সদরঘাটের দুর্ঘটনায় লক্ষের রশি ছিঁড়ে পাঁচজনের মৃত্যুর ঘটনায় গ্রেপ্তার পাঁচজনকে তিনদিন হেফাজতে রেখে জিজ্ঞাসাবাদ করবে পুলিশ।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সদরঘাট নৌ থানার এসআই (নিরস্ত্র) নকীব অয়জুল হক শুক্রবার ঢাকার মুখ্য বিচারিক হাকিম আদালতে ১০ দিনের রিমান্ডের আবেদনে করেন।
অন্যদিকে আসামিপক্ষের আইনজীবীরা জামিনের আবেদন করেন।
শুনানি নিয়ে বিচারক আরিফা চৌধুরী হিমেল জামিনের আবেদন নাকচ করে তিনদিন রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
এ তথ্য জানান রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী আনোয়ারুল কবীর বাবুল।
রিমান্ডে যাওয়া পাঁচজন হচ্ছেন-ফারহান-৬ লঞ্চের মাস্টার আবদুর রউফ হাওলাদার (৫৪), দ্বিতীয় মাস্টার সেলিম হাওলাদার (৫৪) ও ম্যানেজার ফারুক খান (৭০) এবং তাসরিফ-৪ লঞ্চ এর মাস্টার মিজানুর রহমান (৪৮) ও দ্বিতীয় মাস্টার মনিরুজ্জামান (২৮)।
ঈদের দিন বেলা ৩টার দিকে একটি লঞ্চের ধাক্কায় আরেকটির রশি ছিঁড়ে পাঁচজনের মৃত্যুর পর বিকালে পাঁচজনকে আটক করেছিল পুলিশ। মামলার পর তাদেরকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। মামলায় আরও অজ্ঞাতনামা ৪-৫ জনের জড়িত থাকার কথা বলা হয়েছে।
অবহেলাজনিত বেপরোয়া গতিতে লঞ্চ চালিয়ে মৃত্যু ঘটানোর অপরাধে ঢাকা নদী বন্দরের নৌ নিরাপত্তা ও ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা বিভাগের যুগ্ম পরিচালক ইসমাইল হোসাইন বাদী হয়ে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানায় এ মামলা করেন।
বৃহস্পতিবার বেলা ৩টার দিকে সদরঘাটের পন্টুনে থাকা একটি লঞ্চকে অপর একটি লঞ্চ ধাক্কা দিলে রশি ছিঁড়ে আঘাতে একই পরিবারের তিনজনসহ পাঁচজনের মৃত্যু হয়।
ফায়ার সার্ভিস জানিয়েছে, এমভি তাসরিফ-৪ ও এমভি পূবালী-১ রশি দিয়ে সদরঘাটের ১১ নম্বর পন্টুনে বাঁধা ছিল। এ দুটি লঞ্চের মাঝখান দিয়ে এমভি ফারহান-৬ নামের আরেকটি লঞ্চ ঢুকানোর সময় এমভি তাসরিফ-৪ লঞ্চের রশি ছিঁড়ে যায়।
ওই রশির আঘাতেই হতাহতের ঘটনা ঘটে। কেউ কেউ পাশে থাকা লঞ্চের সঙ্গে বাড়িও খায়।
নৌপুলিশের ঢাকা অঞ্চলের পুলিশ সুপার গৌতম কুমার বিশ্বাস বলেছিলেন, “ওই যাত্রীরা পন্টুনে ছিলেন। ঘটনাস্থল থেকে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে জানা গেছে, ছিঁড়ে যাওয়া রশির আঘাতেই তাদের মৃত্যু হয়।”
এ ঘটনায় এমভি ফারহান-৬ ও এমভি তাসরিফ-৪ এর রুট পারমিট বাতিল করেছে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ)। ঘটনা তদন্তে সংস্থাটির তরফে তিন সদস্যদের কমিটি গঠন করা হয়েছে। ওই কমিটিকে পাঁচ কর্মদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।