দেশের মানুষের মধ্যে রোগব্যাধি প্রতিরোধ বিষয়ে সচেতনতা তৈরিতে যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে সময়োপযোগী প্রচার-প্রচারণা ব্যবহারের ওপর জোর দিয়েছেন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা। বৃহস্পতিবার ঢাকা জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয়ে আয়োজিত ‘রিয়েলিস্টিক ইভ্যালুয়েশন অব দ্য হেলথ অ্যাডুকেশন ইন্টারভেনশন ডেলিভারি: অ্যাপ্রোচ অ্যান্ড আইডেন্টিফিকেশন অব দ্য চ্যালেঞ্জ ফর টার্গেটেড অডিয়েন্স’ শীর্ষক এক আলোচনা সভায় এই মতামত ব্যক্ত করেন আলোচকরা। এতে ডেঙ্গু, ডায়াবেটিস, তামাক নিয়ন্ত্রণ ও অগ্নিদুর্ঘটনা রোধে সচেতনতা বৃদ্ধির প্রতি জোর দেওয়া হয়।
এক্সপার্ট ও কনফার্ম ডেভেলপমেন্ট (জেভি) আয়োজিত সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে ঢাকা জেলা সিভিল সার্জন ড. আবুল ফজল মো. শাহাবুদ্দিন খান বলেন, দেশেব্যাপী সম্প্রসারিত টিকাদান কর্মসূচি (ইপিআই) যে পর্যায়ে গেছে, তখনকার প্রচারণা ছিল একরকম, এখন ভিন্ন। আমরা যখন কিছু শুনি ও দেখি, তখন যা জানলাম তার ৭০-৮০ শতাংশ আমাদের মাথায় স্থায়িত্ব থাকে। তাই আমাদের অডিও-ভিজ্যুয়ালে আসতে হবে। এটা এখন কমন হয়ে গেছে, কারণ সবার হাতেই বর্তমানে একটি ডিভাইস আছে। প্রচার-প্রচারণায় এসব নিয়ে আসতে হবে। বর্তমানে খুব কম সময়ের ভিডিও ক্লিপ করে, রিল করে। এগুলোর মাধ্যমে কীভাবে মানুষের দৃষ্টি আকর্ষণ করা যায়, তা নিয়ে কাজ করতে হবে। এখন যেহেতু ডিজিটালের যুগ, তাই এ বিষয়গুলো আমাদের জানতে হবে।
জনসচেতনতায় গেমস একটি বড় মাধ্যম উল্লেখ করে তিনি বলেন, গেমস যারা তৈরি করেন, তারা এমনভাবে তৈার করেন যে, আমাদের একেবারে ঘটনার মধ্যে নিয়ে যায়। এটাও এক ধরনের প্রচারণা, এর মাধ্যমে মেসেজ দেওয়া যায়। ফলে এখন যে জিনিসগুলো প্রচারণার জন্য চলছে, সেখান থেকে বের হয়ে আসতে হবে, আউট অফ দ্য বক্স চিন্তা করতে হবে।
তিনি বলেন, স্বাস্থ্য শিক্ষা আমাদের জন্য খুবই দরকার। নতুন নতুন রোগব্যাধি ও প্রতিবন্ধকতা আসবে। এগুলোকে যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে কীভাবে আমরা ওভারকাম করতে পারব, সেটা আমাদেরই চিন্তা-ভাবনা করতে হবে।
সভায় অন্য আলোচকরা বলেন, সাধারণত কোনো রোগের প্রাদুর্ভাব ঘটলে মানুষের মধ্যে ওই রোগ নিয়ে সচেতনতা তৈরি হয়। এরপর কিছুটা স্থিমিত হলে সেই সচেতনতা আর থাকে না। এজন্য ছোটবেলা থেকেই যেন প্র্যাকটিস গড়ে ওঠে, তাই শিক্ষাক্রমে এই সচেতনতা অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। পাশাপাশি এসব বিষয়ে অ্যাডভোকেসি তৈরি করতে হবে।
অগ্নিদুর্ঘটনা রোধে বাসাবাড়িতে বিদ্যুতের সার্কিট ব্রেকার, গ্যাসের চুলা ও সিঁড়ির নিচের স্থানে বালুসহ অন্যান্য অগ্নিনির্বাপন সরঞ্জাম হাতের কাছে রাখার জন্যও সচেতনতা বৃদ্ধিতে জোর দেওয়া হয়।
সভায় সিনিয়র স্বাস্থ্য শিক্ষা কর্মকর্তা মো. শাহজালাল মোহনের সঞ্চালনায় আরো উপস্থিত ছিলেন- ডেপুটি সিভিল সার্জন ড. সরকার ফারহানা কবীর, জুনিয়র স্বাস্থ্য শিক্ষা কর্মকর্তা শাহানা পারভীন, প্রশাসনিক কর্মকর্তা মো. আলিমুজ্জামান, এক্সপার্ট ও কনফার্ম ডেভেলপমেন্ট (জেভি)-এর ফিল্ড কো-অর্ডিনেটর আতিউল ইসলাম, ফিল্ড ফ্যাসিলেটর তপু মাহমুদ, আব্দুল আলিম, ইমরান ও শাকিরা। উল্লেখ্য, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পক্ষে লাইফস্টাইল হেলথ এডুকেশন এন্ড প্রমোশনের লাইন ডিরেক্টর ডাক্তার মিজানুর রহমান আরিফ গবেষণা প্রকল্পটি সমন্বয় করছেন।