প্রধানমন্ত্রীর অর্থ উপদেষ্টা ড. মসিউর রহমানের স্বাক্ষর জাল করার মামলায় কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়ার বর্তমান উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মো. রফিকুল ইসলাম রেনুকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। এর আগে তার বিরুদ্ধে ওই মামলায় গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছিল আদালত। গত বুধবার (২৭ মার্চ) ঢাকা চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত-৮ এ আত্মসমর্পন করলে তাকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন আদালত। মামলার বিবরণ সূত্রে জানা যায়, ঢাকার একটি বেসরকারী প্রতিষ্ঠান মেসার্স এলিট আয়রন অ্যান্ড স্টিল জিপি শিট লিমিটেড উত্তরা ব্যাংক থেকে দুই কোটি পাঁচ লাখ টাকা ঋণ নিয়েছিল। ওই ঋণ মওকুফ করে দেওয়ার কথা বলে পাকুন্দিয়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম রেনু কোম্পানির কাছ থেকে ৩৫ লাখ টাকা নেন। এরপর তিনি প্রধানমন্ত্রীর অর্থ উপদেষ্টা ড. মসিউর রহমানের স্বাক্ষর জাল করে ঋণ মওকুফের জন্য উত্তরা ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) বরাবর একটি চিঠি ইস্যু করেন। চিঠিতে ড. মসিউর রহমানের জায়গায় ডা. মশিউর রহমান লেখায় উত্তরা ব্যাংকের এমডির বিষয়টি সন্দেহ হয়। পরে তিনি চিঠিটি যাচাইয়ের জন্য প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে পাঠান। সেখানে প্রমাণিত হয় যে, এমন কোনো চিঠি ইস্যু করা হয়নি।
এ ঘটনায় সহকারী পুলিশ সুপার ফজলুল করিম ২০১২ সালের ২৬ এপ্রিল ঢাকার বংশাল থানায় একটি মামলা করেন। মামলায় একই কর্মকর্তা ২০১৩ সালের ৬ অক্টোবর মো. রফিকুল ইসলাম রেনুসহ ছয়জনকে অভিযুক্ত করে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। মামলার অপর আসামিরা হলেন- মেসার্স এলিট আয়রন অ্যান্ড স্টিল জিপি শিট লিমিডেট পরিচালক মো. মোশাররফ হোসেন, চেয়ারম্যান মো. আলী হোসেন, ব্যবস্থাপনা পরিচালক তোফাজ্জল হোসেন, পরিচালক আমজাদ হোসেন ও মনোয়ার হোসেন। ২০১৫ সালের ১১ জুন মামলায় উপজেলা চেয়ারম্যান মো. রফিকুল ইসলাম রেনুর বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে অপর আসামিদের অব্যাহতি দেওয়া হয়। পরে আদালত এ মামলায় দন্ডবিধির ৪৬৮ ধারায় উপজেলা চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম রেনুকে দুই বছরের সশ্রম কারাদন্ড এবং দুই হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও ১৫ দিনের বিনাশ্রম কারাদন্ডে দন্ডিত করেন। এ বিষয়ে আসামি পক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট দেলোয়ার হোসেন কোয়েল সাংবাদিকদের বলেন, একটা মিথ্যা মামলায় দুই বছরের বিনাশ্রম কারাদন্ড হয়েছিল। তখন তিনি উপস্থিত ছিলেন না। তিনি স্বেচ্ছায় আত্মসমর্পণ করলে আদালত তাকে কারাগারে পাঠিয়েছেন। আমরা তার জামিনের জন্য আপিল করব।