ঝিনাইদহের কালীগঞ্জে কৃষকরা এসে শ্রমিক ভাড়া করে নিয়ে যায় বাড়িতে। দিনে ৫৫০ টাকা থেকে ৭০০ টাকায় বায়না হয় একেক শ্রমিকের।কালীগঞ্জের ধান কাটা শুরু হয়েছে, বসেছে শ্রমিকদের হাট সকাল-সন্ধ্যা ভিড় এখানে। কাজের খোঁজে এখানে ছুটে আসেন দুরদুরান্তের। বছরের অন্য সময় শ্রমিক কম থাকলেও, ইরি বোরো মৌসুমে বাড়ে শ্রমিক সংখ্যা। যদিও শ্রমিকের মজুরি নিয়ে দেখা যায় বিপত্তি।কালীগঞ্জ শহরের মুরগি হাটের পাশে প্রতি শনিবার ও শনিবার শ্রমিকদের হাট বসছে।
চলছে বোরো ধান কাটার মৌসুম। কালবৈশাখী ও শিলাবৃষ্টির ভয়ে কৃষকরা বলছেন যত দ্রুত সম্ভব ধান কেটে ঘরে তুলতে। ধান কাটতে প্রয়োজন কৃষি শ্রমিক। কৃষকদের এই চাহিদা মেটাতে কালীগঞ্জে জমে উঠেছে মৌসুমি কৃষি শ্রমিকের হাট। এসব হাট থেকে কৃষকরা তাদের প্রয়োজন অনুযায়ী কৃষি শ্রমিক সংগ্রহ করছেন। সূর্য পূর্ব গগনে উদয় হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই শুক্রবার ও সোমবার চোখে পড়ে শত শত মানুষের জটলা। সূর্য ওঠার আগে থেকেই অভাবী লোকজন ছুটে আসেন কামলার হাটে। চোখেমুখে তাদের অসহায়তার ছাপ। হাটে এক শ্রেনীর মানুষ এসেছেন ‘বিক্রি’ হতে, আরেক শ্রেনীর মানুষ এসেছেন কিনতে। চলতে থাকে দরদাম, ওঠানামা করে পণ্যের মতোই।এখন চলছে বোরো ধান কাটার মৌসুম। এ সময় নিকলীর বিভিন্ন এলাকা থেকে কৃষি শ্রমিকরা এসে শ্রমিকরে হাটে বসেন।
ঝিনাইদহ কালীগঞ্জে সোনালী মাঠে মাঠে শুরু হয়েছে আগাম জাতের ইরি-বোরো ধান কাটার মৌসুম। একদিকে এলোমেলো বাতাসে যেমন দুলছে ধানের শীষ অন্য দিকে বাতাসের তালে তালে কৃষকের অন্তরে দোল খাচ্ছে দু’চোখ ভরা স্বপ্ন।বর্তমানে আবহাওয়া ভালো থাকায় ইতিমধ্যেই উপজেলার মাঠে শুরু হয়েছে প্রধান ফসল আগাম জাতের ইরি-বোরো ধান কাটার কাজ। আবহাওয়া যদি ভালো থাকে ও কোন প্রকারের প্রাকৃতিক দূর্যোগ হানা না দিলে এবার ধানের বাম্পার ফলন পাওয়ার আশা করছেন উপজেলার কৃষকরা ও কৃষি কর্মকর্তারা।কালীগঞ্জ উপজেলা কৃষি অফিস জানায়, চলতি ইরি-বোরো মৌসুমে উপজেলার ১১টি ইউনিয়নে ১৮ হাজার ৬০ হেক্টর জমিতে ইরি-বোরো ধান রোপনের লক্ষমাত্রা নির্ধারন করা হয়েছিল। বর্তমানে উপজেলার মাঠে বিভিন্ন জাতের ধান কাঁটা শুরু করেছে কৃষকরা। শেষ পর্যন্ত আবহাওয়া ভালো থাকলে, শিলাবৃষ্টি না হলে, কোন প্রকারের প্রাকৃতিক দুর্যোগ হানা না দিলে এবং কৃষকরা মাঠের ধান ভালো ভাবে ঘরে তুলতে পারেন তাহলে কৃষকরা এবার বাড়িতে ধান রাখার জায়গা পাবেন না বলে আশা করছেন কৃষি অফিস। বিগত সময়ের চাইতে এবার ধানের রেকর্ড পরিমান ফলন হবে। শেষ পর্যন্ত ধানের বাজার ভালো থাকলে কৃষকরা বিগত সময়ের লোকসান কাটিয়ে লাভবান হতে পারবেন।
পাইকপাড়া গ্রামের সাখাওয়াত হোসেন ও রামনগর গ্রামের মহিদুর ইসলাম বলেন, বিগত সময়ের তুলনায় এবার ধানে পোকা-মাকড় ও রোগ বালাইয়ের আক্রমণ অনেক কম হয়েছে। ধান ঘরে তোলার আগ পর্যন্ত যদি আবহাওয়া ভালো থাকে এবং কোন প্রকারের প্রাকুতিক দুর্যোগ হানা না দেয় তাহলে বিগত সময়ের তুলনায় কালীগঞ্জ উপজেলার কৃষকরা চলতি ইরি-বোরো মৌসুমে রেকর্ড পরিমাণ ধানের ফলন পাবে। ফলন বাম্পার পাওয়ার পর যদি ধানের বাজার ঠিক থাকে তাহলে বিগত সময়ে ধান চাষে ক্ষতিগ্রস্থ কৃষকরা লোকশান পুষিয়ে নিয়ে অনেকটাই লাভবান হবেন বলে আমরা আশাবাদী।কৃষকরা বলছে এবার ফলন ৩০ থেকে ৩৫ মণ হারে পাওয়ার আশা করছি। ইতোমধ্যে ধান কাটা শুরু করেছে কৃষকরা আর ক’দিনের মধ্যেই উপজেলায় পুরোদমে শুরু হবে ধান কাটার মৌসুম। শেষ পর্যন্ত ধানের বাজার ঠিকঠাক থাকলে কৃষকরা চলতি ইরি-বোরো মৌসুমের ধান বিক্রি করে লাভবান হবে। বাসমতি, ইরি ৫০ ও ৬৩, ইরি ২৮.স্বর্না, সুবলতাসহ বিভিন্ন জাতের ধান রয়েছে। কালীগঞ্জ উপজেলায় ১১ টি ইউনিয়নের মধ্যে ১৯৮ টি গ্রাম রয়েছে, মৌজা রয়েছে ১৮৮ টি। এ ছাড়া কৃষি অফিসের হিসাব মোতাবেক মোট আবাদি জমি রয়েছে ২২ হাজার ৩১২ হেক্টর জমি।