ভোলা দৌলতখান আবু আবদুল্লাহ ডিগ্রী কলেজ প্রতিষ্ঠার পর থেকেই উপজেলা প্রশাসন দৌলতখান বাজারের ইজারা কলেজকে দিয়ে আসছিল। ১৯৮৩ সালে নয়া প্রতিষ্ঠিত কলেজ উন্নয়নে নিজস্ব আয়ের কোন উৎস ছিলনা। উপজেলা প্রশাসন ও স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তি বর্গ সদয় হয়ে প্রতিবছর দৌলতখান বাজারের বাৎসরিক ইজারা বিগত বছরের মতো কলেজকেই দেয়। ১৯৯৬ সালের ২২ মার্চ হঠাৎ তৎকালীন উপজেলা নির্বাহী অফিসার মিরাজুর রহমান রহস্যজনক কারণে কলেজকে দৌলতখান বাজার ইজারা না দিয়ে অসদুপায়ে অন্য পক্ষকে দেওয়ার পরিকল্পনা করে সকল কার্যক্রম সম্পন্ন করে। এমন সংবাদে ওই দিন দৌলতখান কলেজের বিক্ষুব্ধ ছাত্র শিক্ষক ও দৌলতখানের সর্বস্তরের জনতা রাস্তায় নেমে আসে। দৌলতখান বাজারের ইজারা দৌলতখান কলেজকে দেয়ার দাবিতে দৌলতখান শহরে বিক্ষোভ মিছিল বের হয়। শান্তিপূর্ণ মিছিলটি দৌলতখান বাজার প্রদক্ষিণ করে উত্তর মাথার শহীদ মিনারে অবস্থান করে। ছাত্র শিক্ষক ও জনতার বিক্ষোভ মিছিলে অতি উৎসাহিত পুলিশ ব্যাপক লাঠি চার্জ করে। এতে অনেকেই আহত হয়। শুরু হয় ছাত্র শিক্ষক জনতা ও পুলিশের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া। দৌলতখান হাসপাতাল গেট সংলগ্ন স্থানে পুলিশ নির্বিচারে ছাত্র জনতার বিক্ষোভ মিছিলে গুলি করে। ঘটনাস্থলে গুলিবিদ্ধ হয়ে পা হারায় কলেজের প্রথম বর্ষের ছাত্র দিদার হোসেন মনির। কলেজ উন্নয়নে ছাত্র জনতার আন্দোলনে শরীক হয়ে গুলিবিদ্ধ মনির হোসেন দিদারের লেখাপড়া বন্ধ হয়ে যায়। পা হারিয়ে চির দিনের জন্য পঙ্গুত্ব বরণ করতে হয় তাকে। তৎকালীন কলেজের অধ্যক্ষ জাকির হোসেন, সৈয়দপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সেলিমসহ কলেজ কর্তৃপক্ষের এক বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয় দিদারকে কলেজ থেকে চিকিৎসার বাবৎ কিছু টাকা দেয়া হবে এবং তাকে কলেজে যোগ্যতার বিবেচনায় চাকরি দেয়া হবে। কিন্তু কলেজে দিদারকে চাকরি দেয়া আর হয়নি। পরবর্তীতে কলেজ সরকারি করা হলো। দৌলতখান সরকারি আবু আবদুল্লাহ কলেজে কর্মসংস্থান হয়নি পা হারানো দিদারের। বর্তমানে অতি কষ্ঠে চলছে মা ও দুই সন্তান নিয়ে তার দুঃখের সংসার। সরকারি পঙ্গু ভাতাই তার সংসার জীবনের সহায়ক। তবুও তার জীবন থেমে নেই। দৌলতখান শহরে ফুটপাতে দোকান করে সংসারের জোগান দিচ্ছে পা হারনো পঙ্গু দিদার। দিদাররের সাহায্যে মানবিক সহায়তা নিয়ে সমাজের বৃত্তবানদের এগিয়ে আসা প্রয়োজন।