দরজায় কড়া নাড়ছে ঈদ। আর মাত্র কয়েকদিন বাকী। ঈদ মানে খুশি, ঈদ মানে আনন্দ। আর এই ঈদ আনন্দ উপভোগ করতে ধনী দরিদ্র সবাই যার যার মতো করে প্রস্তুতি নিচ্ছেন। ছোট-বড়, ধনী-দরিদ্র সবাই ব্যস্ত হয়ে পড়ছেন ঈদ কেনা কাটায়। ঈদকে সামনে রেখে কটিয়াদী বাজারের বিভিন্ন মার্কেট ও ফুটপাতগুলোতে জমে উঠেছে কেনাকাটা। সাধ আর সাধ্যের মধ্যে ধনীদের পাশাপাশি নিম্ন আয়ের লোকজনরাও চায় তাদের পরিবার পরিজন নিয়ে এই ঈদে আনন্দ উপভোগ করতে। বিশেষ করে তুলনামূলক অল্প দামে পছন্দের পোশাক, এমিটিশন গয়না, জুতা, স্যান্ডেল, অন্য প্রসাধনীসহ পছন্দের পণ্য কিনতে তারা এখন ভিড় করছেন ফুটপাত ও খোলা জায়গায় বসানো অস্থায়ী দোকানগুলোতে। ৬ এপ্রিল শনিবার বিকালে কটিয়াদী বাসস্ট্যান্ড এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, মূলত নিম্ন আয়ের লোকজনকে কেন্দ্র করে রাস্তার পাশে ফুটপাতে প্রচুর দোকান খোলা হয়েছে। ব্যবসায়ীরা বলছেন, নিম্ন আয়ের মানুষের পাশাপাশি অনেক নিম্নবিত্ত ও মধ্যবিত্ত লোকজনও তাদের দোকানে কেনাকাটার জন্য আসছেন। কম বাজেটের মধ্যে ক্রেতাদের পছন্দ হয় এমন বাহারি নকশা ও রঙের সব পোশাকের সংগ্রহ রয়েছে ফুটপাতের দোকানেও। তাই ক্রেতাদের কোনো না কোনো জিনিস পছন্দ হচ্ছে আর কিনেও নিচ্ছেন। সেখানকার বেশিরভাগ গ্রাহকরা বলেছেন, তারা ফুটপাত থেকে কেনাকাটা করছেন। কারণ শপিংমলে জিনিস পত্রের দাম অনেক বেশি। এদিকে কটিয়াদী সরকারী কলেজের পুকুর লেকের সামনে বসা ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী মো. আবুবকর বলেন, তার পরিবারে ৫ জন সদস্য রয়েছে। নিজস্ব কোনো জায়গা নেই। ভাড়া বাড়িতে তারা থাকছেন। ঈদে কি কেনা হয়েছে এমন প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, এমনিতেই সংসার চালাতে খুবই কষ্ট হচ্ছে। কিন্তু ঈদে মেয়ের মুখের দিকে চেয়ে ফুটপাত থেকে জামা কেনা হয়। মনে চায় এই ঈদে পরিবারের সবাইকে কিছু দিতে। কিন্তু ইচ্ছে করলেই অর্থের অভাবে তা আর পারছি কোথায়। মার্কেটে যে দাম জিনিসের, তাই ফুটপাতই একমাত্র ভরসা। কটিয়াদী বাসস্ট্যান্ড ও শহর এলাকায় ঘুরে দেখা যায়, অস্থায়ী দোকানগুলোতে কেউ চৌকি পেতে, কেউ বা ভ্যানের ওপর, কেউ হ্যাঙ্গারে ঝুলিয়ে, আবার কেউ চাদর বিছিয়ে বিভিন্ন ডিজাইনের পোশাকের সঙ্গে প্রসাধনী সামগ্রী সাজিয়ে রেখেছেন। ফুটপাতে দোকান সাজিয়ে বসা রফিকুল ইসলাম বলেন, কিছুদিন আগে বেচা-বিক্রি কম থাকলেও এখন বেশ বেড়েছে। মুসলিম ধর্মাবলম্বীদের বছরের প্রধান উৎসব মাহে রমজানের শেষে আনন্দের ঈদকে বরণ করার জন্য ধনী দরিদ্র নির্বিশেষে কারোরই আগ্রহ উৎসাহের কমতি থাকে না। স্বল্প আয়ের লোকদের মনে থাকে নানা দুশ্চিন্তা। তারপরও ঈদ আনন্দ উপভোগ করতে চেষ্টার ত্রুটি নেই। তারা সাধ্যনুযায়ী চেষ্টা করছেন পরিবারের সদস্যদের মুখে হাসি ফুটাতে। আর ঈদের আনন্দকে ভোগান্তিমুক্ত করতে কাজ করছে কটিয়াদী মডেল থানা পুলিশ। ক্রেতারা যাতে নির্বিঘ্নে কেনাকাটা করতে পারে এজন্য পুলিশের পক্ষ থেকে বিশেষ সতর্কতা ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।