কুড়িগ্রামের চিলামরীতে ব্রহ্মপুত্র নদের ডানতীর ঘেঁসে চর কেটে অবাধে চলছে বালু উত্তোলন। ফলে ব্রহ্মপুত্র নদের ডানতীর রক্ষা প্রকল্প মারাত্বক হুমকির মুখে পড়েছে। উপজেলার থানাহাট ইউনিয়নের রাজারভিটা,পুটিমারী কাজলডাঙ্গা, রমনা ইউনিয়নের গুড়াতি পাড়া, ব্যাপারী পাড়া, নন্দীর মোর, রানীগঞ্জ ইউনিয়নের কাঁচকোল ও ফকিরের হাট এলাকার প্রভাবশালী বালু ব্যবসায়ীরা কাউকে তোয়াক্কা না করে অবৈধ ভাবে চর কেটে বালু উত্তোলন করে বিক্রি করছে। এসব এলাকায় গভীর গর্তের সৃষ্টি হওয়ায় ডানতীর রক্ষা প্রকল্পের পিচিং দেবে গিয়ে কিংবা ধসে গিয়ে সরকারের শত শত কোটি টাকা ভেস্তে যাওয়ার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। এতে করে ভাঙ্গনের হুমকির মুখে পড়েছে রাজারভিটা ফাজিল মাদ্রাসা, মহিলা আলিম মাদ্রাসা, রাজারভিটা সরকারী প্রথমিক বিদ্যালয়, আম্বার আলী সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, পুটিমারী কাজলডাঙ্গা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, জোরগাছ বাজার, রমনা বাজার, নব নির্মিত পাউবো বাঁধ, মসজিদ,পাকা রাস্তা, জনবসতি ও ফসলি জমি। গতকাল শুক্রবার সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, উপজেলার থানাহাট ইউনিয়নের রাজারভিটা এলাকার বালু ব্যবসায়ী আসাদুজামান, মমিনুল ইসলাম, বাদশা মিয়া, স্বপ্নিল ও সাবেক সৈনিক সোহেল মিয়া ব্রহ্মপুত্র নদের তীর ঘেঁসে চর কেটে বালু বিক্রি করছে। রমনা ইউনিয়নের ব্যাপারী পাড়া এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, হারুন মিয়া, গোলাম মোস্তফা ও হিটলার ড্রেজার দিয়ে বালু উত্তোলন করে স্তুপ করে সেখান থেকে বালু বিক্রি করছে। নন্দির মোড় এলাকার হাফিজুর রহমান,ফারুক মিয়া ও হামিদুল ইসলাম, পুটিমারী কাজলডাঙ্গা এলাকার মাছুদ মিয়া ও রানীগঞ্জ ফকিরেরহাট এলাকার বিল্লাল হোসেন ও মিন্টু মিয়া একই ভাবে বালু উত্তোলন করে বিক্রি করছে। বাড়ি ভিটা উচু করার জন্য প্রতিট্রলি বালু ২০০ টাকা এবং নির্মান কাজের জন্য প্রতিট্রলি বালু ৮০০ টাকা এবং প্রতিডাম্পার গাড়ি বালু ৭,০০০ টাকা করে বিক্রি করছে। এভাবে প্রতিদিন শত শত গাড়ি বালু বিক্রি করা হচ্ছে। রাজারভিটা এলাকায় চর কেটে ট্রলিতে বালু উত্তোলনের ছবি উঠাতে দেখে এলাকাবাসী আব্দুল হামিদ, আজিজুল হক, মোঃ সুজা মিয়া সহ অনেকে এগিয়ে এসে সাংবাদিকদের বলেন, ব্রহ্মপুত্র নদের ডানতীর রক্ষা প্রকল্প ঘেঁসে চরটি নদের ভাঙ্গন প্রতিরক্ষা বাঁধ সহ গোটা এলাকা ব্রহ্মপুত্র নদের ভাঙ্গন থেকে রক্ষা করছে। কিন্তু বালু উত্তোলন করে গভীর গর্তের সৃষ্টি করায় যে কোন মহুর্তে বাঁধ সহ গোটাএলাকা নদী গর্ভে বিলিন হওয়ার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। এছাড়াও দিন-রাত বালু ভর্তি গাড়ি মাদ্রাসা সংলগ্ন রাস্তাদিয়া যাতায়াত করায় রাজারভিটা ইসলামিয়া ফাজিল মাদ্রাসায় অনুষ্ঠিত দাখিল পরীক্ষাথীদের কেন্দ্রে যাওয়া আসা মারাত্বক অসুবিধার সৃষ্টি হয়েছে। মাদ্রাসা কেন্দ্র সচিব অধ্যক্ষ মিনহাজুল হক জানান, নিষেধ করা সত্বেও বালু ভর্তি গাড়ি গুলোর অবাধে যাতায়াত বন্ধ করা যাচ্ছে না। উপজেলা নিবাহী অফিসার মিনহাজুল ইসলাম জানান, বালু উত্তোলন বন্ধ করতে আমাদের প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।