জামালপুরের মেলান্দহে বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীর ওপর হামলার ঘটনা ঘটেছে। এতে বিশ্ববিদ্যালয়ের ৮ জন শিক্ষার্থী আহত হয়েছে। তাদের মধ্যে দুইজনকে আশঙ্কা জনক অবস্থায় ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। শুক্রবার (৮ মার্চ) রাত ১০টার দিকে জামালপুর শহরের পশ্চিম নয়াপাড়া এলাকায় নিরিবিলি মেসের সামনে প্রথম ঘটনা ঘটে । দ্বিতীয় দফায় আবারও বনপাড়া কবরস্থানের সামনে শিক্ষার্থীদের ওপর দেশীয় অস্ত্র নিয়ে হামলা চালায় স্থানীয় একদল সন্ত্রাসী। আহতরা হলেন-কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থী আব্দুল্লাহ আল নোমান, মনির হোসেন, ফায়জুর রহমান ফাহিম, রিয়াদ, জোবায়েদ, গুলজার, আব্দুল কাদের জিলানী, ইউনুস আলী। এদের মধ্যে উন্নত চিকিৎসার জন্য আব্দুল্লাহ আল নোমান ও মনির আহমেদকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। তিনজন শিক্ষার্থী জামালপুর জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে বাসায় ফিরেছেন ৪ জন। আহত শিক্ষার্থী ফাহিম বলেন, ‘আমি আমার বন্ধু ও দুই বড় ভাইয়ের সাথে রাতে চা খেতে বের হই। আমাদের মেসের সামনেই থাকা কিছু বখাটেরা আমাদের পথ আটকিয়ে ধরে। তাঁরা কয়েক জন মাতাল অবস্থায় ছিল মনে হচ্ছিল। তখন আপনা-আপনিই আমাদের বকাঝকা ও ধাক্কানো শুরু করে। আমরা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী হিসেবে পরিচয় দিলে। আমাদের উপর আরও চড়াও হয় তাঁরা। এক পর্যায়ে আমার ফোন কেড়ে নেয়। এসময় রিকশায় থাকা আরও তিনজন বখাটে ছেলে এসে তাদের সঙ্গে যুক্ত হয়।’ তিনি আরও বলেন, এরকম চলতে থাকা অবস্থায় আশেপাশের মানুষ জমে যায় এবং আমাদের মেসের মালিকও নিচে চলে আসে। মালিকের সঙ্গেও বখাটেদের কথা কাটাকাটি চলতে থাকে। তখন আমরা মেসের গেটের মধ্যে চলে গেলে সমাজকর্মের দ্বিতীয় ব্যাচের সামিউল ভাইকে টেনে হেঁচড়ে বাইরে নিয়ে মারতে শুরু করে। রিকশাওয়ালা এসে ঠেকালে তাকে মারধর শুরু করেন। পরের ঘটনা বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যান্য শিক্ষার্থীদের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে। তখন অনেকেই আমাদের এখানে আসে। ততক্ষণে বখাটেরা চলে যায়। পরে রাত দশটার দিকে আমরা শিক্ষার্থীরা তাঁদের কাছে থাকা মোবাইল ফোন ফিরিয়ে আনতে ও কথা বলতে গেলে। তারা অতর্কিতভাবে ছুরি, লাঠি ও দেশীয় অস্ত্র দিয়ে আমাদের উপর হামলা চালায়। আমরা জানতাম না যে তারা আমাদের ওখান থেকে এসে পরিকল্পনা করে ছুরি, লাঠি নিয়ে বসে আছে। আমরা সবাই খালি হাতে ছিলাম। তাদের এই অতর্কিত হামলায় কাপড় সেলাই করে কেচি দিয়ে আমার হাতে, কারো পিঠে আবার কারো পায়ে কুপিয়েছে। তাদের মধ্যে কেউ লাঠি ও ইট দিয়ে আমাদের উপর হামলা করেছে। এ বিষয়ে কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের চেয়ারম্যান মো. হুমায়ুন কবির বলেন, আমাদের শিক্ষার্থীদের উপর এমন হামলার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। সেই সাথে হামলাকারীদের আইনের আওতায় এনে সুষ্ঠু বিচারের দাবি জানাচ্ছি। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর সহকারী অধ্যাপক ইউসুফ আলী বলেন, ‘আহত শিক্ষার্থীদের আমরা আগে চিকিৎসা দিচ্ছি। এই ঘটনায় হামলাকারীদের শনাক্ত করার চেষ্টা করছি। আমরা শনাক্ত করে থানায় মামলা দায়ের করব।’ জামালপুর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মহব্বত কবীর বলেন, ‘এই ঘটনার পরে আমরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে ৩জনকে আটক করতে সক্ষম হয়েছি বলে জানান।’