জামালপুরের বকশীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আকস্মিক পরিদর্শন করেন জামালপুর-১ (বকশীগঞ্জ-দেওয়ানগঞ্জ) আসনের এমপি নূর মোহাম্মদ । আকস্মিক পরিদর্শনের সময় তিনি চিকিৎসা নিতে আসা রোগীদের খোঁজ খবর নেন এবং চিকিৎসা সেবার বেহাল অবস্থা দেখে ক্ষোভ প্রকাশ করেন । পরিদর্শন শেষে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মুহাম্মদ আজিজুল হককে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সকল সমস্যা খুঁজে বের করে দ্রুত সময়ে সমাধান করার নির্দেশনা দেন এমপি । জানা যায়, বকশীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ৫০ শয্যার হাসপাতালটিতে চিকিৎসক থাকার কথা ৪১ জন। অথচ চিকিৎসক আছেন মাত্র পাঁচজন। প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতিরও অভাব রয়েছে। এসব কারণে চিকিৎসাসেবা নিতে গিয়ে ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন রোগীরা। ২০১৩ সালের ১৩ অক্টোবর ৩১ শয্যার হাসপাতালটি ৫০ শয্যায় উন্নীত করে ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ২০১৫ সালের ১৩ জুলাই হাসপাতালটি উদ্বোধন করেন সাবেক সংসদ সদস্য আবুল কালাম আজাদ। কিন্তু ৯ বছরেও চালু হয়নি ৫০ শয্যার কার্যক্রম। দেওয়া হয়নি প্রয়োজনীয় জনবল ও যন্ত্রপাতি। এমনকি ৩১ শয্যার জনবল সংকট কাটেনি এখনও। ৩১ শয্যার হাসপাতালে চিকিৎসক থাকার কথা ২০ জন। আর ৫০ শয্যার হাসপাতালে চিকিৎসক থাকার কথা ৪১ জন। কিন্তু বকশীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসক আছেন মাত্র পাঁচজন। নার্সসহ অন্যান্য পদেও লোকবল সংকট। যে কারণে ছোটখাটো সমস্যার জন্যও যেতে হচ্ছে জামালপুর সদর হাসপাতাল কিংবা মানহীন ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের তথ্যমতে, ৫০ শয্যার জন্য শুধু প্রশাসনিক অনুমোদন পাওয়া গেছে। ৫০ শয্যার হাসপাতালে যতজন চিকিৎসা কর্মকর্তা থাকার কথা, তার সবক’টি পদই শূন্য । জুনিয়র কনসালট্যান্ট (কার্ডিওলজি), জুনিয়র কনসালট্যান্ট (নাক, কান, গলা), জুনিয়র কনসালট্যান্ট (চক্ষু), জুনিয়র কনসালট্যান্ট (মেডিসিন), জুনিয়র কনসালট্যান্ট (অর্থো.), জুনিয়র কনসালট্যান্ট (চর্ম ও যৌন), জুনিয়র কনসালট্যান্ট (সার্জারি), জুনিয়র কনসালট্যান্ট (শিশু), অ্যানেসথেশিয়া, অ্যানেসথেটিক বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক নেই। এ ছাড়া আরএমও, ইনডোর মেডিকেল অফিসার, প্যাথলজিস্ট, নার্সিং সুপারভাইজার, সিনিয়র স্টাফ নার্স, কার্ডিওগ্রাফার, অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার অপারেটর, ইমার্জেন্সি অ্যাটেনডেন্ট, ল্যাবরেটরি অ্যাটেনডেন্ট, মিডওয়াইফ, মেডিকেল টেকনিক্যাল ল্যাব, ফার্মাসিস্ট, প্রধান সহকারী, হিসাবরক্ষক, পরিচ্ছন্নতাকর্মী, ওটিবয়ের পদ শূন্য রয়েছে। একটি মাত্র অ্যাম্বুলেন্স দীর্ঘদিন ধরে বিকল। জনবলের অভাবে তালাবদ্ধ পড়ে আছে ওটি রুম। আলট্রাসনোগ্রাম মেশিন থাকলেও জনবলের অভাবে ব্যবহার হয়নি কোনোদিন। ইসিজি মেশিন বেশির ভাগ সময়ই থাকে বিকল।এসব নিয়ে মাঝে মধ্যেই সংবাদের শিরোনাম হতো বকশীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স । স্বাস্থ্য কর্মকর্তা মুহাম্মদ আজিজুল হক বলে দীর্ঘ দিন থেকেই নানা সংকটের মধ্য নিয়ে চলছে চিকিৎসা সেবা জনবলও সংকট রয়েছে। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। দ্রুতই সংকট কেটে যাবে বলে আশা তাঁর। এমপি নূর মোহাম্মদ বলেন, আমার এই অঞ্চলের মানুষ দরিদ্র তাদের চিকিৎসার প্রাণকেন্দ্রই হলো এই হাসপাতাল, হাসপাতালের সব সমস্যা ওক সমাধানের বিষয়ে স্বাস্থ্য কর্মকর্তাদের সাথে কথা বলেছি। সমস্যা চিহ্নিত করে যতো দ্রুত সম্ভব সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে চিঠি দিতে বলেছি ।