গাজীপুরের কাপাসিয়া সরকারি পাইলট উচ্চবিদ্যালয়ের এসএসসি-৮৫ ব্যাচের শিক্ষার্থীদের সংগঠন 'বন্ধু-৮৫'র উদ্যোগে শুক্রবার দিনব্যাপী ঈদ পুনর্মিলনী অনুষ্ঠিত হয়েছে। কাপাসিয়া উপজেলা সদরের খোদাদিয়া গ্রামের "রিসোর্স ১৯' এপ্রিল" মিলনায়তনে অর্ধশতাধিক বন্ধুদের উপস্থিতিতে পরিচিতি পর্ব, ঈদুল ফিতর ও বাংলা নববর্ষের শুভেচ্ছা বিনিময় হয়। বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর বিমান উড্ডয়ন নিরাপত্তা বিষয়ক পরিচালক পাইলট গ্রুপ ক্যাপ্টেন মো. এনামুল হক অপু'র ব্যক্তিগত তত্বাবধানে অনুষ্ঠিত আয়োজনে উপস্থিত ছিলেন প্রাক্তন প্রবীণ প্রধান শিক্ষক মোঃ অলি উল্লাহ্।
এছাড়া অন্যান্যের মাঝে উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের সদস্য মেঘনা ব্যাংকের ভাইস প্রেসিডেন্ট কাজী মহিবুর রহমান, পিডিবি সিদ্ধিরগঞ্জ সিবিএ নেতা মেজবাহ্ উদ্দিন, সামসুল আলম, জাকির হোসেন, মাহবুবুল আলম, মঞ্জুর হোসেন, তৈইয়ুবুর রহমান প্রমূখ। আমন্ত্রিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কাপাসিয়া প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি ও বন্ধু-৮৬'র সভাপতি সাংবাদিক এফ এম কামাল হোসেন, সাধারণ সম্পাদক সাংবাদিক উত্তম কুমার দাস ও বিশিষ্ট সমাজসেবক রুহুল আমিন। পড়ালেখা শেষ করে অনেকেই চাকরি কিংবা ব্যবসা বাণিজ্যে ব্যস্ত। কেউবা দূরপ্রবাসে। বন্ধুদের মধ্যে যোগাযোগ যখন বিচ্ছিন্ন হতে শুরু করে, তখন ঐক্যের বন্ধনে আবদ্ধ থাকতে এক ভিন্ন পথ ধরেন ওই ব্যাচেরই এক বন্ধু পাইলট অপু। তাঁরই প্রতিষ্ঠিত নিজ গ্রাম খোদাদিয়ায় "রিসোর্স ১৯' এপ্রিল" চত্বরে আয়োজিত মিলনমেলায় এ সময় দেশের নানা প্রান্ত থেকে আসা বন্ধুরা একে অপরের সঙ্গে পরিচিত হওয়া, ছবি তোলা, সেল্ফি, আড্ডা, গল্প-গানে মেতে উঠেন। ‘বন্ধুত্বের একতা, সম্প্রীতি ও সফলতা’ সেশনটির শিক্ষার্থীদের দেওয়া এই স্লোগানকে ধারণ করে সবার মধ্যে বন্ধুত্ব, আন্তরিকতা সৃষ্টির পাশাপাশি পারস্পরিক সহযোগিতা বৃদ্ধির জন্য গত দশ বছর ধরে কাজ করছে গ্রুপটি। এ ছাড়া প্রয়োজনে সমাজ বা রাষ্ট্রের জন্য কিছু করার চেষ্টা নিয়েও বন্ধুত্বের বন্ধনটা সুদৃঢ় করতে মিলনমেলার আয়োজন করেছে বন্ধুরা। মিলনমেলায় বিভিন্ন জায়গা থেকে এসে যুক্ত হয় বন্ধুদের আড্ডায়। প্রায় অর্ধশতাধিক বন্ধুর আগমনে রিসোর্স চত্বর সেই পুরনো দিনের আড্ডায় ফিরে যান তারা। সবার আগ্রহ ও আন্তরিকতাকে বেশ ইতিবাচক হিসেবে দেখছেন গ্রুপটির পরিকল্পনাকারী পাইলট অপু। গ্রুপ ক্যাপ্টেন অপু জানান, বন্ধুরা একে অপরের থেকে যেন যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন না হয়ে যাই ও সবাই যেন বন্ধুত্বের বন্ধনে আবদ্ধ হয়ে একসঙ্গে একে অপরের পাশে দাঁড়াতে পারি সেই চিন্তা থেকেই ফেইসবুকে একটি গ্রুপ খুলেছিলাম। গত দশ বছরের মধ্যে গেল করোনাকালে আমাদের বিভিন্ন বন্ধুদের চরম শঙ্কটে পাশে দাঁড়ানোসহ সহযোগিতা করা হয়েছে।
এছাড়া বিভিন্ন তথ্য ও সহযোগিতায় কাজ করাসহ প্রাক্তন শিক্ষক অলি উল্লাহ্'র চিকিৎসায় সহযোগিতা করা হয়েছে। আমাদের বন্ধুদের আন্তরিকতারই বহিঃপ্রকাশ ছিল। মিলনমেলার মধ্য দিয়ে একটি বড় পরিসরে আয়োজন করার জন্য বিদ্যালয়ের আশির দশকের শিক্ষার্থী বন্ধুদের একত্র করা হবে। বন্ধুত্বের একতা আর সম্প্রীতিটাকেই প্রাধান্য দেওয়া হবে। মিলনমেলায় এসে ভালো লাগার কথা জানান অনেকেই। বন্ধুদের সাথে সময় কাটানো ভিন্ন এক অনুভূতি। দীর্ঘদিন পর ছাত্র জীবনের আড্ডা মিস করতে চান না। তাই এখানে বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা দিতেই চলে এসেছি। সবাই বেশ সাড়া দিয়েছে। সবাই মিলে আড্ডা, গল্প, খাওয়া-দাওয়া করেছি। এই যেন সেই স্কুল জীবনেই ফিরে গিয়েছিলাম। বেশ ভালো সময় কেটেছে। ব্যক্তিস্বার্থ ও সামাজিক বিচ্ছিন্নতার বর্তমান বাস্তবতায় নিজের মধ্যে বন্ধুত্ব আর ঐক্য চায় বন্ধু-৮৫'। এতে শঙ্কটে বন্ধুদের পাশে দাঁড়ানোসহ সমাজ ও সুবিধা বঞ্চিত মানুষের জন্য কাজ করতে চায় তারা।