নীলফামারীর সৈয়দপুর বাজার ভরে গেছে ভেজালে। শিশু খাদ্যে রংয়ের ভেজাল। হোটেলে তরিতরকারীতে ভেজাল। গোমাংসে পানি ভেজাল। গুড়ে চিনি ভেজাল। বয়লার মুরগীকে দেশী মুরগী বলে দামে ভেজাল। হলুদ ও সরিষার তেলে ভেজাল। মাছ ও শুটকিতে ভেজাল। আর ফলমুলে তো সারা বছর ধরে চলে ভেজাল। বাজারে প্রত্যেক ব্যবসায়ির রয়েছে নিজস্ব একটি সংগঠন। তারা দর দাম নিজেরাই নির্ধারণ করে থাকে। পাশাপাশি তাদের পণ্যে ভেজাল তো আছেই। এদিকে বিভিন্ন মসলায় মেশানো হচ্ছে রং। সাদা জিরা করা হচ্ছে কাল। রাতের অন্ধকারে গোডাউনে মসলা করা হয় রং। যা স্বাস্থ্যের জন্য খতিকর বলে জানান চিকিৎসক। সৈয়দপুরের বাজার গরম হয়ে ওঠে যখন কোন বিশেষ দিন বা মাস আসে। বিশেষ করে রমজান মাস এলে সৈয়দপুর শহরের ব্যবসায়িরা আনন্দে মেতে ওঠে। তাদের মনোভাব সারা বছর যে ব্যবসা হয়নি তা রমজান মাসে কামাই করে নেবে। এমন মনোভাবে তারা অস্বাভাবিক দাম হাকিয়ে দেয়। প্রতি বছর সৈয়দপুরে এ অবস্থা বিরাজ করলেও প্রশাসন থাকে নিরব। মাঝে মধ্যে চলে অভিযান। এতে যৎ সামান্য জরিমানা করা হয়। এ দেখে অনেকেই হাসাহাসি করে। আবার কেউ কেউ বলে এগুলে লোক দেখানো অভিযান। বর্তমানে ইফতারে প্রয়োজন খেজুর। আর এ খেজুর পাওয়া যায় বিভিন্ন ধরনের। প্রকার ভেদে দাম। সৈয়দপুর বাজারে বেশ কয়েকজন ফল ব্যবসায়ি রয়েছেন। তারা মুলত সব ধরনের ফলমুল আমদানি করে থাকে। কোন কোন ব্যবসায়ির আবার রয়েছে বড় বড় গোডাউন। ওই গোডাউনগুলো শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত। সেখানে রাখা হয় ফলমুল। বলা চলে স্টকে রাখা হয়। সময় মত বাড়তি দাম হাকানো হয়। রমজান শুরুর প্রায় এক সপ্তাহ পুর্ব থেকে বাজারে অন্যান্য ফলমুলের সাথে এসেছে খেজুর। বিভিন্ন নামে ওই খেজুর বিক্রি করছেন মহাজনরা। তাদের কাছ থেকে ওই খেজুর ক্রয় করছেন ক্ষুদ্র ও ভ্রাম্যমাণ ব্যবসায়ি। এদের কাছে দেখা যায় পঁচা খেজুর। নাকে শুকলে মনে হয় দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে। তবে অতিরিক্ত ঠান্ডায় রাখায় খেজুরগুলো পঁচা মনে হয় না। পঁচা খেজুর বিক্রি না করে তা ফেলে দেয়ার নিয়ম থাকলেও ব্যবসায়িরা তা করছেন না। তারা ক্রেতা সাধারণের সাথে প্রতারণা করছেন বলা যায়। এদিকে ভোক্তা অধিদপ্তর রংপুর ও নীলফামারী প্রায়ই সময় অভিযান পরিচালনা করে থাকে। কিন্তু তাদের অভিযান কোন কাজে আসছে না। এমন অভিযানে ব্যবসায়িরা আরো বেপরোয়া হয়ে উঠছেন। এক ক্ষুদ্র ফল বিক্রেতা জানান, পঁচা খেজুর আমি মহাজনের কাছ থেকে নেই। দাম একটু কমে পাওয়া যায়। মহাজন যদি এগুলো বিক্রি না করতো তাহলে আমরা পেতাম না। মহাজনকেই এগুলো ফেলে দেয়া উচিৎ। কিন্তু তারা ফেলে না দিয়ে বাজারে ছেড়ে দিয়ে প্রতারণা করছেন। সৈয়দপুর পৌরসভার ১৩নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি কবির উদ্দীন ইউনুস বলেন, বাজার অনিয়ন্ত্রিত। প্রত্যেক পণ্যের দাম বাড়তি। করে দাম বাড়াচ্ছে ব্যবসায়িরা। এতে করে খেটে খাওয়া মানুষ দিশেহারা। সরকারকে বাজার নিয়ন্ত্রণে দ্রুত পদক্ষেপ নিতে হবে। তিনি বলেন সৈয়দপুরে বেশ কিছু ব্যবসায়ি ভেজালের সাথে জড়িত। তারা ভেজাল ব্যবসা করে আজ কেটি কেটি টাকার মালিক।