শেষপর্যন্ত রাষ্ট্রীয় আকাশ পরিবহন সংস্থা বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স আসন্ন স্বাধীনতা দিবসের দিন বরিশালবাসীর জন্য সু-সংবাদটি দিতে পারল না। দীর্ঘ দাবীর প্রেক্ষিতে গত জানুয়ারি মাসের শেষের দিকে জাতীয় পতাকাবাহী বিমান আসন্ন গ্রীস্মকালীন সময়সূচীতে ২৬ মার্চ থেকে বরিশাল সেক্টরে সপ্তাহে ছয়দিন চালানোর সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছিল। বিষয়টি সংস্থার ফ্লাইট সিডিউল পরিদপ্তর থেকে বিক্রয় ও বিপণন বিভাগকে অবহিত করা হয়। কিন্তু পাইলট সংকটের অজুহাতে চলতি মাসের প্রথম সপ্তাহে সে সিদ্ধান্ত থেকে সরে এসেছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। বর্তমানে অভ্যন্তরীণ রুটের জন্য বিমান এর চারটি ‘ড্যাস-৮ কিউ-৪০০’ এয়ারক্রাফট থাকলেও প্রয়োজনীয় ক্রু-নেই। নতুন সিদ্ধান্তনুযায়ী আগামী ২৬ মার্চ নয়; ৩১ মার্চ থেকে বরিশাল সেক্টর থেকে সপ্তাহে চারদিন ফ্লাইট পরিচালনা করবে রাষ্ট্রীয় সংস্থাটি। সংশ্লিষ্ট নির্ভরযোগ্য একটি সূত্র তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করে জানিয়েছেন, আগামী ৩১ মার্চ থেকে সপ্তাহের রবি, সোম, বৃহস্পতি ও শুক্রবার ফ্লাইট পরিচালনা করবে বিমান। নতুন সময়সূচী অনুযায়ী সোম ও বৃহস্পতিবার ঢাকা থেকে বিকেল সোয়া চারটা ও বরিশাল থেকে সাড়ে পাঁচটায় এবং শুক্রবার ঢাকা থেকে সকাল সোয়া আটটা ও বরিশাল থেকে সকাল সাড়ে নয়টা, রবিবার ঢাকা থেকে সকাল সাড়ে ১০টা, বরিশাল থেকে বেলা সাড়ে ১১টায় ফ্লাইট পরিচলনার কথা জানানো হয়েছে। কিন্তু এ সময়সূচী যাত্রীবান্ধব হয়নি বলে বিভিন্ন ট্রাভেল এজেন্সী ও যাত্রীদের তরফ থেকে অভিযোগ করা হয়েছে। তাদের দাবি যতোদিন নিয়মিত ফ্লাইট প্রদান সম্ভব হচ্ছেনা, ততদিন সোমবারের পরিবর্তে শনিবার বিকেলে ফ্লাইট পরিচালনার দাবি করা হয়েছে। পাশাপাশি সোমবার ফ্লাইট পরিচালনা করলে তা শুক্রবারের মত সকালে এবং রবিবারের ফ্লাইটটিও ঢাকা থেকে সকাল সোয়া আটটায় এবং বরিশাল থেকে সাড়ে নয়টায় পরিচালনার দাবী করা হয়েছে। উল্লেখ্য, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপহার হিসেবে স্বাধীনতার সূবর্ণ জয়ন্তী ২০২১ সালের ২৬ মার্চ থেকে বরিশাল সেক্টরে প্রতিদিন নিয়মিত ফ্লাইট চালু করেছিল জাতীয় পতাকাবাহী বিমান। কিন্তু পদ্মা সেতু চালুর কারণে যাত্রী সংকটের অজুহাত তুলে ২০২২ সালের ৫ আগস্ট থেকে নিয়মিত ফ্লাইট সপ্তাহে তিনদিনে হ্রাস করা হয়। তবে এজন্য প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর বা মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন দূরের কথা অবহিত পর্যন্ত করেনি বিমানের তৎকালীন ব্যবস্থাপানা কর্তৃপক্ষ। অথচ ২০২২ সালেও বরিশাল সেক্টরে ফ্লাইট প্রতি বিমান-এ ৭০% এর বেশী যাত্রী বহন করে। সাধারণ যাত্রীদের অভিযোগ, বাণিজ্যিক দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে কখনোই বরিশাল সেক্টরে ফ্লাইট পরিচালনা করেনি বিমান কর্তৃপক্ষ। বরিশাল সেক্টরের বিষয়ে বিমানের বর্তমান ব্যবস্থাপনা পরিচালক শফিউল আজিম একাধিকবারই ইতিবাচক মনোভাবের কথা জানিয়েছেন। তার মতে, বরিশাল সেক্টর নিয়ে ইতিবাচক পদক্ষেপ গ্রহণের চেষ্টা চলছে। বিদ্যমান কিছু সংকট কাটিয়ে উঠে এ সেক্টরে যাত্রী চাহিদার বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে সম্ভব সবকিছু করা হবে বলেও তিনি উল্লেখ করেন। বরিশাল সদর আসনের এমপি ও পানি সম্পদ প্রতিমন্ত্রী কর্নেল (অব.) জাহিদ ফারুক শামীম বলেন, আমার সাথে বিমানমন্ত্রীর কথা হয়েছে, খুব শীঘ্রই বরিশাল সেক্টরে বিমান ফ্লাইট বাড়ানো হবে।