১৬ মার্চ সোনার দেশে বাঘায় লাউ নিয়ে বিপাকে পড়েছেন চাষিরা, বিক্রি করতে না পেরে হাট থেকে ফেরত নিয়ে গেলেন শিরোনামে সংবাদ প্রকাশ হয়। সংবাদটি কৃষি মন্ত্রনালয়ের নজরে আসে। পরে রাজশাহী কৃষি বিপনন অধিদপ্তরকে পরিদর্শন করে প্রতিবেদন পাঠানোর নির্দেশ দেন। সেই নির্দেশ মোতাবেক সহকারি প্ররিচালক (প্রশিক্ষণ) আফরিন হোসেন মঙ্গলবার (১৯ মার্চ) বেলা সাড়ে ১১টায় বাঘা প্রেস ক্লাবের সাংবাদিকদের সহায়তায় আড়ানী হাট বাজার ও গোচর মাঠে লাউ খেত পরিদর্শন করেন। এ সময় ব্যবসায়ী ও কৃষকদের সাথে কথা বলে জানতে পারেন প্রকারভেদে একটি লাউ খুরচা বিক্রি হয়েছে ৫-১০ টাকা। প্রাইকাররা জানান, প্রতিটি লাউ তাদের ৩-৫ টাকায় ক্রয় করতে হয়েছে। বাজারে লাউ এর কম দাম এবং ক্রেতার অভাবে বিক্রি করতে না পেরে গাছ কেটে ফেলার সত্যতাসহ পাইকাররাও লাউ বিক্রিতে লোকসান হওয়ায় তারা লাউ কিনতে আগ্রহ হচ্ছেনা বলে জানতে পারেন। এ বিষয়ে রাজশাহী কৃষি বিপনন অধিদপ্তরের সহকারি প্ররিচালক (প্রশিক্ষণ) আফরিন হোসেন জানান, কৃষকরা যাতে আবাদে ন্যায্য মূল্য পায়, সেই বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করে মন্ত্রনালয়ে প্রতিবেদন দাখিল করা হবে। এদিকে গরুকে সিদ্ধ করে খাওয়ানোর জন্য স্থানীয় এক মুদি ব্যবসায়ী বিধান হালদার ৩-৪ কেজি ওজনের ১০৬ পিচ লাউ ১১০ টাকায় ক্রয় করেছেন। বাড়ি পৌঁছাতে লেগেছে আরও ২০ টাকা। তার প্রতিটি লাউ এর দাম পড়েছে এক টাকা ২৩ পয়সা। এক সপ্তাহ আগে গত মঙ্গলবার হাটে ২৮ টা কিনেছিলেন ৬০ টাকায়। সেই হিসেবে এক পিচ লাউ এর দাম পড়েছিল ২ টাকা ১৫ পয়সা। ৪২ কেজি ওজনের এক বস্তা বেগুন কিনেছেন ১৪০ টাকায়। প্রতিকেজি দাম পড়েছে ৩ টাকা ৩৪ পয়সা। এ বিষয়ে গোচর গ্রামের লাউ চাষি জহুরুল ইসলাম সোনা বলেন, একটি লাউ তৈরী করতে বর্তমানে খরচ হচ্ছে ৮ টাকা। কিন্তু বর্তমানে বাজারে বিক্রি হচ্ছে প্রকারভেদে ৩-৫ টাকায়। তবে মাস খানেক আগে প্রতিটি লাউ ৪০-৪৫ টাকায় বিক্রি করলেও বর্তমান সময়ে ক্রেতার অভাবে গাছের লাউ বিক্রি করতে পারছিনা। একই গ্রামের হাবিবুর রহমান বলেন, আমার এক বিঘা জমিতে লাউ এর আবাদ করেছি। মাচা তৈরীর বাঁশ, সেচ, সার, শ্রমিক সহ বিভিন্নখাতে খরচ হয়েছে প্রায় এক লক্ষ টাকা। বর্তমানে লাউ এর দাম না থাকায় মাচা রেখে গাছ কেটে দেওয়া হয়েছে। পাইকারী ব্যবসায়ী আলান উদ্দিন বলেন, শনিবার হাটে এক হাজার লাউ কিনে ঢাকায় তিনদিনে বিক্রি করে ৪ হাজার টাকা লোকসান হয়েছে। এরপর লাউ কিনে ব্যবসার সাহস পাচ্ছিনা। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শফিউলল্লাহ সুলতান বলেন, উপজেলায় ৭৮ হেক্টর জমিতে লাউ চাষ হয়েছে। এ সময় শীত কমে যাওয়ার কারণে লাউয়ের চাহিদা কমে গেছে। তবে এলাকায় প্রচুর পরিমানে লাউয়ের উৎপাদন হয়েছে।