ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইলে পূর্ব বিরোধের প্রতিশোধ নিতে হামলা চালিয়ে খুনের বদলে বাচ্চু মিয়া (৫৫) নামের এক বৃদ্ধকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ করছেন স্বজনরা। আর প্রতিপক্ষ ও পুলিশ বলছেন হত্যা নয়, স্ট্রোক জনিত কারণে বৃদ্ধের মৃত্যু হয়েছে। বিষয়টিকে ঘিরে ধু¤্রজালের সৃষ্টি হয়েছে। উপজেলার পল্লী এলাকা পাকশিমুল ইউনিয়নের মেঘনা নদীর তীর ঘেষা হরিপুর গ্রামে শুক্রবার দিবাগত রাত ৯টার দিকে এই ঘটনা ঘটেছে। পুলিশ নিহতের লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের ব্যবস্থা করছেন।
পুলিশ, নিহতের স্বজন ও গ্রামবাসী জানায়, শুক্রবার দিবাগত রাত ৯টার দিকে নিজ দোকানে অবস্থান করছিলেন নিহত বাচ্চু মিয়া। এ সময় দোকানের সামনে পেয়ে আরমান মিয়ার (৩২) কাছে পূর্বের বকেয়া ৪ হাজার টাকা চান বাচ্চু। এতে ক্ষিপ্ত হন আরমান। কিছুক্ষণ পর আরমান, জুয়েল ও সেলিমের নেতৃত্বে ১০-১২ জন লোক বাচ্চু মিয়ার উপর হামলা চালায়। বাবাকে বাঁচাতে এগিয়ে যান মোবারক। তারা মোবারককেও মারধর করে। কিছুক্ষণ পর ঘটনাস্থলেই মারা যান বাচ্চু মিয়া। শুক্রবার রাতেই নিহত বাচ্চু মিয়ার লাশ উদ্ধার করেন সরাইল থানা পুলিশ। গ্রামের একাধিক সূত্র জানায়, ২০২৩ খ্রিষ্টাব্দের আগস্ট মাসে একাটি সালিসের রায়কে কেন্দ্র করে গ্রামের আমিন মিয়ার ছেলে রায়হানের নেতৃত্বে ৫-৬ জন যুবক ধারালো অস্ত্র নিয়ে চান্দালীর ছেলে হাফিজের (৪৭) উপর হামলা চালিয়ে বুকে ছুরিকাঘাত করে হত্যা করে। এ ঘটনায় প্রতিপক্ষের বাড়িঘর ভাংচুর লুটপাট হয়। আঙ্গুর মিয়াকে কে প্রধান আসামি করে ১১ জনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাতনামা আরো কয়েকজনের বিরূদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের করেছিলেন নিহতের স্ত্রী শাহানা আক্তার (৩৮)। মামলাটি এখন চলমান আছে। ওই সময়ে ভয়ে এলাকা ছেড়ে ছিলেন বাচ্চু মিয়া। ছয় মাসেরও অধিক সময় পর গত ৪-৫ দিন আগে বাচ্চু মিয়া গ্রামে আসেন। আর শুক্রবার রাতেই তিনি খুন হন। গত বছরের আগস্ট মাসে খুন হওয়া হাফিজ উদ্দিনের স্ত্রী শাহানা বেগম সম্প্রতি প্রতিপক্ষের সাথে স্বামী হত্যার বিষয়টি নিস্পত্তি করার ইঙ্গিত করছিলেন। বিষয়টি মেনে নিতে পারছিলেন না তাদের পক্ষেরই একটি গ্রƒপ। আর তাই ওই গ্রƒপই পরিকল্পনা করে প্রতিপক্ষের বাচ্চু মিয়ার উপর হামলা চালায়। নিহত বাচ্চু মিয়ার ছেলে মোবারক হোসেন বলেন, হাফিজ উদ্দিন হত্যার পর আমার বাবার দোকান ভাংচুর লুটপাট করে সব শেষ করে দিয়েছিল। আরমানের কাছে পুর্বের বকেয়া টাকা চাওয়ায় দলবল দিয়ে পিটিয়ে বাবাকে হত্যা করেছে। বাবার পিঠে দাগ রয়েছে। আমার মামা আক্কাসকে গুরূতর আহত করেছে। আমি হত্যা মামলা দায়েরের প্রস্তুতি নিচ্ছি। পাকশিমুল ইউনিয়নের বিট অফিসার এস আই বাবুল হোসেন বলেন, লাশ উদ্ধার করে থানায় এনেছি। হত্যা নয়। নিহতের স্বজনরা বলছেন স্ট্রোক জনিত কারণে মারা গেছেন বাচ্চু মিয়া। ময়না তদন্তের পর বিষয়টি আরো নিশ্চিত হওয়া যাবে। ওই গ্রামের পরিবেশ শান্ত রয়েছে।