রংপুরের পীরগঞ্জ উপজেলার পৃথক ১৩ টি স্থানে স্যালো মেশিন বসিয়ে বালু উত্তোলনের মহোৎসব চলছে। দীর্ঘদিন ধরেই রীতিমতো সিন্ডিকেট করে প্রকাশ্যে করতোয়া নদী থেকে দিবারাত্র বালু উত্তোলন ও বিক্রি করা হচ্ছে। অপরিকল্পিভাবে বালু উতোতলন ও বিক্রি করায় এক দিকে যেমন নদী ভাঙ্গছে অন্য দিকে মাহিন্দ্র জাতীয় ট্রলীতে করে বালু পরিবহনের ফলে গ্রামীন কাচা পাকা সব ধরনের এমনকি সদ্য নির্মিত পাকা সড়কও ভেঙ্গে চলচলের অযোগ্য হয়ে পড়ছে। স্থানীয় প্রশাসনের নাকের নদী দখল করে এ অপকর্ম চললেও এদের বিরুদ্ধে আইন প্রয়োগের কোন দৃষ্টান্ত নেই পীরগঞ্জ থানা পুলিশের খাতায়। অভিযোগ রয়েছে,অবৈধ এই বালু ব্যবসার সাথে ক্ষমতাসীন দলের নেতাকর্মী ও স্থানীয় কতিপয় প্রভাবশালী। যে কারনে এ ব্যাপারে স্থানীয়রা কেউ মুখ খুলতে সাহস করে না। মাঝে মধ্যে প্রশাসন অভিযান চালানোর হুমকি দিলেও তা বাস্তবে করা হচ্ছে না এক রহস্যজনক কারনে। অভিযোগ রয়েছে,সবগুলো বালু সিন্ডিকেটের সাথে সংশ্লিষ্ট তহসীলদারদের মাধ্যমে স্থানীয় প্রশাসনের অলিখিত চুক্তি রয়েছে। তহসীলদারদের মাধ্যমেই চুক্তির অর্থ আদায় করা হয় প্রতিমাসে। যে কারনে বালু উত্তোলনকারীরা দিনের পর দিন বেপরোয়া হয়ে উঠছে। সরেজমিনে দেখা যায়, উপজেলার কাদিরাবাদ তহশিল অফিস থেকে ১ কিলোমিটার পশ্চিমে গন্ধর্বপুর ঈদগাহ মাঠের সাথে অখিরা ক্যানেল থেকে বালু উত্তোলন করছে একই এলাকার রতন মিয়া, দুধিয়াবাড়ি নামক স্থানে করতোয়া নদীর পার বোয়ালমারীতে আমিনুল ইসলাম, কিনা মিয়া ও ওয়াসিম মিয়া, জয়ন্তিপুর ঘাটে, রামনাথপুর শালপাড়া ঘাটে, ধর্মদাসপুর শালকেরদহ্ বানুর ঘাট, হোসেনপুর কুলানন্দপুরের ঘাট,ঘাষিপুর গ্রামে কুয়াতপুর নামক স্থানে ওই গ্রামের ২৪ জনের একটি দল, পার কুয়াতপুর হামিদপুর নুর মোহাম্মদ গোল্লা মেম্বারের বাড়ির সামনে গোল্লা মেম্বর নিজেই, নেংড়ার ঘাট,সাত পাড়ার ঘাটে এবং পাঁচগাছি ইউনিয়নের এনায়েতপুর বটতলীতে বিরতিহীন বালু উত্তোলন করা হচ্ছে। এলাকাবাসী জানান, বছরের পর বছর করতোয়া নদীর বিভিন্ন এলাকায় চলছে বালু উত্তোলন। দীর্ঘদিন ধরে অপরিকল্পিতভাবে এই বালু উত্তোলনের ফলে একদিকে নদী ভাঙ্গছে অন্যদিকে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে বসতবাড়ি, ফসলি জমি ও বিভিন্ন এলাকার কাচা পাকাসড়ক। অবাধে বালু উত্তোলনে হুমকির মুখে পড়েছে স্কুল ব্রীজ, বন্যা নিয়ন্ত্রন বাঁধ ছাড়াও নানা স্থাপনা। বেপরোয়া বালু বোঝাই গাড়ির বিকট শব্দে এলাকার লোকজন অতিষ্ট। অভিযানের ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইকবাল হাসান জনবল সংকটকেই দুষছেন। স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা বলছেন এসব এলাকার অবৈধ বালু পয়েন্ট থেকে মাঝে ট্রাকযোগে কর্মকর্তাদের কাজে বালু পাঠানো হয়। তাই তাদের প্রশ্ন, সর্ষের ভেতরের ভুত কে সরাবে ?