ঝিনাইদহ কালীগঞ্জ মোবারকগঞ্জ রেলস্ট্রেশনে নেই কোনো ফুট ওভার ব্রিজ। ফলে বাধ্য হয়ে ঝুঁকি নিয়েই রাস্তা পার হচ্ছেন পথচারীরা। এতে করে প্রায় ছোট বড় দূর্ঘটনা ঘটে থাকে। চালকরা দাবী করছেন, দলবেঁধে মানুষ রাস্তা পার হন, এতে অনেক সময় সৃষ্টি হয় বড় ধরনের সমস্যা।কিছু পথচারী গাড়ি লক্ষ্য না করে রাস্তা পার হন। এতে আমরা চালকরাও খুব বিব্রতকর পরিস্থিতিতে পড়েন। আবার একটা ট্রেন এ স্ট্রেশনে এস দাড়ালে অপর প্রান্তে পার হওয়া যায় না। কেউ ট্রনের নিচ দিয়ে আবার কেউ দাড়িয়ে থাকা ট্রেনের ভির দিয়ে পারাপারা হয়। অসংখ্য মানুষ ঝুঁকি নিয়ে পার হচ্ছেন। এ সময় কয়েকজন অভিযোগ করে বলেন, নিজেদের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করতে হয়। ওভার ব্রিজ থাকলে আমরা এভাবে পার হতাম না। শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা জানান, অনেক কষ্ট করে বাচ্চা নিয়ে রাস্তা পার হন তিনি। এ নিয়ে সর্বদা আতংক কাজ করে। তিনি বলেন, যদি ফুটওভার ব্রিজ থাকত তাহলে চিন্তা থাকত না। মোবারকগঞ্জ রেলস্ট্রেশন গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় অতি দ্রুত ফুটওভার ব্রিজ নির্মাণ করা জরুরি।
ঝিনাইদহ জেলার কালীগঞ্জ উপজেলার মোবারকগঞ্জ রেলওয়ে স্টেশনে যাত্রী পারাপারের জন্য নেই কোন ফুট ওভার ব্রিজ। ১৯৫১ সাল থেকে এ স্টেশনে ট্রেন চলাচল করে থাকে। যে কারণে ১ নম্বর প্লাটফর্ম থেকে ২ নম্বর প্লাটফর্মে আসা-যাওয়া করতে যাত্রীদের পোহাতে হয় চরম দুর্ভোগ। প্রায় ১০ একর জমির উপর প্রতিষ্ঠিত মোবারকগঞ্জ রেল স্টেশনটিতে অদ্যবধি আধুনিকায়নের তেমন কোন ছোয়া লাগেনি। পুরাতন এ রেলওয়ে স্টেশনটিতে রয়েছে দুইটি প্লাটফর্ম তিনটি প্রধান লাইন ও একটি পার্শ্ব লাইন। প্রতিদিন রেল ক্রসিং এর সময় যাত্রীবাহী একটি ট্রেন স্টেশনের ২নং প্লাটফর্মে দাঁড়ায়। এই সময় ২নং প্লাটফর্মে দাঁড়িয়ে থাকার ট্রেনে ওঠানামা করতে যাত্রীদের পড়তে হয় বিড়ম্বনায়। ১নং প্লাটফর্ম থেকে যাত্রীদের সাথে থাকা ব্যাগ নিয়ে রেললাইন পার হয়ে ট্রেনে ওঠা লাগে, ট্রেন থেকে নামার ক্ষেত্রও একই অবস্থায় পড়তে হয়। এ সময় বিশেষ করে নারী-শিশু ও বয়স্ক যাত্রীরা পড়েন চরম বিপাকে। শুধু তাই নয় রেললাইন পার হতে গেলে যাত্রীসাধারণের শতভাগ নিরাপত্তা ঝুঁকির মধ্য দিয়েই পার হতে হয়। দীর্ঘদিন ধরে এরকম অসহ্য বিড়ম্বনা সহ্য করে নিজ নিজ গন্তব্যের উদ্দেশ্যে ছুটে চলছে মোবারকগঞ্জ রেল স্টেশন ব্যবহারকারী যাত্রীরা। এদিকে বাংলাদেশ রেলওয়ে কিংবা মোবারকগঞ্জ রেল স্টেশন কর্তৃপক্ষ যাত্রী দুর্ভোগের এই ব্যাপারে মোটেও দৃষ্টিগোচর করেন না।
