ওষুধের দাম নাগালের বাইরে চলে গেছে নীরবে। নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের দাম বাড়লে গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপক সমালোচনা হলেও এক্ষেত্রে ওষুধ যেন ব্যতিক্রম। একটু একটু করে নাগালের বাইরে চলে গেছে ওষুধ কেনার সামর্থ্য।যেন-তেন কোম্পানির চেয়ে নামীদামি ওষুধ কোম্পানি গুলো ইচ্ছামতো দাম বাড়াচ্ছে। গ্রামা ঞ্চলের ছোটখাট ফার্মেসি থেকে শুরু করে কালীগঞ্জ শহরের বড় বড় ফার্মেসিতে জ্বর-ঠান্ডা থেকে শুরু করে প্রেসার, ভিটামিন, অ্যান্টিবায়োটিকসহ প্রায় ওষুধের দামে একেবারে লাগামহীন হয়ে পড়েছে। কোনো কোনো ওষুধের দাম ৫০ শতাংশ পর্যন্ত বেড়েছে। ক্রেতাদের অভিযোগ, নিত্যপণ্যের দাম যেভাবে না বাড়ছে মানুষের জীবন-মরণ নির্ভর করা ওষুধের দাম তার চেয়ে বেশি বাড়ছে। বিভিন্ন বাজারে ক্রেতা-বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে ওষুধের বাড়তি দামের এমনই ভয়াবহ চিত্র পাওয়া গেছে। এ ব্যাপারে যমুনা ফার্মেসির মালিক বলেন, কয়েক মাস পর পরই বিভিন্ন ওষুধের দাম বাড়ছে। দেখা গেছে আগের লটের ওষুধ শেষ না হতেই নতুন করে বাড়তি দামের ওষুধ বাজারে ছেড়ে দিচ্ছে কোম্পানি গুলো।বিভিন্ন ফার্মেসিতে খোজ নিয়ে জানা যায়, প্রেসারের (উচ্চ রক্তচাপ) ওষুধের দাম খুবই বেড়েছে। ওসারটিলের দাম আগে ছিল ৮০ টাকা পাতা, বর্তমানে ১০০ টাকা হয়ে গেছে। টাকার লোসারভা ২০০ টাকা, ৬০ টাকার ফিক্সকার্ড ৮৫ টাকা, এক পাতা বিসলল (৫ এমজি) ট্যাবলেট ১৪০ থেকে ১৬০টা হয়েছে। প্রতি পিস ফিনিক্স (২০ এমজি) ট্যাবলেট ৫ থেকে ৭ টাকা, ওমিডন (১০ এমজি) ট্যাবলেট ৩ থেকে ৪ টাকা, শিশুদের নাকের অ্যান্টাজল ০০. ৫% ড্রপ ১১ থেকে ১৮ টাকা ও প্রাপ্ত বয়স্কদের নাকের অ্যান্টাজল ০.১% ড্রপ ১১ থেকে ২০ টাকা করা হয়েছে। কাশির তুসকা প্লাস (১০০ মিলি) সিরাপ ৮০ থেকে ৮৫ টাকা এবং ফেক্সো (৫০ মিলি) সিরাপ ৫০ থেকে ৫৫ টাকা করা হয়েছে।শ্বাসকষ্টের চিকিৎসায় মোনাস ১০ ট্যাবলেট ১২ টাকা থেকে এখন ১৭ টাকা ৫০ পয়সায় বিক্রি হচ্ছে। শতকরা ৫ টাকার বেশি কমিশন নিয়ে কালীগঞ্জ উপজেলার কোন ঔষধ ব্যবসায়ি ভোক্তা পর্যায়ে ঔষধ বিক্রি করলে তাকে জবাবদিহিতা ও ৫০০ টাকা জরিমানার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল কালীগঞ্জ উপজেলা ঔষধ ব্যবসায়িদের সংগঠন বিসিডিএস। এ সংগঠনটি নিজেদের ইচ্ছামত আইন তৈরি করে ৫ টাকার বেশি কমিশনে ওষুধ বিক্রি করলে তাদের কে ৫০০ টাকা জরিমানা করা হত। সংগঠনটি নিয়ম বহির্ভূতহবে নিজেদের তৈরি আইনে লঙ্ঘিত হচ্ছে ভোক্তার অধিকার। আলোচনা সভায় উঠে আসা ব্যাপারে ঔষধ ব্যবসায়িদের আইন প্রয়োগ ও জরিমানা আদায় না করার নির্দেশনা প্রদান করেন কালীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার। একই সাথে ভবিষ্যতে এই ধরনের কার্যক্রম চালু থাকলে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার সিদ্ধান্ত গৃহিত হয়। কথাগুলো বলছিলেন বিশ্ব ভোক্তা অধিকার দিবস-২০২৪ উদযাপন উপলক্ষে আলোচনা সভার সভাপতি ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইসরাত জাহান। শুক্রবার সকাল ১০ টায় উপজেলা পরিষদ সভাকক্ষে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় উপস্থিত ছিলেন ফায়ার সার্ভিস স্টেশন কর্মকর্তা শেখ মামুন-উর-রশিদ, পল্লী উন্নয়ন কর্মকর্তা মোহাম্মদ খায়রুল হক, কনজ্যুমার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ এর উপজেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক শিবুপদ বিশ্বাস, সাংবাদিক জামির হোসেন, কালীগঞ্জ পৌর ব্যাবসায়ী সমিতির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক হুমায়ুন কবির সোহাগ,কালীগঞ্জ উপজেলা ঔষধ ব্যবসায়িদের সংগঠন বিসিডিএস এর সভাপতি বাবলু সাহা, মোঃ আকিদুল ইসলাম প্রমুখ।