১০ দিনের রিমান্ড চায়। অসুস্থ ও বয়োবৃদ্ধ শফি উদ্দিনকে আদালত তাকে কারাগারে পাঠায়। শফি উদ্দিন শ্বাসকষ্ট ও হৃদরোগ জনিত কারণে কারা হেফাজতে গাজীপুর সদর ও ঢাকা মেডিক্যালে কয়েক দফা চিকিৎসাধীন ছিলেন। সবশেষ ১০ দিন আগে অসুস্থ হয়ে পড়লে কেরানীগঞ্জ কারাগার থেকে তাকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আনলে গত বছরের ২৫ ডিসেম্বর তার মৃত্যু হয়। বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ শফি উদ্দিন মাস্টারের কবর জিয়ারত করে তাঁর রুহের মাগফেরাত কামনা করেন। তার রেখে যাওয়া স্ত্রী, এক পুত্র ও দুই কন্যা সহ স্বজনদের সাথে কুশল বিনিময় করেন। এসময় দলের পক্ষ থেকে তাঁর পরিবারের জন্য কিছু উপহার প্রদান করেন। বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সহসভাপতি অ্যাড. জয়নাল আবেদীনের সাথে অন্যান্যের মাঝে উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক ডাঃ রফিকুল ইসলাম বাচ্চু, গাজীপুর জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ও কাপাসিয়া উপজেলা বিএনপির সভাপতি শাহ্ রিয়াজুল হান্নান রিয়াজ, কেন্দ্রীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক (ঢাকা বিভাগ) কাজী ছাইয়্যেদুল আলম বাবুল, নির্বাহী সদস্য ওমর ফারুক সাফিন, জেলা বিএনপির সিনিয়র সহ-সভাপতি ডাঃ সফিকুল ইসলাম, গাজীপুর জেলা মহিলা দলের সভাপতি জান্নাতুল ফেরদৌসী, জেলা যুগ্ম সাধারণ আবু বকর সিদ্দিক, জেলা যুবদলের সদস্য সচিব অ্যাড রফিকুল ইসলাম, জেলা ছাত্রদলের সভাপতি ইমরান হোসেন শিশির, সম্পাদক জাফর ইকবাল জনি, জেলা যুবদলের সাবেক সম্পাদক আব্দুর রাজ্জাক, জেলা কৃষক দলের সদস্য সচিব ফকির ইস্কান্দার আলম জানু প্রমূখ। বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দদের আগমনের খবরে মৃত শফি উদ্দিন মাস্টারের বাড়িতে দলের বিভিন্ন পর্যায়ের বিপুল সংখ্যক নেতা-কর্মী ও সমর্থক সমবেত হন। পরে তাঁর রুহের মাগফেরাত কামনা করে দেয়া করা হয়।