শেরপুর জেলার নকলা উপজেলার চন্দ্রকোনা ইউনিয়নের বাছুরআলগা গ্রামে নিজ বাবা-মায়ের কবরের পাশে চিরনিদ্রায় শায়িত হলেন কবি তালাত মাহমুদ (৬৭)। তিনি ছিলেন কবিসংঘ বাংলাদেশ ও জাতীয় সাহিত্য সংগঠন ‘লেকশি’র সভাপতি, ১৯৮০ সালে সাড়া জাগানো “জিলবাংলা সাহিত্য পুরস্কার” প্রাপ্ত আলোড়ন সৃষ্টিকারী কবি, প্রথিতযশা সাংবাদিক ও কলামিস্ট। এর আগে সোমবার (৪ মার্চ) বেলা ১১টায় শেরপুর শহরের তেরাবাজার জামিয়া সিদ্দিকিয়া মাদ্রাসা মাঠে এবং দুপুর আড়াইটায় নকলা উপজেলার চন্দ্রকোনা ইউনিয়নের বাছুরআলগা গ্রামে মরহুমের বাড়িতে দ্বিতীয় নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। রোববার (৩ মার্চ) সন্ধ্যায় তিনি শেরপুর জেলা সদর হাসপাতালে ইন্তেকাল করেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। মৃত্যুকালে তিনি স্ত্রী, এক ছেলে ও এক মেয়েসহ অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন। তিনি দীর্ঘদিন ধরে ডায়াবেটিস হৃদরোগ ও উচ্চ রক্তচাপসহ নানা রোগে ভুগছিলেন। তার ছেলে তানসেন মাহমুদ ইলহাম জানান, রোববার সন্ধ্যার দিকে তালাত মাহমুদ বুকে প্রচণ্ড ব্যথা অনুভব করেন এবং অচেতন হয়ে পড়েন। পরে তাকে জেলা সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। এদিকে সিনিয়র সাংবাদিক তালাত মাহমুদের মৃত্যুর খবর শুনে হাসপাতালে ছুটে যান শেরপুরের সাংবাদিকরা। তিনি ছিলেন দৈনিক ঢাকা রিপোর্ট-এর সিনিয়র সহকারী সম্পাদক ও শেরপুর প্রেস ক্লাবের সিনিয়র সদস্য। কবি-সাংবাদিক তালাত মাহমুদের মৃত্যুতে শেরপুরর সাংবাদিকবৃন্দ ও বিভিন্ন সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ গভীর শোক প্রকাশ করেছেন। তার মৃত্যুতে শেরপুরের সাহিত্য ও সাংবাদিকতা জগতে এক শূন্যতার সৃষ্টি হলো। তালাত মাহমুদ ছিলেন পেশায় একজন সাংবাদিক। ১৯৮১ সালে দৈনিক দেশবাংলার সাব এডিটর হিসেবে তিনি কর্মজীবনে প্রবেশ করেন। ১৯৮৩ সাল থেকে ১৯৯০ সাল পর্যন্ত তিনি অধুনালুপ্ত সাপ্তাহিক জনকণ্ঠ এর প্রধান সহকারী সম্পাদক ও সাহিত্য সম্পাদক ছিলেন। এরপর তিনি সাপ্তাহিক পূর্ব কথার সম্পাদক মন্ডলী সভাপতি ও প্রধান সম্পাদক ছিলেন দীর্ঘ সাত বছর। গল্প, প্রবন্ধ, কবিতা ও গান রচনায় তিনি ছিলেন সিদ্ধহস্ত। কবি তালাত মাহমুদের জন্ম ১৯৫৭ সালে শেরপুর জেলার নকলা উপজেলার চন্দ্রকোনার ইউনিয়নের বাছুরআলগা গ্রামে এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে। বাবা মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান ও মা বেগম হাসনা বানু। ছয় ভাইবোনের মধ্যে তিনি পঞ্চম। তার প্রকাশিত উল্লেখযোগ্য বই হলো লোকহীন লোকারণ্য, স্বর্গের দ্বারে মর্তের চিঠি ও গীতিলতিকা।