আধা কেজি গাঁজা উদ্ধারের ঘটনায় মূল মাদক ব্যবসায়ীকে আসামী না করে সৌদি প্রবাসগামী নিরহ যুবককে আসামী করে মামলা দায়ের করার অভিযোগ উঠেছে অভিযান পরিচালনাকারী জেলা ডিবি পুলিশ সদস্যদের বিরুদ্ধে। এঘটনায় এলাকায় তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। ঘঁনাটি জেলার আগৈলঝাড়া উপজেলার পয়সা গ্রামের। ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শীরা জনান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে বৃহস্পতিবার রাতে পয়সা গ্রামের মৃত আকরাম শেখের ছেলে হাকিম শেখের (৩০) বাড়িতে অভিযান চালায় ডিবি পুলিশ। অভিযানের সময় হাকিম শেখ সেখানে উপস্থিত থাকলেও কৌশলে পালিয়ে যেতে সক্ষম হয়। এসময় হাকিমের বসতঘর থেকে আধা কেজি গাঁজা উদ্ধার করে ডিবি পুলিশের সদস্যরা। তবে হাকিম শেখের বসতঘর থেকে গাঁজা উদ্ধার হলেও তাকে (হাকিম) আসামী না করে রহস্যজনক কারনে একই গ্রামের মাওলা ফকির নামের সৌদি প্রবাসগামী এক যুবককে আসামী করে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা দায়ের করে ডিবি পুলিশের সদস্যরা। ভুক্তভোগি মাওলা ফকির অভিযোগ করে বলেন, ঘটনার সময় তিনি আমবৌলা একটি কিন্টার গার্ডেনের অনুষ্ঠানে স্ত্রীসহ উপস্থিত ছিলেন। মাদক ব্যবসায়ী হাকিম শেখের সাথে তাদের বংশীয় পূর্ব বিরোধ রয়েছে। তিনি ও হাকিম শেখ একত্রে সৌদি আরব যওয়ার জন্য ভিসার আবেদন করেছিলেন। তার ভিসা আসলেও হাকিমের ভিসা আসেনি। এজন্য আমার (মাওলা) বিদেশ যাওয়ার প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করতেই হাকিম শেখের দুই চাচা ডিবি পুলিশকে ম্যানেজ করে হাকিমের পরিবর্তে আমাকে আসামী করে মামলা দায়ের করেছে। তিনি ঘটনার তদন্ত করে দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহনের দাবী জানান। ইউপি সদস্য হেমায়েত উদ্দিন জানান, হাকিম শেখ স্থানীয়ভাবে মাদক ব্যবসায়ি হিসেবেই পরিচিত। ডিবি পুলিশ হাকিমের উপস্থিতিতে তার ঘরে অভিযান করেছে। তবে হাকিমের দুই চাচা ক্ষমতাসীন দলের নেতা হওয়ায় তাদের প্রভাবে প্রবাসগামী মাওলাকে আসামী বানিয়ে মামলা দিয়েছে। আমরা এঘটনার সুষ্ঠ তদন্ত করে দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহনের দাবী জানাই। অভিযানের সময় হাকিম শেখের উপস্থিতি ও তার বাড়িতে অভিযানের কথা অস্বীকার করে মামলার বাদী ডিবি’র এসআই হেলাল উদ্দিন সরদার বলেন, বাস কাউন্টারের পিছনে অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে। আমরা লোকজনকে চিনি না, তাই স্বাক্ষীদের দেয়া স্বাক্ষ্য অনুযায়ি মাওলা ফকিরকে আসামী করা হয়েছে। যদি মাওলা ফকির নির্দোষ হয় তাহলে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা বিষয়টি তদন্ত করে তাকে সহায়তা করতে পারবেন। তিনি ঘটনার জন্য সংবাদ প্রকাশ না করে দুই একদির মধ্যে ঘটনাস্থলে গিয়ে বিষয়টি নিয়ে মামলার তদন্তকারী অফিসারের সাথে কথা বলবেন বলেও জানান। মামলার তদন্তকারী অফিসার আগৈলঝাড়া থানার এসআই মোঃ তারিকুল ইসলাম বলেন, ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে স্থানীয় লোকজনের সাথে কথা বলে বিষয়টি নিয়ে একটু ঘাপলা আছে বলে জানতে পেরেছি। এবিষয়ে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। জেলা গোয়েন্দা পুলিশের ওসি অসীম কুমার সিকদার বলেন, বিষয়টি নিয়ে তিনি অভিযানিক দলের সদস্যদের সাথে কথা বলবেন। তাদের কাছ থেকে জেনে তিনি নিজে তদন্ত করে পরবর্তী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করবেন। কোন নির্দোষ লোক শাস্তি পাক বা হয়রানী হোক তা হবে না। পাশাপাশি মামলার সাথে ঘটনার সম্পর্ক না থাকলে মূল আসামীকেও ছাড় দেয়া হবে না বলেও তিনি উল্লেখ করেনর।