পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় জাটকা শিকার হতে বিরত জেলেদের বরাদ্দের চাউল নিতে এসে শূন্য হাতে ফিরে গেলো পাঁচশ'র বেশি জেলে। সরকারি তালিকায় নাম থাকলেও ঘন্টার পর ঘন্টা রোদের মধ্যে দাড়িয়ে থাকলেও জেলেদের চাউল নিয়ে গেছে জনপ্রতিনিধিদের কাছের লোকজন। শনিবার কলাপাড়ার ডালবুগঞ্জে প্রকাশ্যে এ অনিয়ম চললেও প্রভাবশালীদের ভয়ে দরিদ্র জেলে ও তাদের পরিবারের লোকজন কারো কাছে অভিযোগও জানাতে পারেনি। এমন কি চাউল বিতরণ কার্যক্রমে দেখা যায়নি প্রশাসনের কোন প্রতিনিধিকে। সবচেয়ে বেশি অনিয়ম হয়েছে ডালবুগঞ্জের সাত, আট ও নয় নং ওয়ার্ডে। আর এ জেলেদের নামের কার্ড স্লিপ বিতরণের দায়িত্বে ছিলেন ইউপি সদস্য শিরিনা বেগম। তিনি এ অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, তিনি জেলে চাউল বিতরণের কোন স্লিপ পাননি। কোন জেলে বা অন্য কাউকে চালের স্লিপ দেননি। তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ মিথ্যা। অথচ এ ইউনিয়নে চাউল পাওয়ার কথা ১৩৩৬ জেলের। চাউল বঞ্চিত জেলে মন্নান খলিফা বলেন, তার নিজের কেন ঘরে নেই। সাগর পাড়ে পরিবার নিয়ে থাকেন। মাছ ধরে সংসার চলে। এখন জাটকা শিকার বন্ধ। রোজা চলে। সামনে ঈদ। ভেবেছিলাম এই ৮০ কেজি চাউল পেলে সংসারের অভাব কিছুটা মিটবে। কিন্তু তার নামের কার্ডের চাউল আরেক জনকে দিয়ে দিছে। জেলে মো. হাসান হাওলাদার বলেন, তাকে চাউলের স্লিপ দেয়া হলেও চাউল দেয়া হয়নি। এভাবে অন্তত অর্ধশত জেলে ষভিযোগ করেন, তাদের নামে জেলে কার্ড। অথচ চাউল পায় মোটরসাইকেল, অটো চালক ও চেয়ারম্যান, মেম্বারের লোকজন। তারা প্রতিবাদ করলে তালিকা থেকে বাদ দেয়ার হুমকি দেয়া হয়। এছাড়া যারা চাউল পেয়েছেন তারা ৬৫ থেকে ৭০ কেজি চাউল পেয়েছেন। সেলাই করা বস্তা খুলে আগেই সরানো হয়েছে বলে জানান জেলেরা। অভিযোগ রয়েছে সরকারি দলের ইউনিয়নের প্রভাবশালীরা এ কার্ড ভাগাভাগির সাথে জড়িত রয়েছে। এ কারনে জনপ্রতিনিধিরা বিষয়টি নিয়ে মুখ খুলতে সাহস পাচ্ছেন না। ডালবুগঞ্জ ইউনিয়নে জেলেদের ৮০ কেজি চাল বিতরণের বিষয়টি জানেন উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা ও উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা। অথচ চাল বিতরণের সময় প্রশাসন ও মৎস্য বিভাগের প্রতিনিধি থাকার কথা। তবে কোন অনিয়ম হলে ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানান উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা হুমায়ুন কবির। এ ব্যাপারে ডালবুগঞ্জ ইউপি চেয়ারম্যান হেদায়েত উল্লাহ বলেন, তারা তালিকা অনুযায়ী সবার নামে চাউল বরাদ্দ পাননি। তবে যারা বাদ পড়েছেন তাদের পরবর্তীতে দেয়া হবে।