জেলার মুলাদী উপজেলার বাটামারা ইউনিয়নের হাজী এবং আকন গ্রুপের মধ্যে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে ফের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এ সময় হাত বোমা বিস্ফোরণে একজন নিহত হয়েছেন। বুধবার সকালে বাটামারা ইউনিয়নের টুমচর গ্রামের জোড়া ব্রিজ এলাকায় ঘন্টাব্যাপী সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। নিহত মোদাচ্ছের সিকদার টুমচর গ্রামের মৃত মোসলেম সিকদারের ছেলে। তার মৃত্যু নিয়ে দুই পক্ষের পাল্টাপাল্টি অভিযোগ রয়েছে। আকন পক্ষের দাবি হাজী পক্ষের হাতবোমা হামলায় আহত হয়ে মোদাচ্ছের মারা গেছেন। হাজী পক্ষের লোকজনের দাবি মোদাচ্ছের সিকদার কালকিনি উপজেলার পৈন্তারচর এলাকায় এক আত্মীয়ের বাড়িতে বসে হাতবোমা বানাতে গিয়ে বিস্ফোরণে আহত হয়ে মারা গেছেন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, আকন পক্ষের লোকজন বুধবার সকালে এলাকায় প্রবেশের সময় হাজী পক্ষের লোকজন প্রতিহত করলে সংঘর্ষের সূত্রপাত ঘটে। এ ঘটনায় উভয়পক্ষের কমপক্ষে ২০ জন আহত হয়েছেন। স্থানীয় একাধিক সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছরের ৩ জানুয়ারি বাটামারা ইউনিয়নের টুমচর গ্রামের হাজী পক্ষের রুবেল শাহ হত্যার ঘটনায় ৪৫ জনের নামে মামলা দায়েরের পর আকন পক্ষের লোকজন এলাকা ছেড়ে চলে যায়। এরপর ওই এলাকায় হাজী পক্ষের আধিপত্য চলছে। রুবেল শাহ হত্যা মামলার আকন পক্ষের বেশ কিছু আসামি অতিসম্প্রতি উচ্চ আদালত ও নিন্ম আদালত থেকে জামিন নিয়ে বুধবার সকালে এলাকায় প্রবেশের চেষ্টা করেন। সংবাদ পেয়ে হাজী পক্ষের লোকজন আজিজ ডাক্তারের বাড়ির কাছের জোড়া ব্রীজ এলাকায় অবস্থান নিয়ে তাদের প্রতিহত করে। এসময় উভয়পক্ষ ব্যাপক হাতবোমার বিস্ফোরণ ঘটায়। হাতবোমার বিস্ফোরনে টুমচর ও আশপাশের এলাকায় চরম আতঙ্ক ছড়িয়ে পরে। পরে জাগরনী ফাঁড়ি পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করেন। নিহত মোদাচ্ছের সিকদারের চাচাতো ভাই দাদন সিকদার জানিয়েছেন, বুধবার সকালে মোদাচ্ছের ও অন্যরা নিজেদের বাড়ির উদ্দেশ্যে টুমচর এলাকায় প্রবেশের চেষ্টা করেন। তারা জোড়া ব্রীজের কাছে পৌঁছলে সুলতান সরদারের নেতৃত্বে ৫০/৬০ জনে তাদের ওপর হামলা চালায়। এসময় আতঙ্ক ছড়াতে হাতবোমার বিস্ফোরণ ঘটানো হয়। বিস্ফোরণে মোদাচ্ছের সিকদারের দুই হাত ও মুখমন্ডল ঝলসে যায় এবং হারুন ঢালী, রমজান খান, মাসুদ ঢালী, তোফাজ্জেল হাওলাদারসহ ১৫ জন আহত হয়। গুরুত্বর আহত মোদাচ্ছের সিকদারকে হাসপাতালে নেওয়ার পথে সে মারা যায়। আহতদের কালকিনি ও মাদারীপুর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
হাজী পক্ষের তরিকুল ইসলাম পলাশ বলেন, রুবেল শাহ হত্যা মামলার আসামিরা বুধবার সকালে টুমচর এলাকায় প্রবেশ করে ২০/২৫টি বাড়িঘর ভাঙচুর করে। ওইসময় স্থানীয় লোকজন ডাকাত সন্দেহে তাদের ধাওয়া করলে তারা গুলি করে এবং হাতবোমার বিস্ফোরণ ঘটিয়ে পালিয়ে কালকিনির নতুন আন্ডারচর এলাকায় অবস্থান নেয়। সেখানে হাতবোমা বানাতে গিয়ে বিস্ফোরণে মোদাচ্ছের সিকদার ও তার সহযোগিরা আহত হয়েছেন বলে শুনেছি। বুধবার দিবাগত রাত নয়টার দিকে মুলাদী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোঃ জাকারিয়া জানান, এ ঘটনায় এখনও কেউ থানায় অভিযোগ দায়ের করেননি। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।