মহাসড়ক ও আঞ্চলিক মহাসড়কে নছিমন, করিমন, সিএনজিচালিত অটোরিকশাসহ তিন চাকার যানবাহন চলাচল নিষিদ্ধ। কিন্তু ফুলবাড়ী-দিনাজপুর, ফুলবাড়ী-ঢাকা ও ফুলবাড়ী-রংপুর মহাসড়ক ও আঞ্চলিক মহাসড়কে এসব যানবাহনের চলাচল বেড়েই চলেছে। এতে ঘটছে দুর্ঘটনা। এসব অবৈধ যানবাহনের কারণে প্রাণ হারানোর পাশাপাশি চিরজীবনের জন্য পঙ্গুত্ব বরণ করছেন অনেকে। পুলিশ ও পরিবহণশ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, তিন চাকার সব ধরনের যানবাহন ধীরগতির বলে মহাসড়ক ও আঞ্চলিক মহাসড়কে এগুলো চলাচল ঝুঁকিপূর্ণ। এগুলোর ব্রেকিং-ব্যবস্থা যেমন দুর্বল, তেমনি গঠনও মহাসড়ক ও আঞ্চলিক মহাসড়কে চলাচলের উপযোগী নয়। এছাড়াও এসব বাহনের চালকদের ড্রাইভিং লাইসেন্সও নেই। ট্রাফিক আইন সম্পর্কে জ্ঞান না থাকার কারণেও এসব নিজে যেমন দুর্ঘটনায় পড়েন, তেমনি অন্য যানবাহনকেও দুর্ঘটনায় পড়তে বাধ্য করেন। ফুলবাড়ী পৌরশহরের ঢাকা মোড়, রেলঘুমটি, নিমতলা মোড়, মন্ত্রী মার্কেট, সুজাপুর হাই স্কুল মোড়, বাসস্ট্যান্ড ও মন্ত্রী মার্কেট এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, যাত্রী তোলার অপেক্ষায় রয়েছে শতাধিক ব্যাটারি চালিত অটোভ্যান ও সিএনজিচালিত অটোরিকশা। প্রতিটি ভ্যানে ৮-১০জন ও সিএনজিচালিত অটোরিকশায় ৫জন যাত্রী নেওয়া হচ্ছে। বাসের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে এগুলো মহাসড়ক ও আঞ্চলিক মহাসড়ধ ধরে ছুটে যাচ্ছে বিভিন্ন গন্তব্যে। একই সঙ্গে আসবাবপত্র, গবাদিপশু, কৃষিপণ্যসহ বিভিন্ন মালামাল নিয়ে নছিমন ও করিমন বিভিন্ন স্থানে যাওয়া আসা করছে। সড়ক, মহাসড়ক ও আঞ্চলিক মহাসড়কে ওপর দাঁড়িয়ে অবৈধ এসব যানের মালামাল ওঠানো ও নামানোর কারণে সৃষ্টি হচ্ছে তীব্র যানজট। ফুলবাড়ী পৌরশহরের ঢাকা মোড়স্থ সিএনজিচালিক অটোরিকশা স্ট্যান্ডে কথা হয় সিএনজিচালিক অটোরিকশা চালক আবুল হোসেনের সঙ্গে। তিনি বলেন, কম দূরত্বের লোকজনের যাতায়াতের জন্য সিএনজিচালিত অটোরিকশা খুবই জনপ্রিয়। তার দাবি, এতে যাত্রীদের যেমন লাভ, তেমন তাদেরও (চালকদের) লাভ। অপর এক ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা রিকশা চালক নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, এসব যানবাহন সড়ক, মহাসড়ক ও আঞ্চলিক মহাসড়কে চলাচল নিষিদ্ধ হওয়ার কারণে মাঝেমধ্যে পুলিশের ঝুঁক-ঝামেলায় পড়তে হয়। তবে মাসিক চুক্তি করে নিয়ে তেমন কোনো সমস্যা হয় না। একই শর্তে নছিমন চালক বলেন, আসবাবপত্র, গবাদিপশু, কৃষিপণ্যসহ বিভিন্ন মালামাল পরিবহনের জন্য নছিমন ও করিমন মানুষের জন্য জনপ্রিয় একটি বাহন হিসেবে গণ্য হচ্ছে। এতে পরিবহণ খরচও কম লাগে, এজন্য সাধারণ মানুষ এগুলোকে ব্যবহারে আগ্রহী বেশি হচ্ছে। তবে এগুলো চালাতে প্রত্যেক এলাকায় সংশ্লিষ্টদের সংস্থার নিয়োজিত লোক ও স্থানীয় শ্রমিক ইউনিয়নের লোকজনকে টাকা দিতে হয়। টাকা না দিয়ে সড়কে চলাচল করাই কঠিন। টাকা দিলে কোন প্রকার ঝামেলা থাকে না। এজন্য টাকা দিয়ে ঝামেলা মুক্তভাবেই সকলে সড়কে চলাচল করে থাকছে। ফুলবাড়ীতে টাকা তোলার জন্য ঢাকা মোড় ও ছোট যমুনা নদীর বড় ব্রিজের পশ্চিম মুখে অবস্থান করে সংশ্লিষ্টদের নিয়োজিত টাকা তোলার লোকজন। ফুলবাড়ী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোস্তাফিজার রহমান বলেন, মহাসড়ক ও আঞ্চলিক মহাসড়কে তিন চাকার যেকোনো যানবাহন চলাচল নিষিদ্ধ। কিন্তু এগুলো বন্ধের জন্য কোনো নিদের্শনা না থাকায় বন্ধ করা যাচ্ছে। তবে এগুলোকে মহাসড়ক ও আঞ্চলিক মহাসড়কে চলাচলে নিরুৎসাহিত করা হচ্ছে। এগুলোর সঙ্গে বিপুল সংখ্যক মানুষের রুটিরুজির বিষয় জড়িত। তাই তাদেরকে পুনর্বাসনের মাধ্যমে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া যেতে পারে।