অবৈধ জাল উদ্ধার করতে গিয়ে পুলিশ সদস্যদের হামলায় মৎস্য দপ্তরের কর্মচারীসহ তিনজন আহত হয়েছেন। হামলা ঠেকাতে গিয়ে লাঞ্ছিত হয়েছেন সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা। জেলার হিজলা উপজেলার হরিনাথপুর পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ আব্দুর রহিমের নেতৃত্বে এ হামলার ঘটনা ঘটেছে। হামলার একটি ভিডিও ইতোমধ্যে ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে।
শুক্রবার সকালে হিজলা উপজেলার সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা মোহাম্মদ আলম বলেন, বিপুল পরিমানে অবৈধ জাল রয়েছে এমন সংবাদের ভিত্তিতে নৌ-পুলিশের সদস্যদের সহায়তায় মৎস্য অধিদপ্তরের লোকজন নিয়ে হরিনাথপুর পুলিশ ফাঁড়ি সংলগ্ন এলাকার ইউনুস মিয়ার বাড়িতে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় অভিযানে যাই। সেখানে গিয়ে জানতে পারি এক সপ্তাহ পূর্বে প্রায় ২০ লাখ টাকা মূল্যের জাল এবং নগদ টাকা নিয়ে গেছে হরিনাথপুর ফাঁড়ির ইনচার্জসহ অন্যান্য সদস্যরা। তবে ফাঁড়ি পুলিশ কোন অভিযান চালিয়ে অবৈধ জাল পুড়িয়েছে বা ধ্বংস করেছে এমন কোন তথ্য মৎস্য বিভাগের কারও কাছে নেই।
মৎস্য কর্মকর্তা আরও বলেন, বিষয়টি জানার পর হরিনাথপুর পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ আব্দুর রহিমকে ফোন দিয়ে ঘটনাস্থলে আসতে বলা হয়। তাৎক্ষনিক তিনি ঘটনাস্থলে আসার পর তার সামনেই জাল নিয়ে যাওয়ার বিষয়টি প্রমানিত হয়। অভিযানিক দলের সদস্যরা তার কাছে এ বিষয়ে জানতে চাইলে ফাঁড়ির ইনচার্জ আব্দুর রহিম ক্ষিপ্ত হয়ে অকথ্যভাষায় গালিগালাজ শুরু করেন। বিষয়টি হিজলা থানার ওসিকে অবহিত করে অভিযানিক দল মাহেন্দ্রাযোগে সদরের উদ্দেশ্যে রওয়ানা হন।
পথিমধ্যে হরিনাথপুর পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ আব্দুর রহিমসহ একাধিক পুলিশ সদস্যরা মোটরসাইকেল নিয়ে ব্যারিকেট দিয়ে মাহেন্দ্রার গতিরোধ করে মৎস্য দপ্তরের মাঝি সাইফুল ইসলাম, ইয়াসিন, মাঠকর্মী আবু হানিফকে মারধর করেন। এসময় হামলা ঠেকাতে গেলে উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তাকে লাঞ্ছিত করা হয়। এমনকি পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ আব্দুর রহিম মৎস্য কর্মকর্তাকে গালিগালাজ করে দেখে নেয়ার হুমকি প্রদান করেন। একইসাথে দাম্ভিকতার সূরে বলেন, জাল বিক্রি করছি আরো করবো পারলে যা করার করিস। বিষয়টি উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের অবহিত করা হয়েছে বলেও তিনি (মৎস্য কর্মকর্তা) উল্লেখ করেন।
অভিযোগের বিষয়ে হরিনাথপুর পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ আব্দুর রহিম বলেন, বিষয়টি ভুল বোঝাবুঝি হয়েছে। যা পরবর্তীতে সমাধান হয়ে গেছে। একই কথা বলেন, হিজলা থানার ওসি জোবায়ের ইসলাম। তবে জেলা মৎস্য কর্মকর্তা রিপন কান্তি ঘোষ জানিয়েছেন, এবিষয়ে উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সাথে আলোচনা করে পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।