যথাযোগ্য ভাবগাম্ভীর্যে বিভাগীয় নগরী রংপুরে পবিত্র ঈদুল ফিতরের নামাজ আদায় করেছেন ধর্মপ্রাণ মুসল্লিরা। বৃহস্পতিবার (১১ এপ্রিল) সকাল সাড়ে ৮টায় রংপুরের কালেক্টরেট ঈদগাহ মাঠে ঈদের প্রধান জামাত অনুষ্ঠিত হয়। এতে ইমামতি করেন হাফেজ মাওলানা বায়েজিদ হোসাইন।
ঈদের বিশেষ খুতবা শেষে দেশে শান্তি-সমৃদ্ধি ও বিশ্ব মুসলিম উম্মাহর সম্প্রীতি কামনায় মোনাজাত করা হয়। এ সময় ফিলিস্তিনের গাজাসহ বিশ্বজুড়ে মুসলমানের ওপর সকল প্রকার দমন, নিপীড়ন, নির্যাতন বন্ধ ও মুসলিম উম্মাহর কল্যাণে মহান আল্লাহর কাছে অশ্রুসিক্ত প্রার্থনা করেন মুসল্লিরা।
জেলার প্রধান এই ঈদ জামাতে প্রায় ৪০ হাজার মুসল্লি অংশগ্রহণ করেন। প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ, জনপ্রতিনিধি, বিশিষ্টজন এবং সর্বস্তরের ধর্মপ্রাণ মুসল্লিরা ঈদের নামাজ আদায় করেন। পরে মোনাজাত শেষে চিরাচরিত কোলাকুলি আর করমর্দনে এবার একে অপরের সাথে ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় করেছে।
নামাজ শুরুর আগে উপস্থিত মুসল্লিসহ রংপুরবাসীকে ঈদ শুভেচ্ছা জানিয়ে বক্তব্য রাখেন জাতীয় সংসদের বিরোধী দলীয় নেতা ও জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ (জিএম) কাদের, রংপুর বিভাগীয় কমিশনার জাকির হোসেন, রংপুর সিটি করপোরেশনের মেয়র মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা, জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মোবাশ্বের হাসান।
এর আগে, সকাল ৮টায় রংপুর পুলিশ লাইন্স মাঠ, মুন্সিপাড়া ঈদগাহে সকাল সাড়ে ৮টায়, সকাল ৯টায় কেরামতিয়া জামে মসজিদ ও আশরাফিয়া জামে মসজিদসহ বিভিন্ন ঈদগাহ, মসজিদ ও মাদ্রাসা মাঠে সুবিধাজনক সময়ে ঈদ জামাত অনুষ্ঠিত হয়। মহানগর ছাড়াও জেলার পীরগাছা, কাউনিয়া, মিঠাপুকুর, তারাগঞ্জ, পীরগঞ্জ, বদরগঞ্জ, রংপুর সদর ও গঙ্গাচড়া উপজেলার স্থানীয় মসজিদ ও ঈদগাহ্গুলোতে সুবিধাজনক সময়ে ঈদের জামাতে নামাজ আদায় করেন মুসল্লিরা।
রংপুর বিভাগীয় ইসলামিক ফাউন্ডেশন সূত্র জানিয়েছে, রংপুর জেলার প্রায় ৬ হাজার মসজিদে ঈদ জামাত আদায়ের ব্যবস্থা করা হয়। এ ছাড়া নগরীর ৩৩টি ওয়ার্ডের প্রায় শতাধিকসহ জেলার প্রায় সাড়ে ১২ শতাধিক ঈদগাহ মাঠে ও পাড়ামহল্লার মসজিদ-মাদ্রাসাগুলোতে ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয়। কোনো কোনো মসজিদে ছিল একাধিক ঈদ জামাতের ব্যবস্থা। দীর্ঘ এক মাসের সিয়াম সাধনার পর ঈদের সকালে মুসল্লিতে মুখরিত হয়ে উঠে ঈদগাহ মাঠ ও মসজিদগুলো।
ঈদুল ফিতর উপলক্ষে সিটি করপোরেশন থেকে নগরীর সড়ক ও সড়ক দ্বীপসমূহ জাতীয় পতাকা ও ঈদ মোবারক লেখা পতাকা দিয়ে সজ্জিত করা হয়েছে। এ ছাড়া জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ঈদ আনন্দ ভাগাভাগী করতে জেলার হাসপাতাল, কারাগার ও এতিমখানাগুলোতে বিশেষ খাবার পরিবেশনের ব্যবস্থা করা হয়েছে। বাংলাদেশ বেতার রংপুর কেন্দ্রে তিন দিনব্যাপী ঈদের বিশেষ অনুষ্ঠান প্রচারিত হবে।