শীতের আমেজ এখনও শেষ হয়নি। এরই মধ্যে দিঘলিয়ায় আম গাছসহ আমের বাগানগুলোতে আমের মুকুলের দেখা মিলছে। তবে আমগাছে মুকুল গজিয়েছে কম। ফলন ভাল হবে না বলে জানিয়েছেন আম চাষিরা। এদিকে বাড়িতে বাড়িতে ও এলাকার আম বাগানগুলোতে মুকুলের মৌ মৌ গন্ধ সবাইকে জানান দিচ্ছে মধু মাসের আগমন বার্তা। ইতোমধ্যে আম বাগান চাষিরা তাদের গাছে মুকুল ধারণের জন্য ভিটামিন হরমনসহ বাগান পরিচর্যার কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন। আম বাগান চাষিদের কাছে এই সময়টা সব চাইতে গুরুত্বপূর্ণ সময়। কারণ এই সময়টা তাদের আম বাগান কেন্দ্রীক স্বপ্ন পূরণ হওয়ার মৌসুম। এই সময়টার আগমন মানেই তাদের আর্থিকভাবে লাভবান হওয়া তথা স্বাবলম্বী হওয়া। সরেজমিনে উপজেলার বিভিন্ন আমবাগান ও বাসতবাড়িতে যাদের আমের গাছ রয়েছে তাদের প্রত্যেকের মধ্যেই এই ব্যস্ততার চিত্রই চোখে পড়ে। দিঘলিয়া উপজেলার সদর ইউনিয়নের দেয়াড়া গ্রামের আম চাষি এ্যাড. সাহাদাৎ হোসেন জানান, আমার ১০ একর জমিতে হাড়িভাঙ্গা, আম্রুপালী, হিমসাগরসহ নানা জাতের আম বাগান রয়েছে। আম গাছে গাছে এরই মধ্যে মুকুল এসেছে। এ বছর মুকুলের ভাগ কম। অনেক গাছে মুকুল আসেনি। তবে এই সময়টি আমাদের জন্য খুবই গুরুরত্বপূর্ণ। কারণ এই সময়ে গাছের পরিচর্যার উপরই নির্ভর করবে গাছে ফলন আসা ও ফল দাঁড়ানোর ব্যাপারটা। এই সময়টাতে বাগানের নিবিড় পরিচর্যা জরুরি। তিনি জানান, আমার এই আম চাষ দীর্ঘদিন পর্যন্ত চলে আসছে। আমি আম চাষে একজন সফল চাষি। আমি ও আমার পরিবার প্রতিবছর ১০ লাখ টাকার আম বিক্রি করে থাকি। আমি ভালো আম চাষ করে অধিক মুনাফা অর্জনের জন্য স্বর্ণপদকও পেয়েছি। কিন্তু এবার আমের ফলন ভালো হবে না। কারণ হিসেবে তিনি এ প্রতিবেদককে জানান, এবার শেষ মৌসুমে যে বৃষ্টি হয়েছে এ বৃষ্টির কারণেই আম গাছে কাঙ্খিত মুকুলের দেখা মেলেনি। তবে আগামি বছর এসময় আবহাওয়া ভালো থাকলে আমে অধিক ফলন হবে। সেই লক্ষে বাগানের পরিচর্যা করে চলেছি। এ উপজেলার গোয়ালপাড়া গ্রামের আম বাগান ও সবুজ নার্সারীর মালিক খায়রুল আলম সবুজ জানান, তার পিতা মৃত মোঃ শওকাত হোসেন একজন সফল নার্সারী মালিক ও আম চাষি ছিলেন। তিনি তার পিতার কর্মকান্ডকে ধরে রেখে সামনে অগ্রসর হচ্ছেন। সে তার পিতার ব্যবসার পাশাপাশি তার নার্সারীর অগ্রভাগে কপি হাউজ করেছেন। সেখানে তিনি বিভিন্ন খাবারও তৈরি করেন। ভেতরে বিনোদন মূলক ব্যবস্থাও আছে। প্রতিদিন অনেক পর্যটকের আগমন ঘটে তার এ কপি হাউজে। ১২ বিঘা জমিতে রয়েছে আমার আমের বাগান। ছোট বড় এ সকল আম বাগানের আম গাছে মুকুল এসেছে। মুকুল রক্ষায় এই সময়টাতে ব্যাপক পরিচর্যা করতে হচ্ছে। তা না হলে আমের মুকুল নষ্ট হয়ে যাবে। তাই বাগানে কৃষি শ্রমিক নিয়ে কাজ করতে হচ্ছে। এবার প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে অনেক গাছে মুকুল আসেনি। যে সকল গাছে মুকুল এসেছে পরিমাণে খুবই কম। এ বছর আমের ফলন খুব কম হবে। দিঘলিয়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোঃ কিশোর আহমেদ জানান, দিঘলিয়ায় ছোট বড় অনেক গুলো আম বাগান আছে। আম চাষে দিঘলিয়ার দেশ বিদেশে সুনাম রয়েছে। ইতোমধ্যে কেউ কেউ পদকও পেয়েছেন। এ উপজেলায় ৪০ হেক্টর জমিতে আমের বাগান গড়ে উঠেছে। ইতোমধ্যে আম গাছে মুকুল এসেছে। কিছুদিনের মধ্যে গাছে গাছে আমের গুটি দেখা যাবে। এবার মুকুলের পরিমাণ খুবই কম। কয়েকদিন পর কম। এবার শেষ মৌসুমে বৃষ্টির কারণে আম গাছে মুকুল কম এসেছে। অনেক গাছে মুকুলের দেখাই মেলেনি। ফলে আমের ফলন আশানুরূপ হবে না। আগামী বছর আবহাওয়া অনুকূল হলে ফলন অনেক ভালো হবে বলে তিনি এ প্রতিবেদককে জানান।