নাঈমের সাথে ফতেমার প্রেমের সম্পর্কের কথা বলে দেয়ায় দুই শিক্ষকের হাতে বেদম প্রহরের শিকার হয়ে দুইজন ছাত্রকে বাধ্যতামূলক এবং স্বেচ্ছায় ৪ জন ছাত্র টিসি (স্কুল পরিবর্তন) নিয়ে অন্যত্র চলে গিয়েছে। এ ঘটনা প্রকাশ হলে কর্তৃপক্ষ ছাত্রদের বিরুদ্ধে আরও কঠোর ব্যবস্থা নেবেন বলে অভিভাবকেরা ভয়ে আছেন।
এমনই ঘটনা ঘটেছে যশোরের ঝিকরগাছা উপজেলার বাঁকড়া ইউনিয়নের এসএমপিকে হাই স্কুলে। অভিযোগ উঠেছে স্কুলের সহকারী শিক্ষক আকবর আলী এবং আব্দুল গণির বিরুদ্ধে। টিসি (স্কুল পরিবর্তন) নিয়ে চলে গিয়েছে অষ্টম শ্রেণীর আল-আমিন, আলী হোসেন, আবির হোসেন, হাবিবুর রহমান হাবিব এবং নবম শ্রেণীর বিপ্লব হোসেন ও শুভ।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে নতুন স্কুলে ভর্তি হওয়া ছাত্র সবুজ (ছদ্মনাম) জানাই, সম্ভবত ১৯ ফেব্রুয়ারি অষ্টম শ্রেণীর ছাত্রী ফাতেমা খাতুনের সাথে দশম শ্রেণীর ছাত্র নাঈম হোসেনের প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠার প্রমাণ জানতে চান ফাতেমার মা সুফিয়া বেগম। ৬ ছাত্র সুফিয়া বেগমের বাড়িতে গিয়ে প্রেমের সম্পর্কের প্রমাণ সহ জানিয়ে আসে। এরপর সুফিয়া বেগম এবং নাঈম হোসেন স্কুলে গিয়ে তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ জানায়।
অভিযোগের ভিত্তিতে ২৫ ফেব্রুয়ারি সকালে এসএমপিকে স্কুলের সহকারী শিক্ষক আকবর আলী এবং আব্দুল গনি অষ্টম শ্রেণীর ছাত্র আল আমিন, আলী হোসেন, হাবিব, আবির এবং নবম শ্রেণীর ছাত্র বিপ্লব হোসেন, শুভকে অফিসে ডেকে নিয়ে আসেন। এরপর তাদেরকে বেদম প্রহার করেন। এতে তারা অসুস্থ হয়েও পড়ে। ওই স্কুলের অপর শিক্ষক বাবলুর রহমান তার সন্তান অষ্টম শ্রেণীর ছাত্র তাসিমকেও প্রহার করেন। প্রহর শেষে তাদেরকে টিসি দেয়া হয়।
এ ব্যাপারে সবুজের (ছদ্মনাম) মা সালেহা (ছদ্মনাম) বুধবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে জানান - আমরা অভিভাবকেরা স্কুলে গিয়ে সন্তানদের গরু পিটুনির কারণ জানতে চাইলে স্কুলের হুজুর স্যার আব্দুল গনি ধমকের সুরে জানান - তোমাদের ছেলেকে পুলিশে দেওয়া হয়নি সেটাই তোমাদের কপাল ভালো। প্রধান শিক্ষক ও একই সুরে সুর মিলিয়েছেন। ছাত্রদের অভিভাবকগণ জানান- পেটানোর পর টিসি দেয়া চরম অন্যায় হয়েছে। এটা হল একই ব্যক্তির দুইবার সাজা দেয়ার মত। আমরা এর বিচার চাই।
এই স্কুলে দীর্ঘদিন কমিটি না থাকায় স্কুলটির দুরবস্থা এখন চরমে উঠেছে। শিক্ষাব্যবস্থা এবং শৃঙ্খলা ভেঙে পড়েছে।
এ ব্যাপারে এস এম পিকে হাই স্কুলের প্রধান শিক্ষক মশিউর রহমানের কাছে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন - এ ঘটনা নিয়ে ঝামেলা করছেন কেন? আমি এখন ব্যস্ত আছি, পরে কথা হবে।
ঝিকরগাছা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার এম কামরুজ্জামান জাহাঙ্গীর জানান - এমন ঘটনা আমি এই প্রথম শুনলাম। এ ব্যাপারে তদন্ত করে দেখা হবে।
ঝিকরগাছা উপজেলা নির্বাহী অফিসার বিতান কুমার মন্ডল জানান - উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসারকে বিষয়টি তদন্তের জন্য বলবো।