নওগাঁর মহাদেবপুরে অতি দরিদ্রদের জন্য ৪০ দিনের কর্মসৃজন কর্মসূচিতে এবার দুই কোটি ৪৮ লক্ষ টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। এজন্য হাতে নেয়া হয়েছে ৪৬টি প্রকল্প। ইতোমধ্যেই প্রকল্পের কাজ শুরু হয়েছে। সোমবার (১৫ এপ্রিল) দুপুরে উপজেলার সফাপুর ইউনিয়নে প্রকল্পের কাজের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা আবু বাক্কার সিদ্দিক। এ সময় সফাপুর ইউপি চেয়ারম্যান সামসুল আলম বাচ্চু, বিভিন্ন ওয়ার্ডের মেম্বার, মহিলা মেম্বার ও প্রকল্পের নিয়োগ করা শ্রমিকরা উপস্থিত ছিলেন।
প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা জানান, সরকারের সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির আওতায় দূর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের দূর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তর ২০২৩-‘২৪ অর্থবছরে অতিদরিদ্রদের কর্মসংস্থানের লক্ষ্যে কর্মসৃজন কর্মসূচি (ইউজিপিপি) দ্বিতীয় পর্যায়ের প্রকল্পগুলো উপজেলা প্রশাসন ও দূর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিভাগ বাস্তবায়ন করছে। প্রকল্পগুলোর মধ্যে রয়েছে বিভিন্ন ভাঙ্গা রাস্তা মেরামত, বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও ঈদগাঁহ মাঠ সংস্কার প্রভৃতি। এসব প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য উপজেলার ১০টি ইউনিয়নে মোট এক হাজার আটশ’ ৭৯ জন শ্রমিক নিয়োগ করা হয়েছে। জনসংখ্যার ভিত্তিতে উপজেলা ওয়ারি হিসেবে রয়েছেন সদর ইউনিয়নে ২১৯ জন, হাতুড় ইউনিয়নে ২১৩ জন, খাজুর ইউনিয়নে ২১১ জন, চাঁন্দাশ ইউনিয়নে ১৬৩ জন, রাইগাঁ ইউনিয়নে ২০৩ জন, এনায়েতপুর ইউনিয়নে ২০৮ জন, সফাপুর ইউনিয়নে ১৬২ জন, উত্তরগ্রাম ইউনিয়নে ১৩৬ জন, চেরাগপুর ইউনিয়নে ১৭৯ জন ও ভীমপুর ইউনিয়নে ১৭২ জন। প্রতিজন শ্রমিক প্রতিদিন কাজের জন্য ৪০০ টাকা হারে মজুরি পাবেন। এসব শ্রমিকের প্রত্যেকের নামে ব্যাংকে পৃথক পৃথক হিসাব খোলা হয়েছে। সপ্তাহান্তে মজুরির টাকা তাদের ব্যাংক হিসেবে জমা হবে।
তিনি জানান, প্রকল্পের মেয়াদ ৪০ দিন হলেও এবার কাজ শুরু হতে দেরি হওয়ায় এই উপজেলায় এবার কাজ হবে মোট ৩৩ দিন। সফাপুর ইউপি চেয়ারম্যান সামসুল আলম বাচ্চু জানান, বছরে দুইবার আমন ধান ও বোরো ধান রোপণের পর কৃষি শ্রমিকদের হাতে কোন কাজ থাকেনা। তখন বরেন্দ্র এলাকায় মঙ্গা বিরাজ করতো। কাজের অভাবে শ্রমিকদের পরিবার পরিজন নিয়ে অনাহারে অর্ধাহারে দিনাতিপাত করতে হতো। এ সময় মানুষ ঘটিবাটি বিক্রি করে, দাদন ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে চড়াসুদে দাদন নিয়ে, আবার কেউ কেউ কম দামে আগাম ফসল ও আগাম শ্রম বিক্রি করে সংসার চালাতে বাধ্য হতেন। এখন কর্মসৃজন কর্মসূচি চালু হওয়ায় এসব শ্রমিকরা কাজ পাওয়ায় তাদের পরিবার উপকৃত হবে। তিনি জানান, অনেক সময় প্রকল্পের কাজ শেষ হলেও সময়মত শ্রমিকরা মজুরি পান না। এতে তাদের বিড়ম্বনায় পড়তে হয়। এবার প্রকল্পের টাকা যাতে সময়মত শ্রমিকদের হিসাবে জমা হয় তার ব্যবস্থা করারও দাবি জানান এই চেয়ারম্যান।