সরেজমিনে দেখা যায়, বেনাপোল থেকে ছেড়ে আসা ঢাকা গামী বেনাপোল এক্স প্রেস নামক ট্রেনটি ২নং প্লাটফর্মে সুন্দরবন এক্সপ্রেস এর সাথে ক্রসিং এর জন্য অপেক্ষারত।এ সময় ১ নং প্লাটফর্ম থেকে ওই ট্রেনের যাত্রীদের রেললাইন পার হয়ে নিজেদের ব্যাগ হাতে করে ট্রেনে উঠতে দেখা যায়, আবার অনেক যাত্রী ট্রেন থেকে নেমে ১ নং প্লাটফর্মে এসে উঠছেন একইভাবে। এ সময় কথা হয়, ঢাকার উদ্দেশ্যে যাত্রা করা তাসমিয়া ইয়াসমিন নামের এক যাত্রীর সাথে। তিনি বলেন, শুধু কালিগঞ্জ নয় ঝিনাইদহ ও এর আশপাশের জেলার অনেক যাত্রী মোবারকগঞ্জ রেল স্টেশন এর মাধ্যমে বিভিন্ন গন্তব্যে যাচ্ছেন প্রতিনিয়ত। অথচ আমার মত অন্যদেরও বাচ্চাকাচ্চা ও ব্যাগ হাতে এভাবেই রেললাইন পার হয়ে ট্রেনে ওঠা নামা করা লাগছে। এভাবে চলাচল অনেক কষ্টের এবং তাতে ঝুঁকিও রয়েছে। স্টেশনটিতে একটি ফুট ওভারব্রিজ খুব জরুরী। আশা করি কর্তৃপক্ষ এ ব্যাপারে গুরুত্ব দিয়ে একটি ফুট ওভারব্রিজ অতিসত্বর তৈরি করবেন। মোবারকগঞ্জ রেলওয়ে স্টেশনের স্টেশন মাস্টার শাজাহান শেখের সাথে কথা হলে তিনি বলেন, এ বছর ফেবব্রুয়ারি মাসেই ৬ হাজার টিকিট ধারী যাত্রী বিভিন্ন গন্তব্যে এই স্টেশন থেকে গেছেন। এছাড়াও প্রতিনিয়তস্ট্যান্ডিং যাত্রী তো যাচ্ছেন। আবার অনেক যাত্রী বিভিন্ন স্থান থেকে এই স্টেশনে নামছেন। স্টেশন আধুনিকায়ন কিংবা ফুট ওভার ব্রিজ নির্মাণের ব্যাপারে বাংলাদেশ রেলওয়ের আলাদা বিভাগ রয়েছে। এ ব্যাপারটি তারাই ভালো বলতে পারবেন। মোবারকগঞ্জ রেলওয়ে স্টেশনের ঊর্ধ্বতন উপসহকারী প্রকৌশলী সাইফুল ইসলামের সাথে কথা হলে তিনি বলেন,মোবারকগঞ্জ রেলস্টেশন আধুনিকায়ন কিংবা ফুট ওভার ব্রিজ নির্মাণ সম্পর্কিত তথ্য আমার ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ ভালো বলতে পারবেন। তবে আমি জানি, স্থানীয় সাংসদ আনোয়ারুল আজিম আনার রেলওয়ের ডিজি অফিসে মোবারকগঞ্জ রেল স্টেশনের সার্বিক উন্নয়নে ব্যাপারে ডিও লেটার দিয়েছেন। যার অনুলিপি ইতিমধ্যে আমারা হাতে পেয়েছি। উল্লেখ্য মোবারকগঞ্জ রেল স্টেশনে রুপসা, সীমান্ত, কপোতাক্ষ, সাগরদাঁড়ি, সুন্দরবন,চিত্রা, বেনাপোল, মহানন্দা রকেট ও নকশী কাঁথা এক্সপ্রেস নামক যাত্রীবাহী ট্রেনসহ প্রতিনিয়ত বিভিন্ন গন্তব্যে ছেড়ে যাচ্ছে লোকাল ট্রেন ও। একই সাথে চলছে মালবাহী ট্রেন। এইসব ট্রেনে হাজার হাজার যাত্রী চলাচল করছেন। যাত্রীসেবার মান বাড়াতে এক প্লাটফর্ম থেকে অন্য প্লাটফর্মে যাওয়া আসা করতে কর্তৃপক্ষ অতিসত্বর মোবারকগঞ্জ রেলওয়ে স্টেশনে একটি ফুট ওভার ব্রিজ নির্মাণ করে দেবেন এমনটাই প্রত্যাশা যাত্রীসাধারণের।